কামরাঙ্গীরচরে কারখানায় মিলল দুই শ্রমিকের মরদেহ
৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৩:১৮ | আপডেট: ৫ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৩১
ঢাকা: রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের একটি কারখানা থেকে দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এরা হলেন- আবু বকর সিদ্দিক নাঈম (২১) ও মোহন (১২)।
শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে কামরাঙ্গীরচর কয়লাঘাট (করিমাবাদ) সাধন ভিলা নামক বাড়ির নিচতলায় ভ্যানিটি ব্যাগ তৈরির একটি কারখানা থেকে ওই দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা দুজনই ওই কারখানার শ্রমিক ছিলেন। নিহত নাঈম নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার দূর্গাপুর গ্রামের অলিউল্লাহর ছেলে; আর মোহন তাদের পাশের বাড়ির মো. আলাউদ্দিনের ছেলে।
প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ছাড়পোকা মারার কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। মরদের দুটি উদ্ধারের পর গত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠায় পুলিশ।
কামরাঙ্গীরচর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মুছা দুটি সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করেন, গতকাল শনিবার দুপুর ২টার দিকে কামরাঙ্গীরচর কয়লাঘাট (করিমাবাদ) সাধন ভিলা নামে বাড়ির নিচতলার একটি কারখানা থেকে ওই দুই শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা দুজনই নারীদের ভ্যানিটি ব্যাগ তৈরির ওই কারখানার শ্রমিক ছিলেন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেকের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই বাসা থেকে ছাড়পোকা মারার কীটনাশকের খালি প্যাকেট এবং আংশিক খাওয়া রুটি উদ্ধার করা হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, কীটনাশকের বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এদিকে, কারখানার মালিক ইউনুসের ছোট ভাই মোহাম্মদ ইয়াকুব ও মৃত নাঈমের মামা বেলায়েত হোসেন জানান, নাঈম কারখানাটিতে ৫-৬ বছর এবং মোহন এক বছর যাবত কাজ করতো। কারখানাটিতেই থাকতেন তারা। কারখানার ভেতর ছারপোকার উপদ্রবের কারণে মাঝেমধ্যেই তারা কীটনাশক প্রয়োগ করা হতো।
কয়েকদিন আগে কারখানার মালিকই অ্যালুমিনাম ফসফাইড (এআইপি) ট্যাবলেট এনে রাখেন। এরপর সেগুলো তাদেরকে রুমে প্রয়োগ করতে বলে তিনি গ্রামের বাড়িতে চলে যান।
শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) কারখানার কাজ বন্ধ ছিল। তখন তারা দিনের বেলায় দরজা জানালা বন্ধ করে ওই কীটনাশক ফ্লোরে ছিটিয়ে রেখেছিলেন। রাত সাড়ে ১০টার দিকে তারা দুজন রুমে ঢুকেন। রুটি কলা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। তবে বিষক্রিয়ার বিষয়টি তারা হয়তো বুঝতে পারেন নি।
শনিবার সকালে মালিকের ছোট ভাই কারখানা খোলার জন্য তাদেরকে বাইরে এসে ডাকাডাকি করলেও তাদের কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে তিনি চলে যান। এরপর জোহরের নামাজ পড়ে আবার গিয়ে তাদেরকে আবারও ডাকাডাকি করেন। কিন্তু তখনও কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ওই রুমের দরজা ভেঙ্গে তারা ভেতরে ঢুকে দেখেন যে, ফ্লোরে বিছানায় দুজনই মৃত অবস্থায় পড়ে আছেন। পরবর্তীতে তারা থানায় খবর দেন।
সারাবাংলা/এসএসআর/এসডব্লিউ