‘তারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন’
২০ নভেম্বর ২০২৪ ২০:১৮
ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মোহাম্মদ খোদা বকশ চৌধুরী ও জনপ্রশাসন উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনের দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘খোদা বকশ পুলিশের সাবেক আইজি ছিলেন। গত সাড়ে ১৫ বছর তার কী ভূমিকা ছিল? তিনি কয়জন লোককে চেনেন। আমরা চিনি। আমরা প্রতিমুহূর্তে নিপীড়িত হয়েছি। এই অফিস ভেঙে চার পাঁচবার নিয়ে গেছে আমাদেরকে। যেদিন শেখ হাসিনার পতন হয়েছে তার পরের দিন আমরা জেলখানা থেকে ছাড়া পেয়েছি। তার আগের দিন পর্যন্ত রিমান্ডে ছিলাম।’
তিনি বলেন, ‘এই যে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের স্পিরিট এই যে চেতনা এটাকে কি তারা ধারণ করেন খোদা বকশরা? ওটা তো তারা ধারণ করেন না। তারা বড় বড় কথা বলে দেখাতে চান যে, তারা অত্যন্ত নিরপেক্ষ। আপনি তো আইজি ছিলেন বিএনপির সময়। আপনি কী করতে পেরেছিলেন? আপনাদের কারণেই তো ১/১১ এসেছিল, অগণতান্ত্রিক শক্তি এসেছিল।’
রিজভী বলেন, ‘উপদেষ্টা হওয়ার পর আলী ইমাম মজুমদার প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস করার জন্য ডিসি নিয়োগ দিলেন ঠিক বেছে বেছে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের পক্ষে যারা প্রশাসনিক লোক ছিল তাদেরকে। পরে হয়তো এটা পরিবর্তন করেছে নানা দিক থেকে বিতর্কিত হয়ে। কিন্তু উনি এই সাড়ে ১৫ বছর শেখ হাসিনার আমলে কখনোই কি গণতান্ত্রিক আন্দোলনের পক্ষে একটি আর্টিকেল লিখেছেন? আমাদের সমর্থনে কি কখনো একটি কথা লিখেছিলেন অথবা জুলাই আগস্টে তারা কি কোনো মতামত দিয়েছেন?’
‘তারা (খোদা বকশ-আলী ইমাম) অন্তরের মধ্যে একটি মত ধারণ করেন, সেটার প্রতিফলন আমরা দেখেছি উপদেষ্টা হওয়ার পর’— বলেন রিজভী।
তিনি বলেন, ‘আমরা শুনেছি- যারা বঞ্চিত ছিলেন, আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন তাদের বিপক্ষেই খোদা বকশ নাকি অবস্থান নিচ্ছেন। এটা কিন্তু খুবই রহস্যজনক ব্যাপার। টার্গেট করে তাদের বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেন জানি একটি পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নিজের পছন্দকে বাস্তবায়ন করার জন্য তারা এই কাজগুলো করছেন।’
রিজভী বলেন, ‘মূল স্পিরিটের বাইরে কয়েকজন উপদেষ্টার পদক্ষেপ আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। এটা গোটা জাতিকে শঙ্কার মধ্যে নিয়ে গেছে। এই কারণেই আজকে সালমান এফ রহমানদের মত লোকেরা কারাগারের ভেতর থেকে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে এবং যারা এখনও গ্রেফতার হননি, তারা বিপুল অংকের টাকা ছিটাচ্ছেন অস্থিতিশীল করার জন্য।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির ওপর যে এত অত্যাচার অবিচার হল, বেগম খালেদা জিয়াকে একটি জড়াজীর্ণ পরিতক্ত কারাগারে যেভাবে নির্যাতন করা হল, মিথ্যা মামলায় আটকে রাখা হল, কই সেই সময় তো আলী ইমাম মজুমদার অথবা খোদা বকশ কোনো কথা বলেননি। এখন এসে একটি স্থিতিশীল সরকারের মধ্যে কে ভালো, কে মন্দ উনারা উনাদের বিবেচনা দিয়ে তাদের পছন্দ-অপছন্দ দিয়ে গণতন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, সহ প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য খন্দকার আবু আশফাক, মামুন হাসান, হাবিবুর রশিদ হাবিব, ফজলুর রহমান খোকন, রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ও আব্দুস সাত্তার পাটোয়ারী, রাশেদ ইকবাল খান প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/এসআর