স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বাড়লেও আশা দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা
৭ জুন ২০২৪ ১২:৪৫
ঢাকা: দেশে নতুন অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে ৪১ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে যা প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের ৫ দশমিক ১৯ শতাংশ। গত অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতে বাজেট বরাদ্দ ছিল ৩৮ হাজার ৫১ কোটি টাকা যা প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটের ৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ ছিল। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যের বরাদ্দ বাড়ছে ৩ হাজার ৩৫৭ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের তুলনায় এবার বরাদ্দ মাত্র শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বেশি।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অল্পমাত্রায় বরাদ্দ বাড়ানো হলেও চলতি বাজেটেও আসলে গুরুত্ব পায়নি স্বাস্থ্য খাত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বারবার স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর কথা বলে আসলেও সেটাকে মানা হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মেনে ১৫ শতাংশ না হলেও অন্তত আট থেকে ১০ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া যেতো স্বাস্থ্যখাতে। গতানুগতিক ভাবনা থেকে যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তাতে আসলে স্বাস্থ্যখাতের কোনো পরিবর্তন আশা করা যায় না। আর তাই প্রস্তাবিত বাজেট স্বাস্থ্য খাতের সমস্যা সমাধানে কাজে আসবে না।
স্বাস্থ্যে মাথাপিছু খরচে পিছিয়ে বাংলাদেশ:
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব বলছে, মৌলিক স্বাস্থ্যসেবা পেতে একজন বাংলাদেশির বছরে ৮৮ ডলার খরচ করা প্রয়োজন। কিন্তু বাংলাদেশে চিকিৎসা খাতে মাথাপিছু খরচ হয় ৫৮ ডলার, যার বড় অংশই নাগরিকেরা নিজেরা সংস্থান করেন। অথচ মালদ্বীপের মতো দেশে এক হাজার ৩৮ ডলার খরচ করা হয়ে থাকে যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ। ভূটানে ১৮০ ডলার ও শ্রীলঙ্কায় ১৬৬ ডলার খরচ করা হয়ে থাকে। নেপালে ৬৫ ডলার ও ভারতে ৭৪ ডলার খরচ করা হয়ে থাকে।
গত পাঁচ বছরের বাজেট বরাদ্দ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এ সময় স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ ৫ শতাংশের আশপাশে ছিল। অন্যদিকে, মোট জিডিপি অনুপাতের স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ ১ শতাংশের মতো।
বাংলাদেশে স্বাস্থ্যের কয়েকটি সূচক এখন নিম্নমুখী। অতি সম্প্রতি বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) জানিয়েছে, দেশে শিশুমৃত্যু বাড়ছে। অনেক বছর ধরে মোট প্রজনন হার এক জায়গায় স্থির হয়ে আছে। পাশাপাশি চিকিৎসা করাতে গিয়ে ব্যক্তির পকেটের ব্যয় প্রায় ৭০ শতাংশ হয়েছে। এই হার প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় বেশি। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। স্বাস্থ্যে কম বরাদ্দ পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলতে পারে।
গতানুগতিক বাজেটের বড় অংশই খরচ হবে অবকাঠামো আর বেতন-ভাতায়:
২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে মঞ্জুরি ও বরাদ্দের দাবিসমূহ বিশ্লেষণে দেখা যায়, বরাদ্দের টাকা দিয়ে ১৫টি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্থাপন করা হবে। সিলেট, বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী ও ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০০ শয্যার বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট স্থাপন করা হবে।
আটটি বিভাগীয় শহরের মেডিকেল কলেজে ১০০ শয্যার ক্যানসার ইউনিট স্থাপন এবং জেলা সদর হাসপাতালে ১০ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন করা হবে। এ ছাড়া দক্ষ চিকিৎসক ও নার্স গড়ে তোলার লক্ষ্যে শেখ হাসিনা জাতীয় স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও গবেষণা একাডেমি শীর্ষক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণে দেখা যায়, আগামী অর্থবছরে স্বাস্থ্যখাতে এডিপির মাত্র ৭ দশমিক ৮ শতাংশ বরাদ্দ থাকছে। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ ২০ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় স্বাস্থ্যখাতে মোট এডিপির ১১ শতাংশ বরাদ্দের কথা বলা হয়েছিল।
বর্তমানে স্বাস্থ্যখাতে ৫৬টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এর মধ্যে ২৮টি হাসপাতাল, ক্লিনিকসহ বিভিন্ন ধরনের ভবন নির্মাণসংক্রান্ত। বাকিগুলো গবেষণা, দক্ষতা, সেবা স্বয়ংক্রিয় করতে নেওয়া হয়েছে।
তবে বাজেটের বড় অংশই ব্যয় হবে মজুরি ও বেতন, প্রশাসনিক ব্যয় পেশাগত সেবা ও সম্মানী ভাতা বাবদ।
প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৩০ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। আর স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগের জন্য বরাদ্দ ১১ হাজার ২৮৩ কোটি টাকা। দুই বিভাগ মিলে ৪১ হাজার ৪০৮ কোটি টাকা। এটি আগের বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের চেয়ে ৩ হাজার ৩৫৬ কোটি টাকা বেশি।
বরাদ্দ পাওয়া টাকাও খরচ করতে পারে না স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়:
বরাদ্দ পাওয়া টাকাও সঠিকভাবে পুরোপুরি খরচ করতে না পারাটা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ধারাবাহিক ব্যার্থতার মাঝে অন্যতম।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৯-২০ এ ফেরত যায় ২৬.৪ শতাংশ টাকা, ২০২০-২১ এ ফেরত যায় ৪২ শতাংশ, ২০২১-২২ এ ফিরে যায় ২৯ শতাংশ টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে খরচ করতে না পারায় স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্ধ থেকে ফেরত গেছে ৩৯ শতাংশ টাকা।
আর তাই চলতি অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট কতটুকু ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সে বিষয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা যা বলছেন:
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল সারাবাংলাকে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট আসলে আগের মতোই গতানুগতিক। শুধুমাত্র কিছু বিষয় এদিক-ওদিক করা হয়েছে। ঝুঁকি মোকাবিলা, গবেষণা খাতে কিছু বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু এগুলো তো আগেও ছিল। কিছু তো হতে দেখি নাই সেগুলোতে। আর তাই নতুন কিছু প্রত্যাশা নেই।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে পরিকল্পনা শেষে এই বাজেট দেওয়া হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে টাকার যে অঙ্ক বেড়েছে তাও আসলে গতানুগতিক। এর ফলে কোনো পরিবর্তন দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা নাই।
তিনি আরও বলেন, প্রশ্ন উঠতে পারে কেনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নাই? কারণ এই বরাদ্দ করা বাজেটের অধিকাংশ টাকাই খরচ হয় অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য। এর পাশাপাশি যন্ত্রপাতি, গাড়ি ও তার তেল কেনার পেছনেও একটা বিশাল অংশ খরচ হয়ে থাকে। তাছাড়া স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার পেছনে একটা বিশাল অংক খরচ হয়ে থাকে। সুতরাং প্রস্তাবিত বাজেট যা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা এইসব কিছুর পেছনেই যাবে। এক্ষেত্রে স্বাস্থ্য খাতের মূল সমস্যাগুলো সমাধান কী হবে?
আবু জামিল ফয়সাল বলেন, দেশে সংক্রামক ও অসংক্রামক দুই ধরণের নানা রোগ কিন্তু বাড়ছে। তবে বাজেটে রোগ প্রতিরোধ নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলা হয় নাই। এমনকি স্বাস্থ্যখাতে যেসব সমস্যা আছে সেগুলো সমাধানেরও কোনো দিক নির্দেশনামূলক কিছু উঠে আসে নি এই বাজেটে। আর তাই বরাদ্দও নেই যার কারণে এই বাজেট আগের মতোই গতানুগতিক।
তিনি বলেন, রোগ প্রতিরোধের জন্য কোনো বরাদ্দ না থাকা খুবই হতাশাজনক। বাজেটটা হওয়া উচিত ছিল আমাদের দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে। এক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধের জন্য নানা ধরণের নির্দেশনামূলক বিষয় নিয়ে বরাদ্দ দরকার ছিল। বাজেটে যদি বলা হতো যে ৬০ শতাংশ রোগ প্রতিরোধের জন্য বরাদ্দ যেখানে নানা রকম অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধে মানুষকে সচেতন করতে হবে। লবন-চিনি খাওয়া বন্ধ করার পাশাপাশি ট্রান্সফ্যাটের ঝুঁকি কমাতে সচেতন করতে হবে মানুষকে। সবার জন্য মাস্ক পরা নিশ্চিত করা ও তার প্রচারণা চালানোর প্রয়োজনীয়তা বুঝে টাকা বরাদ্দ দেওয়া জরুরি ছিল।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসাযন্ত্র ও ঔষধ পত্রের পেছনে বাজেটে উল্লেখ করা হলেও প্রতিরোধের বিষয়ে কিছু উল্লেখ না থাকায় বাজেট আসলে আগের মতোই। বাজেটে যে টাকার অংক বাড়ার কথা বলা হচ্ছে সেটা তাই অর্থবহ কিছু না।
সবচাইতে বড় কথা হলো, এই বরাদ্দ দেওয়া টাকাও কিন্তু খরচ করতে পারবে না স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ব্যবস্থাপনার ত্রুটি সারানোর কোনো ইঙ্গিতও ছিল না চলতি বাজেট প্রস্তাবনায়। সেটা ঠিক করার জন্য যে সুপারভিশন ও মনিটরিং বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল সেগুলো নিয়েও কোনো ইঙ্গিত নেই বাজেটে-যোগ করেন জনস্বাস্থ্যবিদ আবু জামিল ফয়সাল।
প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইন্সটিটিউটের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ সারাবাংলাকে বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে আসলে গতানুগতিকতার বাইরে আসলে কিছু নাই। এর বাইরে আসলে যাওয়ার সুযোগও নাই। কারণ বড় বাজেট চাইতে গেলে আগে থেকেই পরিকল্পনা করতে হবে। আমাদের যদি সেই বিষয়ে কোনো কার্যক্রমই না থাকে তবে বাজেট তো আর বাড়ে না।
তিনি বলেন, এই বাজেট আসলে অন্যান্য বছরের মতোই। যেখানে কিছু পজিটিভ বিষয় থাকছে উল্লেখ করার মতো। যেমন, গত বছরের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে মাত্রা। ঝুঁকিপূর্ণ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে জরুরি বরাদ্দ হিসেবে। গবেষণা খাতের বরাদ্দও আগের মতো রাখা হয়েছে। ডায়ালাইসিস ফিল্টার এবং ডায়ালাইসিস সার্কিটের শুল্ক কমানোর পাশাপাশি ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের কাঁচামাল আমদানিতে রেয়াতি সুবিধার আওতায় নতুন কিছু কাঁচামাল যোগ করার সুপারিশ করা হয়েছে প্রস্তাবিত বাজেটে। এগুলো ভালো দিক।
তিনি আরও বলেন, সার্বিকভাবে এবারের রাষ্ট্রীয় বাজেটও কিন্তু বেশি বাড়ে নাই। আর তাই সেই হিসেবে স্বাস্থ্যখাতের বাজেট নিয়ে আলাদাভাবে কিছু বলার নেই। তবে দেশের প্রয়োজনের বিবেচনায় যদি বলা হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই এই বরাদ্দ ভালো না।
ড. হামিদ বলেন, দেশের স্বাস্থ্যখাতের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় নিলে বাজেটে অবশ্যই এই খাতে ন্যুনতম ১০ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া জরুরি। সেখানে আমরা বর্তমানে পাচ্ছি পাঁচ দশমিক দুই শতাংশ।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের গতানুগতিক ভাবনার বাইরে যেতে না পারায় ১০ শতাংশ বরাদ্দ না পাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখ করে ড. হামিদ বলেন, এর জন্য জরুরি বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেওয়া। প্রয়োজনে সিস্টেমের পরিবর্তন এনে সেটা করতে হবে।
তিনি বলেন্, যে বাজেট প্রস্তাব করা হয়েছে সেখানে যে বরাদ্দটুকু দেওয়া হয়েছে সেটা পুরোপুরি যেনো সরকার দেয় সেটা নিশ্চিত করা জরুরি। কারণ বরাদ্দ দেওয়ার সময় যা থাকে সেটা কিন্তু পুরোটা পাওয়া যায় না। গত বছর প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ ছিল ৩৮ হাজার কোটি টাকা কিন্তু পরে সেটা রিভাইজড করে ২৯ হাজার কোটি টাকা পায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যখাতে যা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে তা যেনো রিভাইজের সময় কমানো না হয় তা নিশ্চিত করা জরুরি। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সক্ষমতাও বাড়ানো জরুরি যেনো তারা এই বাজেট খরচ করতে পারে। সেজন্য সরকারের অন্যান্য মহলের সহযোগিতাও জরুরি।
ড. হামিদ বলেন, বাজেট দেওয়া হয় অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে। এক্ষেত্রে তাদের কাছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যদি রোগ প্রতিরোধের বাজেট নিয়ে কোনো পরিকল্পনা দিতো তবে সেটা নিয়েও আলোচনা বা ভাবনা হতো। অর্থ মন্ত্রণালয় তো আর এই বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে আলাদা করে কোনো প্রোগ্রাম তৈরি করে দিবে না।
তিনি বলেন, ধরেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে প্রচুর পদ খালি আছে। এখন তারা সেগুলো পূরণের জন্য যদি কোনো উদ্যোগ নিয়ে বলতো যে এগুলোর জন্য এতো টাকা জরুরি বেতনভাতা বাবদ তবে সেটা অর্থ মন্ত্রণালয় অবশ্যই ভাবতো। রোগ প্রতিরোধের বিষয়টাও আসলে তেমন। এক্ষেত্রে আসলে আগে কার্যক্রম নিতে হবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।
তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় যদি সেই ধরণের কার্যক্রম নিয়ে অর্থ বরাদ্দ চাইতো তখন বাজেট বরাদ্দ না দিলে সেটা নিয়ে আমরা অন্য সুরে কথা বলতে পারতাম। কিন্তু তারাই তো চায় না। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তো তার নিয়মিত কার্যক্রমের বাইরেই যেতে পারছে না।
তিন্নি আরও বলেন, গতানুগতিকতার বাইরে আসতে হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনেক পরিবর্তন প্রয়োজন। এখন সেই পরিবর্তন করার সাহসটা তারা পায় না। আবার তারা সাহস করলে দেখা যায় অন্যান্য মন্ত্রণালয় থেকে সাড়া পায় না। নানাবিধ সমস্যার কারণে এমনটা হয় না। আর তাই বাজেট আসলে এভাবেই হয়ে থাকে আমাদের স্বাস্থ্যখাতে।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল ৩টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদ অধিবেশন শুরু হয়। এরপর স্পিকারের অনুমতি নিয়ে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটের সারসংক্ষেপ পাঠ করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। ‘টেকসই উন্নয়নের পরিক্রমায় স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নযাত্রা’ শিরোনামের বাজেট বক্তৃতার বাকি অংশ পঠিত বলে গণ্য হবে।
প্রস্তাবিত বাজেটের আকার সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। দেশের ৫৪তম এই বাজেটে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে পাঁচ লাখ ৪১ হাজার কোটি টাকা। বাজেটের ঘাটতি দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। এই বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬ দশমিক ৭৫ শতাংশ। মূল্যস্ফীতির গড় হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশে সীমিত রাখার লক্ষ্য নিয়েছে সরকার। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ রাখা হয়েছে দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা।
সারাবাংলা/এসবি/এনইউ