‘বিএনপি নেতা সাজেদুলকে ইনজেকশন পুশ করে মেরে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেওয়া হয়’
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:১৩
ঢাকা: ঢাকা মহানগর ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সুমনকে নিয়ে ভেরিফায়েড ফেসবুকে আবেগঘন পোস্ট করেছেন সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আয়নাঘর পরিদর্শনের পর ফারুকী সন্ধ্যায় তার ফেসবুকে লিখেন, ‘এরকমই কোনো একটা ঘরে হয়তো আমার বাল্যবন্ধু সাজেদুল ইসলাম সুমনকে আটকে রাখা হয়েছিল। এইরকমই কোনো একটা ঘরে অজানা আশঙ্কায় সে কেঁপে কেঁপে উঠতেছিল। এইরকম একটা ঘরে বসেই হয়তো সে আল্লাহর দরবারে হাত তুলে কাঁদতে কাঁদতে বলছিল- ‘আল্লাহ, তুমি আমারে এবারের জন্য বাঁচাইয়া দাও। আমি আর রাজনীতি টাজনীতি করব না। আমার সন্তানের জন্য আমারে বাঁচাইয়া দাও। আমার মায়ের জন্য আমারে বাঁচাইয়া দাও।’
সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা লিখেন, ‘জিয়াউল আহসানের নির্দেশে সাজেদুলকে ইনজেকশন পুশ করে মেরে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেওয়া হয়।’ তিনি আরও লিখেন, ‘‘সুমনের সাথে আমার শেষ কথা হয় উত্তরার এক হাসপাতালে লুকাইয়া থাকা অবস্থায়। ওর ভাগনে আবরারের একটা শ্যুট ছিল আমার সাথে। স্পষ্ট মনে আছে ওর শেষ কথা, ‘দোস্ত, আবরাররে তুই ইজি কইরা নিস। নাইলে অ্যাকটিং খারাপ করব’।’’
ফারুকী পোস্টে উল্লেখ করেন, ‘এমনই এক জালিমের শাসনে ছিলাম যে, তোর জন্য সুমন একটা কথাও বলতে পারি নাই। পরে জানলাম মানুষরূপী জানোয়ার জিয়াউল আহসানের নির্দেশে তোরে ইনজেকশন দিয়ে মেরে শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেয়। যে বাবার ঘরে ফিরে সন্তানের সাথে ভাত খাওয়ার কথা ছিল তাকে এই ডাইনির দল শীতলক্ষ্যার মাছেদের খাবারে পরিণত করে। এই হায়েনাদের হয়ে যখন কেউ কথা বলতে আসে, আমার মাথায় রক্ত ওঠে যায়। আমি আমার কমপোজার লুজ করি।’
তিনি লিখেন, ‘এরকমই একেকটা ঘরে আমরা ১৭ কোটি মানুষ আটকা ছিলাম ১৬ বছর। আর গোপনে বলতাম, আল্লাহ এই ডাইনির হাত থেকে আমাদের বাঁচাইয়া দাও।’
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে নিখোঁজ হন ঢাকা মহানগর ৩৮ (বর্তমান ২৫) নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম সুমন। এর পর আর খোঁজ মেলেনি সাজেদুলের।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম