Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইন্টার্ন চিকিৎসক ছাত্রলীগ নেতা চমেক ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৬ আগস্ট ২০২৩ ০০:০১

চট্টগ্রাম ব্যুরো: ছাত্রাবাস থেকে বের করে দেওয়ার পর শিক্ষানবীশ এক চিকিৎসককে ক্যাম্পাসে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) কর্তৃপক্ষ। তাকে ক্যাম্পাসের কোথাও দেখা গেলে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া ওই শিক্ষানবীশ চিকিৎসকের সঙ্গে ক্যাম্পাসে বা ছাত্রাবাসে কোনো শিক্ষার্থীকে একক বা শিক্ষার্থীদের দলবদ্ধভাবে অবস্থান করতে দেখা গেলে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছে চমেক কর্তৃপক্ষ।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (৫ আগস্ট) চমেক অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের এক জরুরি সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়। এতে চমেকের অধ্যক্ষ ও অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভাপতি অধ্যাপক সাহেনা আক্তার সভাপতিত্ব করেন।

ইন্টার্ন চিকিৎসক আসেফ বিন তাকি নগরীর চট্টেশ্বীর রোডে চমেকের প্রধান ছাত্রাবাসের ১২-বি কক্ষে ‘অবৈধভাবে’ থাকতেন। গত ২ আগস্ট চমেক কর্তৃপক্ষ পুলিশ নিয়ে ছাত্রাবাসে তল্লাশি চালিয়ে তাকে বের করে দেয় এবং মালামাল বাইরে রেখে কক্ষটি সিলগালা করে দেয়। একইভাবে ১৭-এ ও ২১-সি কক্ষে অবস্থানত বহিষ্কৃত দুই ছাত্র রিয়াজুল ইসলাম জয় ও অভিজিত দাশকে বের করে দিয়ে কক্ষগুলো দখলমুক্ত করা হয়।

চমেক সূত্র জানায়, বহিষ্কৃত দুই ছাত্র চমেক প্রশাসনের এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনো উচ্চবাচ্য না করলেও ইন্টার্ন চিকিৎসক আসেফ বিন তাকি কলেজ প্রশাসন, হোস্টেল তত্ত্বাবধায়কসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সংবাদ প্রকাশ করায় মিডিয়া কর্মীদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক কথাবার্তা ও অপ্রপ্রচার চালিয়ে আসছেন। কলেজ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে স্থানীয় চকবাজার থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শনিবার জরুরি সভায় বসে চমেক অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে, চমেকে ছাত্রাবাস বা ক্যাম্পাসে বহিরাগত, অনাবাসিক, নির্দেশ অমান্য করে কোনো ইন্টার্ন চিকিৎসক কোনো ছাত্রাবাস বা কলেজ ক্যাম্পাসে অবৈধভাবে প্রবেশ বা অবস্থান করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশ প্রশাসনকে বলা হয়েছে। সেইসঙ্গে মেডিকেল কলেজের কোনো শিক্ষার্থী বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী বা অবাঞ্ছিত ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে দলবদ্ধভাবে ক্যাম্পাসে বা হোস্টেলে অবস্থান করতে দেখা গেলে তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

জানতে চাইলে চমেক অধ্যাক্ষ অধ্যাপক ডা. সাহেনা আক্তার বলেন, ‘ছাত্রাবাস থেকে বের করে দেওয়ার পর তাকি ক্যাম্পাসে দলবদ্ধভাবে মহড়া দিচ্ছেন বলে আমরা জানতে পেরেছি, যাতে কয়েকজন শিক্ষার্থীও যুক্ত আছেন। শিক্ষকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের সম্মানিত ব্যক্তিদের নিয়ে তাকি মনগড়া বিদ্বেষপূর্ণ কথাবার্তা ছড়াচ্ছেন। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সভায় এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সিদ্ধান্ত বহিষ্কৃত অপর দুই ছাত্রের জন্যও কার্যকর হবে।’

আসিফ বিন তাকি, রিয়াজুল ও অভিজিৎ- তিনজনই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। গত ফেব্রুয়ারিতে ছাত্রশিবিরের কর্মী সন্দেহে চার ছাত্রকে আটকে মারধরের অভিযোগে কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেয় চমেক কর্তৃপক্ষ।

চমেকে চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী দু’টি পক্ষ সক্রিয় আছে। তাকি নাছিরের অনুসারী এবং রিয়াজুল-অভিজিৎ নওফেলের অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

সারাবাংলা/আরডি/পিটিএম

চমেকে ছাত্রলীগ নেতা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর