ভারত ঋণ দিয়েছে ‘নিজেদের প্রয়োজনে’, প্রতিশ্রুতির মাত্র ২৫% ছাড়
১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৬ | আপডেট: ১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৫:৩৬
ঢাকা: গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের ৪০টি প্রকল্পে ৭৩৬ কোটি ডলার ঋণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত। তবে এর মধ্যে তারা ঋণ ছাড় করেছে মাত্র ২৫ শতাংশ। দেশের অর্থনীতির ওপর শ্বেতপত্র প্রণয়নের জন্য গঠিত কমিটি বলছে, এই ঋণও ভারত কেবল সেসব প্রকল্পেই দিয়েছে যেগুলোর সুবিধাভোগী তারা নিজেরাই। যেসব সড়ক ও রেলপথ তাদের প্রয়োজন, কেবল সেগুলোই ঋণ দিয়ে করিয়ে নিয়েছে দেশটি।
শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনের তথ্যের আলোকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) একটি সূত্র জানায়, গত ১৫ বছরে ভারত তিনটি লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) মিলিয়ে বাংলাদেশকে মোট ৭৩৬ কোটি ডলার ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এর মধ্যে গত অক্টোবর মাস পর্যন্ত সব মিলিয়ে ছাড় হয়েছে মাত্র ১৮৬ কোটি ডলার, যা প্রতিশ্রুতির মাত্র ২৫ শতাংশ। ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক এই ঋণ দিচ্ছে।
সূত্র বলছে, এসব ঋণের বিপরীতে তিনটি এলওসিতে সড়ক ও রেল যোগাযোগ, জ্বালানি, রাস্তাঘাট নির্মাণসহ অবকাঠামো খাতে এ পর্যন্ত ৪০টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১৫টি শেষ হয়েছে। চলমান আছে আটটি প্রকল্প। বাকি প্রকল্পগুলো পরামর্শক ও ঠিকাদার নিয়োগ কিংবা প্রকল্প প্রস্তাবনা তৈরির পর্যায়ে রয়েছে। প্রকল্পগুলোতে ভারতের ঋণ ছাড়ে জটিলতা প্রকল্পগুলোতে দীর্ঘসূত্রতা তৈরি করেছে।
সূত্র মতে, এখন পর্যন্ত ভারতীয় ঋণের প্রথম এলওসির ৩৭ কোটি ডলারের মতো পরিশোধ করা হয়েছে। এদিকে ভারতের ঋণের কোনো টাকা দেশে আসেনি। ঠিকাদারকে তাদের দেশেই বিল পরিশোধ করা হয়েছে। কিন্তু এখন আমাদের বৈদেশিক মুদ্রাতেই অবশিষ্ট ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
সূত্র জানায়, এ ছাড়া শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির প্রতিবেদনে বেশ কিছু প্রকল্পের দুর্বলতা তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে পদ্মা সেতু ও এই সেতুর রেল সংযোগ, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্র ও কর্ণফুলী টানেল অন্যতম। পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের দুর্নীতির অভিযোগ ও কানাডার আদালতের বিষয়ে পর্যবেক্ষণ অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণের বিষয়েও ত্রুটি তুলে ধরা হয়েছে।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা বা ৩ দশমিক ৫৬ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে ২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ করা হয়েছে অগ্রণী ব্যাংকের দেওয়া বৈদেশিক মুদ্রার মাধ্যমে।
প্রসঙ্গত গত আগস্টে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানিয়েছেন, সংকোচনের পর পদ্মা সেতু প্রকল্পে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ৭৭০ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
সারাবাংলা/আরএস