Friday 27 Dec 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সংস্কারের প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্যের ডাক পরিবেশ উপদেষ্টার

স্পেশাল করসপন্ডেন্ট
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:৫১ | আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪ ২২:৫৫

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

ঢাকা: সংস্কারের প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনে মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এর জন্য প্রয়োজনে যার যার অবস্থান থেকে ছাড় দিতেও প্রস্তুত থাকতে বলেছেন তিনি।

উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, ‘ঐক্যের কথা বললে বুঝতে হবে কী কী বিষয়ে ঐক্য চাই। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জন্য ঐক্য প্রয়োজন। রাজনৈতিক সংস্কারের জন্য ঐক্য প্রয়োজন। তরুণ প্রজন্মের রাষ্ট্র পরিচালনায় অন্তর্ভুক্তির জন্য ঐক্য প্রয়োজন। জনগণকে সম্পৃক্ত করেই মতৈক্যে পৌঁছাতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২৮ ডিসেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ‘ঐক্য, সংস্কার, নির্বাচন’ স্লোগানে এবং ‘ঐক্য কোন পথে’ শিরোনামে জাতীয় সংলাপ ২০২৪-এর সংলাপ অধিবেশনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা সংস্কারের বিষয়ে একমত হলে একে অন্যকে প্রতিপক্ষ ভাবার কোনো কারণ নেই। কী কী সংস্কার প্রয়োজন, কে করবে, কত দিনে করবে, কীভাবে তা কার্যকর হবে— আগামী দিনগুলোতে এসব সিদ্ধান্ত আমাদের নিতে হবে।’

‘এবার সংস্কারে পিছু পা হলে চলবে না। আমাদের সবার সহযোগিতা প্রয়োজন হবে, যেন সংস্কারে জনমতের প্রতিফলন দেখতে পাই। জনমতের প্রতিফলন ঘটাতে না পারলে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও কঠিন হবে। কারণ মানুষের প্রত্যাশার সঙ্গে আমাদের যদি ফাঁক থেকে যায়, তাহলে বারবারই আমরা রাজনৈতিক অস্বস্তি ও জটিলতার মধ্যে পড়ব,’— বলেন উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান।

কেবল অন্তর্বর্তী সরকার নয়, পরিবর্তনের দায় ও দায়িত্ব সবাকেই নিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন সৈয়দা রিজওয়ানা বলেন, ‘কাগজে-কলমে সংস্কার করে দিয়ে গেলে হবে না, সংস্কারের চর্চা করতে হবে, যেন মানুষ এর সুফল পায়। কেবল নেতৃত্বে পরিবর্তন হয়ে গেলেই সবকিছুতে পরিবর্তন হয়ে যাবে না। সেটা সম্ভব হবে মনোজগতে পরিবর্তন এলে। আমাদের এই উপলব্ধির জায়গাটা তৈরি করতে হবে— আমরা কেউই ক্ষমতায় যাই না, দায়িত্বে যাই। দায়িত্ব পালন করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

বিজ্ঞাপন

রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘ক্ষমতা প্রয়োগে জনগণের অংশগ্রহণ প্রয়োজন। ঐক্য কোন পথে— এটা যদি জিজ্ঞাসা করেন, তাহলে সংস্কারের প্রসঙ্গ আসবে। সংস্কার যে প্রয়োজন, এটা আমরা সবাই স্বীকার করে নিয়েছি। ঐক্যের পথ বন্ধুর, এখানে সবার কথা শুনেই আমাদের ঐক্যের পথে যেতে হবে। সংস্কারের প্রয়োজন স্বীকার হলেও কোন কোন পথে লাগবে, কতদিনে হওয়া সম্ভব জরুরি, এগুলো নির্ধারণ করতে হবে।’

তরুণদের প্রতি আস্থার কথা জানিয়ে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, ‘তরুণ নেতৃত্বের প্রতি আমি সব সময়ই আস্থাশীল ও আশাবাদী। বড় ধরনের পরিবর্তন তারুণ্যই আনতে পারবে। কারণ তারাই নতুন করে ভাবতে শিখেছে। তারাই একটা জিনিসকে নতুন চশমা দিয়ে দেখতে শিখেছে। কিন্তু নেতৃত্বে পরিবর্তন হয়ে গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে, তাও কিন্তু ঠিক না। পরিবর্তন একটি প্রক্রিয়া, কেবল আইন করে দিলেই হবে না। এই প্রক্রিয়া যেন চালু থাকে, তার জন্য আমাদের নিজেদের প্রশিক্ষিত করতে হবে। এখানে তারুণ্যের যেমন ভূমিকা আছে, অভিজ্ঞতারও ভূমিকা থাকবে।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি আশাবাদী এ সরকার দায়িত্ব নিয়ে যে কাজগুলো করছে, সংস্কার কমিশনগুলোর রিপোর্ট পাওয়ার পরই আমরা পাবলিক এংগেজমেন্টে চলে যাব। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ঐক্যমতের জন্যও কমিশন গঠন করা হবে। সংস্কারটি করতে পারলে যারা ভবিষ্যতে রাজনীতি করবেন তাদের জন্য অনেক ভালো হবে। বিদ্যমান রাজনৈতিক নেতাদের জন্য ও ভালো হবে, ভবিষ্যৎ তরুণ নেতাদের জন্যও ভালো হবে। কারণ তখন আমরা জানতে পারব জনগণের প্রত্যাশা কী এবং কোন প্রত্যাশার বিপরীতে কীভাবে কাজ করতে হবে। ঐক্যের পথটা সরল না, ঐক্যের পথটা আঁকাবাকাই হবে, কঠিনই হবে। কিন্তু আমাদের বদ্ধপরিকর হতে হবে, যেন জনগণের আশার প্রতিফলন আমরা ঘটাতে পারি।’

সারাবাংলা/টিআর

জাতীয় ঐকমত্যের ডাক পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর