‘নির্বাচন যত বিলম্ব হবে দেশের সমস্যা তত বাড়বে’
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৪৫ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:২৬
ঢাকা: নির্বাচন যত বিলম্ব হবে দেশের সমস্যা তত বাড়বে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত তিনি এ মন্তব্য করেন।
রাজধানীর ফার্মগেইটে কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে ‘আমার বিএনপি পরিবার’ এর উদ্যোগে
চব্বিশের ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আহত বিভিন্ন গণমাধ্যমে আলোকচিত্র সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সঙ্গে এ মতবিনিময় অনুষ্ঠান হয়। এই অনুষ্ঠানে আহত সাংবাদিকদের আর্থিক অনুদান দেওয়া হয়।
তারেক রহমান বলেন, ‘জনগণের ঠিক করবে তারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব কাকে দেবে। কাজেই এই বিষয় (নির্বাচন) যত দেরি হবে সমস্যা তত বাড়বে বৈ কমবে না। আমরা জনগণের অধিকার যত দ্রুত জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে পারব, আমি বিশ্বাস করি তত দ্রুত আমরা দেশকে ধবংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হব।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যত দেরি হবে, ষড়যন্ত্রের ডালপালা তত বেশি বাড়তে থাকবে। এখনই বিভিন্ন রকম কথাবার্তা আস্তে আস্তে ছড়াচ্ছে। যারা পালিয়ে গেছে, তারা দেশের মানুষের বিপুল পরিমাণ সম্পদ লুট করে নিয়ে গেছে। অবশ্যই তারা সেই সম্পদ ষড়যন্ত্রের পেছনে ব্যয় করবে। কাজেই দেশকে যদি একটি স্টেবল সিচ্যুয়েশনে ভেতরে আনতে হয়, দেশকে যদি ঐক্যবদ্ধভাবে ধরে রাখতে হয়, দেশকে যদি একটি স্থিতিশীল অবস্থার মধ্যে ধরে রাখতে হয়, তাহলে দায়িত্ব অবশ্যই জনগণের হাতে ছেড়ে দিতে হবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘আমরা মনে করি, এদেশের মূল মালিক জনগণ। কাজেই এই দেশ নিয়ে কি হবে না হবে এই সিদ্ধান্ত নেবার একমাত্র ক্ষমতা বাংলাদেশের মানুষের। সমগ্র পৃথিবীতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা বলতে যা বুঝায় সেটি হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণ তাদের মতামত ব্যক্ত করে থাকেন। নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। রাজনীতিবিদেরকে তারা কি বলতে চায়, সেটাও তারা নির্বাচনের মাধ্যমে বলে থাকে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা আড়াই বছর আগে ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছে। এই ৩১ দফার নিয়ে দেশের মানুষের ঘরে ঘরে যাওয়ার চেষ্টা করছি, মানুষকে বলার চেষ্টা করছি কি আমাদের সেই ৩১ দফা। এর মূল কথা বৈষম্যহীন একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, যেই বাংলাদেশের প্রত্যাশা প্রত্যেকটি মানুষের। একটি বাংলাদেশ যেখানে মানুষের রাজনৈতিক অধিকার থাকবে, যেখানে মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা থাকবে। কারণ, একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, মানুষের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও রাজনৈতিক অধিকার যদি প্রতিষ্ঠা করা না যায়, সব কিছুই নষ্ট হয়ে যাবে।’
তারেক রহমান বলেন, ‘মানুষের কাছে গেলে একটি কথা বেরিয়ে আসে। আমরা সব কিছুই বুঝেছি, আমাদের সমস্যার সমাধান কী হবে? যেই নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম প্রতিদিন যেভাবে উঠছে-নামছে সেটি মানুষের কষ্টের কারণ হয়ে গেছে। মানুষের জানার ইচ্ছা এ সমস্যার সমাধান কীভাবে করা যায়?’
তিনি বলেন, ‘দেশের অনেক মৌলিক সমস্যা আছে, যার একটি ব্যাসিক সমাধানের পরিকল্পনা। আমাদের ৩১ দফায় দিয়েছি। আমরা যদি মানুষের সমস্যার সমাধান করতে না পারি তাহলে উচ্চ কক্ষই বলুন, এক ব্যক্তি দুই বারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হবে না বলুন, আরও যথাযথ ক্ষমতার ভারসাম্য যতই যাই বলি না কেন দিন শেষে মানুষের কোনো উপকার হবে না।’
আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুম্মনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সহ সম্পাদক আশরাফউদ্দিন বকুল, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি একেএম মহসিন, সাধারণ সম্পাদক বাবুল তালুকদার, সিনিয়র ফটো সাংবাদিক বুলবুল আহমেদ ও তারিফ রহমান।
সারাবাংলা/এজেড/এমপি