Tuesday 25 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সম্মানী-অধ্যক্ষ-শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম
বোরহানুদ্দীন কলেজ সভাপতি ঢাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

আরফাতুল ইসলাম নাইম, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:৩০ | আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪২

শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ। ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

ঢাকা: জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানসহ পরিচালনা পর্ষদেও পরিবর্তন আসে। সেই ধারাবাহিকতায় পরিবর্তন আসে ঢাকার শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের সভাপতির পদেও। ওই পদে দায়িত্ব পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক মুজাদ্দেদী আলফেছানী। তবে দায়িত্ব নেওয়ার ছয় মাসের মাথায় নিয়মবহির্ভূত সম্মানী গ্রহণ, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে স্বপদে বহাল রাখা ও দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদের আশ্রয় দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। আর এসব অনিয়মের তথ্য সারাবাংলার হাতে এসে পৌঁছেছে।

বিজ্ঞাপন

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, কলেজটির পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সভায় সম্মানী নেওয়ার নিয়ম না থাকলেও প্রতিসভায় তিনি নিচ্ছেন ১৮ হাজার টাকা। আর প্রতিমাসে একাধিক সভা আহ্বান করে গড়ে সম্মানীবাবদ তিনি পাচ্ছেন ৫০ হাজার টাকার বেশি। সেইসঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীরাও ৯ হাজার থেকে ১১ হাজার ১০০ টাকা করে সম্মানী নিচ্ছেন। অথচ বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসের নীতিমালা অনুযায়ী, গভর্নিং বডির সভাপতি ও সদস্যদের নিয়োগ পরীক্ষার সম্মানী ছাড়া অন্য কোনো সম্মানী নেওয়ার বিধান নেই। কিন্তু বিগত ছয় মাসে কলেজের গভর্নিং বডির সভাপতিসহ সদস্যরা ছয় মাসে অন্তত তিন লাখ টাকারও বেশি সম্মানী নিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে অধ্যাপক মুজাদ্দেদী আলফেছানী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে সম্মানী নিয়েছি। একটা গ্রুপ আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে।’

মেয়াদউত্তীর্ণ অধ্যক্ষ এখনো স্বপদে

বোরহানুদ্দীন কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষে নূরুল হকের জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে জানা গেছে, ১৯৬৪ সালের ১ ডিসেম্বরে জন্মগ্রহণ করেছেন তিনি। যেখানে সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ মোতাবেক, একজন কর্মকর্তার চাকরির বয়সসীমা ৫৯ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষেত্রে ৬০ বছর করা হয়েছে। সেই বিধি মোতাবেক, গত ৩০ নভেম্বর চাকরির বয়সসীমা শেষ হয়েছে নুরুল হকের। কিন্তু কলেজটির বর্তমান পরিচালনা পরিষদ অন্য কোনো শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব না দিয়ে নূরুল হককেই বহাল রেখেছেন। দায়িত্বকাল শেষ হলেও গত ১৪ জানুয়ারি শিক্ষক প্রতিনিধি নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকায় সই করেছেন তিনি। এ তালিকায় তিনি বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়োগ দেওয়া ১৯ শিক্ষককে ভোটার হিসেবে দেখিয়েছেন।

তার বিরুদ্ধে শিক্ষকদের অভিযোগ, কলেজে একাধিক সিনিয়র শিক্ষক থাকলেও কাউকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দিচ্ছেন না তিনি। বর্তমানের মেয়াদোত্তীর্ণ অধ্যক্ষের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিতে থাকে এখনো স্বপদে বহাল রেখেছেন। এমনকি এর আগে যে সকল শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অপরাধের প্রমাণ আছে তাদের নানা আশ্রয়-প্রশ্রয়ে রেখেছেন অধ্যাপক মুজাদ্দেদী আলফেছানী।

এ বিষয়ে মুজাদ্দেদী আলফেছানী সারাবাংলার এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘কলেজের দায়িত্ব নেওয়ার পর দেখেছি, বর্তমান অধ্যক্ষ সবচেয়ে সৎ ও যোগ্য ব্যক্তি। তাই, তাকে আমরা এ দায়িত্ব দিয়েছি। আর, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন মোতাবেক পরিচালনা পরিষদের সভাপতির ইখতিয়ার আছে যে কাউকে অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার।’

ডিআইএ প্রতিবেদনে দুর্নীতির অভিযোগ

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের (ডিআইএ) তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কলেজটিতে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অনিয়ম নিয়ে বর্তমান প্রশাসন দুর্নীতিবিরোধী কোনো তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করেনি। যেখানে কলেজের কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে, সেখানে প্রশাসন কোনো না কোনোভাবে তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। কলেজের প্রয়োজনীয় নথিপত্র গায়েব করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। জমি ক্রয়, অবৈধ নিয়োগ বাণিজ্য, ক্ষমতার অপব্যবহার ও এফডিআর কেলেঙ্কারিসহ কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষা ও আইন শাখা ব্রডশিট জবাব চাইলেও পরিচালনা পরিষদ তা দেয়নি।

এদিকে, অভ্যন্তরীণ অডিট ফার্ম দিয়ে অডিট সম্পন্ন করতেও সহযোগিতা করছে না বর্তমান কলেজ প্রশাসন। ফলে, একদিকে যেমন বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, অন্যদিকে দুর্নীতিবাজরা বহাল তবিয়তে তাদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। যেখানে দুর্নীতিবাজ এ শিক্ষকচক্রকে ঠাঁই দিচ্ছেন ঢাবি শিক্ষক ও বোরহানউদ্দিন কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মুজাদ্দেদী আলফেছানী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শিক্ষক সারাবাংলাকে বলেন, ‘মুজাদ্দেদী স্যার দায়িত্ব নেওয়ার পর সবাই তাকে এই দুর্নীতির বিষয়ে অবহিত করেন। কিন্তু ছয় মাস পার হলেও তিনি কোনো পদক্ষেপ নেননি। উপরন্তু সেই দুর্নীতিবাজ শিক্ষকদের সঙ্গেই তার বেশি সখ্যতা গড়ে ওঠে। ফলে, তারা আগের চেয়ে এখন আরও ভালো অবস্থানে আছেন।’

জানা গেছে, এ সব দুর্নীতির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ জানুয়ারি ব্রডশিট জবাব চায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। ডিআইএ-এর তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসা এসব অনিয়ম নিয়ে সাত কর্মদিবসের মধ্যে জবাব না দিলে প্রতিষ্ঠানপ্রধানের এমপিও স্থগিত এবং গভর্নিং বডির অনুমোদন বাতিলসহ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়। তবে, নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও এসব অনিয়মের কোনো জবাব না দিয়ে বহাল তবিয়তে রয়েছেন কলেজটির অবৈধ অধ্যক্ষ। সেই সঙ্গে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন কলেজটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আলমোজাদ্দেদী আলফেছানী।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এটা ২০১৯ সালের ঘটনা। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর এটা আমাদের উপর এসেছে। গত ২৯ জানুয়ারি যখন আমাদের কাছে চিঠি এসেছে তখন আমরা সেটা নিয়ে কাজ শুরু করেছি। অনেকগুলো ফাইল গায়েব হয়ে যাওয়ায় আমরা এখনো সেটার জবাবে চিঠি দিতে পারেনি।’

এখনো বহাল অবৈধ শিক্ষকরা

ডিআইএ-এর ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অতি অল্প সময়ের মধ্যে কলেজটিতে ৪৫ জন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়। যা কোনো বিশেষ উদ্দেশ্যে করা হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়। এ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আপ্যায়ন ও সম্মানীবাবদ খরচ করা হয় ১৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকার বেশি। সেইসঙ্গে নিয়ম না মেনে এই নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করেন কলেজের সাবেক সভাপতি অধ্যাপক হারুনর রশীদ খান।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া এসব শিক্ষকদের বিধিবহির্ভূতভাবে দেওয়া হয় উচ্চ বেতন। অবৈধভাবে নিয়োগ পাওয়া ৪৫ শিক্ষকের অনেকে বাদ পড়লেও এখনো ১৯ জন স্বপদে বহাল আছেন। তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া সত্ত্বেও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও মাউশির প্রতিনিধি ছাড়াই তাদের নিয়মিত করা হয়। তারা এখনো কলেজে শিক্ষক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও প্রমাণ থাকার পরও তাদের আশ্রয়-প্রশয় দিচ্ছেন মুজাদ্দেদী আলফেছানী।

