শীতে সবজিতে স্বস্তি, ঊর্ধ্বগতি গরুর মাংসের দামে
৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:০০ | আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ১২:৫২
ঢাকা: শীতকালীন শাকসবজিতে ভরপুর সবজির বাজার। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় রাজধানীতে এখন অনেকটাই স্থিতিশীল এই বাজার। তবে উল্টো চিত্র দেখা গেছে মাছ-মাংসসহ নিত্যপণ্যের বাজারে। শবে বরাতের আগে মাংসের দাম আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বরের কাঁচাবাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।
স্বস্তি সবজির বাজারে
বর্তমানে বাজারে সব সবজির দাম সহনীয় পর্যায়ে রয়েছে। এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন ক্রেতারা। এ সময় বাজার করতে আসা একরাম উদ্দিন বলেন, ‘সবজির দাম এখন অনেক কমেছে। এরকম থাকা উচিত সবসময়। এই দাম থাকলে সবাই খেয়ে-পরে বাঁচতে পারবে।’
বিক্রেতা নুরউদ্দিন বলেন, ‘এখন সবজির মান ভালো, দামও কম। আমরা আগে যেসব সবজি বেশি দামে কিনে আনতাম সেগুলো দেখতে এখনকার মতো এতো টাটকা ছিল না। কিন্তু কিনে আনতে হতো বেশি দামেই।’
মানভেদে প্রতিটি লাউ ৬০-৭০ টাকা, চাল কুমড়া ৪০-৫০ টাকা, ফুলকপি ২০ টাকা, বাঁধাকপি ২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি কাঁচা কলা ২৫ টাকা, লেবু ২৫-৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। আজ বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ৪০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, শিম ৩০-৪০ টাকা, লম্বা বেগুন ৪০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ৫০ টাকা, কালো গোল বেগুন ৫০-৬০ টাকা, শসা ৩০-৪০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, মুলা ২০ টাকা, লাল মুলা ৩০ টাকা, শালগম ২০ টাকা, ঢেঁড়স ৭০ টাকা, পটোল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, বরবটি ৬০-৭০ টাকা, পেঁয়াজকলি ২০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৮০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, কাঁচা মরিচ ৫০-৬০ টাকা, ধনেপাতা ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহের তুলনায় বেশির ভাগ সবজির দামই প্রতি কেজিতে কমেছে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া কয়েকটি সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
স্বস্তি ফিরছে আলু-পেঁয়াজের বাজারেও
আজ বাজারে সব ধরনের আলুর দাম কমেছে। একইসঙ্গে কমেছে চায়না আদার দামও। আজ মান ও আকারভেদে প্রতি কেজি নতুন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়। এর মধ্যে ছোট আকারের পেঁয়াজ ৫০ টাকা এবং বড় আকারের পেঁয়াজ ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি নতুন সাদা আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা, নতুন লাল আলু ২৫ টাকায়। নতুন বগুড়ার আলু ৩০-৩৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আজ দেশি রসুন ২৪০ টাকা, চায়না রসুন ২২০-২৩০ টাকা, চায়না আদা ২০০-২২০ টাকা, নতুন ভারতীয় আদা ১২০ দরে বিক্রি হচ্ছে।
এ ক্ষেত্রে দেখা গেছে, গত সপ্তাহের তুলনায় আজ মানভেদে প্রতি কেজিতে নতুন দেশি সাদা আলুর দাম ৫-১০ টাকা, নতুন দেশি লাল আলুর দাম ৫-১০ টাকা এবং নতুন বগুড়ার আলুর দাম ১৫-২০ টাকা কমেছে। এছাড়া প্রতি কেজিতে চায়না আদার দাম কমেছে ২০-৪০ টাকা।
মাংসের বাজার নাগালের বাইরে
গরু ও খাসির মাংস ঊর্ধ্বগতি। মুরগির দাম কেন সহনীয় পর্যায়ে আসছে না জানতে চাইলে বিক্রেতা শাহজাহান বলেন, ‘দাম কমেছে। তবে এটা ওঠানামার মধ্যেই থাকবে। তাছাড়া আমাদের কিছু করার নাই। আমরা যেমন দামে কিনি তার থেকে কিছুটা লাভ রেখে বিক্রি করি।’
মানুষের নাগালের বাইরে। ব্রয়লার ও কক মুরগির দাম কিছুটা ।
আজ প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ টাকায়। খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ১৯৩-২০০ টাকা, কক মুরগি ৩০৫-৩১৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৮৮-২৯০ টাকা, দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫৫০ টাকা কেজি দরে। ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন লাল ডিম ১৩০ টাকা, সাদা ডিম ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গত সপ্তাহের সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, আজ প্রতি কেজিতে ব্রয়লার মুরগি দাম ৩-১০ টাকা, কক মুরগির দাম ১৫-৩৫ টাকা কমেছে। এছাড়া গরু ও খাসির মাংস, দেশি ও লেয়ার মুরগি দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। একইসঙ্গে আজ ফার্মের মুরগির লাল ও সাদা ডিমের দামও অপরিবর্তিত রয়েছে।
মাছের দাম অপরিবর্তিত:
মাছের দাম অপরিবর্তিত, অর্থাৎ আগের মতোই ঊর্ধ্বগতি। দাম না কমার কারণ হিসেবে বরাবরের মতো বিক্রেতারা জানান, চাহিদা বেশি সাপ্লাই কম, তাই দাম বেড়েছে।
আজ আকার ও ওজন অনুযায়ী ইলিশ মাছ ৭০০-২ হাজার ২০০ টাকা, রুই ৩৫০-৫৫০ টাকা, কাতল ৪০০-৬০০ টাকা, কালিবাউশ ৪৫০-৬০০ টাকা, চিংড়ি ৮০০-১ হাজার ৫০০ টাকা, কাঁচকি ৪০০ টাকা, কৈ ২২০-১ হাজার ২০০ টাকা, পাবদা ৪০০-৬০০ টাকা, শিং ৪০০-১০০০ টাকা, টেংরা ৫০০-৮০০ টাকা, বোয়াল ৬০০-১ হাজার ২০০ টাকা, শোল ৮০০-১ হাজার ১০০ টাকা, মেনি ৬০০-৭০০ টাকা, চিতল ৬০০-৯০০ টাকা, সরপুঁটি ২৫০-৪০০ টাকা, রূপচাঁদা ৮০০-১ হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে, রোজার আগে মনিটরিংয়ের মাধ্যমে দাম আরোও কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
সারাবাংলা/এফএন/এসডব্লিউ