এ বিষয়ে মুজাদ্দেদী বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনের পর অনেকগুলো কলেজ বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু আপনি দেখেন, আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সবকিছু স্বাভাবিকভাবে চলছে। আমরা শিক্ষার্থীদের দাবি-দাওয়ার ভিত্তিতে কাজ শুরু করেছি। ধাপে ধাপে সব হবে।’

নিয়মের বাইরে গিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন

শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজের নামে ক্রয়কৃত জায়গা দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেলে সেটা তদন্তের জন্য গত ১২ জানুয়ারি চার সদস্যবিশিষ্ট একটা কমিটি গঠন করেন সভাপতি আল মুজাদ্দেদী আলফেছানী। যেখানে নিয়মের বাইরে গিয়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দল থেকে বহিষ্কৃত দুই শিক্ষক তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার বিভাগের অধ্যাপক মেজবাহ-আল-ইসলাম, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম আমিন, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক হুমায়ুন কবির এবং কলেজের অধ্যক্ষকে সদস্য সচিব করে একটা কমিটি গঠন করেন। যেখানে নিয়মের ব্যত্যয় ঘটেছে বলে দাবি অনেকের।

নিয়ম অনুযায়ী, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো শিক্ষক বা কর্মচারীর দুর্নীতি, অনিয়ম বা শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য প্রথমত কলেজ প্রণীত তিন সদস্যের একটি ‘অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি’ গঠন করতে হয়। কমিটিতে সাধারণত পরিচালনা পরিষদের সদস্য এবং সিনিয়র শিক্ষকরা অন্তর্ভুক্ত থাকেন। পরে তাদের প্রতিবেদনে যদি অভিযুক্ত শিক্ষকের অপরাধ প্রমাণিত হয় তখন পরিচালনা পরিষদ ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করতে পারেন এবং পরবর্তী সময়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সেসব নিয়ম না মেনে ইচ্ছে মতো কমিটি করেছেন।

এমপিও পদ খালি থাকলেও সৃষ্ট পদে শিক্ষক নিয়োগ

এমপিওভুক্ত একটি কলেজে এমপিও পদ শূন্য রেখে সৃষ্ট পদে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যুক্তিসঙ্গত নয়। প্রশাসনের অন্য কোনো উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্যই এ ধরনের কাজ করে থাকে। শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজেও এমপিও-এর বাইরে গিয়ে সৃষ্ট পদে শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে বছরে কলেজ ফান্ড থেকে বেতন দিচ্ছে এক কোটি ৫৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এতে কলেজ ফান্ডের ওপর চাপ বাড়ছে।

এর আগের বেসরকারি কলেজগুলোতে পরিচালনা পরিষদের সদস্যরা টাকার বিনিময়ে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দিত। এনটিআরসিএ গঠনের পর কলেজগুলোতে কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার বিধান নেই। কিন্তু গভর্নিং বডি নানা প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দিয়ে যাচ্ছে। শেখ বোরহানুদ্দীন কলেজ সূত্রে জানা গেছে, সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর অন্তত ১০ জন নন-এমপিও শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন মুজাদ্দেদী আলফেছানী। এতে প্রতিবছর অন্তত ৩৬ লাখ টাকা কলেজের ফান্ড থেকে তাদের বেতন বাবদ দিতে হবে।

এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে মুজাদ্দেদী আলফেছানী বলেন, ‘আমি শুধুমাত্র তাদের কন্সুলেট করেছি। তারা এর আগে পার্টটাইম শিক্ষক ছিলেন। আগে অনেককে কন্সুলেট করা হলেও এই কয়জনকে করা হয়নি। তাই, আমি তাদের কন্সুলেট করেছি মাত্র।’ তিনি বলেন, ‘একটা গ্রুপ আমার বিরুদ্ধে উঠে-পড়ে লেগেছে। তারাই আমার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে।’

সারাবাংলা/পিটিএম

ঢাবি শিক্ষক মুজাদ্দেদী আলফেছানী শেখ বোরহানুদ্দীন পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ সভাপতি

বিজ্ঞাপন

মেলার ২৫তম দিনে নতুন বই এলো ১০১টি
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০০:০৫

মেলায় বাজছে বিদায়ের সুর
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:৫৯

আরো

সম্পর্কিত খবর