আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি ফজলে করিমের ২ ছেলের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা
১৬ মার্চ ২০২৫ ১৯:২৬ | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০২৫ ২০:৩৫
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ দলীয় ‘ক্ষমতাধর’ সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর দুই ছেলের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে রোববার (১৬ মার্চ) চট্টগ্রাম মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ নুরুল ইসলাম এ আদেশ দিয়েছেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চট্টগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাবলু সারাবাংলাকে জানিয়েছেন, দুদকের প্রধান কার্যালয়ে উপ-পরিচালক আজিজুল হক গত ১২ মার্চ সাবেক সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরীর দুই ছেলের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করেন। রোববার শুনানি শেষে আদালত দুদকের আবেদন মঞ্জুর করেন।
চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসন থেকে একাধিকার নির্বাচিত সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরীর দুই ছেলে হলেন- ফারাজ করিম চৌধুরী ও ফারহান করিম চৌধুরী। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারতে পালানোর পথে ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্তের আবদুল্লাহপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।
তার ছেলেদের বিরুদ্ধে দুদকের আবেদনে বলা হয়েছে, সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ক্ষমতার অপব্যবহার করে জলবায়ু ও পরিবেশ খাতের অর্থ লুটপাট, টেন্ডার বানিজ্য, শিপ ব্রেকিং ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদাবাজি, স্বর্ণ চোরাচালান ও হুন্ডি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণপূর্বক কমিশন বাণিজ্যসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ আছে। এছাড়াও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাত করে বিদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ আছে।
ফজলে করিমের নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নামে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান আছে। এ অবস্থায় তার দুই সন্তান ফারাজ করিম চৌধুরী ও ফারহান করিম চৌধুরী বিদেশে পালিয়ে যেতে পারেন বলে বিশ্বস্তসূত্রে জানতে পেরে দুদক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।
এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী ১৯৯৬ সালের আগে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে সেবছর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসন থেকে মনোনয়ন পান। কিন্তু জিততে পারেননি। এরপর ২০০১ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হন তিনি। এরপর ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালেও আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য হয়েছেন। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
ব্যাপক ক্ষমতাধর ফজলে করিমের গুম-খুন, বিরোধী মতের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি নিজ দলের বিরুদ্ধ মতের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করে এলাকা ছাড়তে বাধ্য করা, নিজস্ব বাহিনী গড়ে তুলে এলাকায় রাজত্ব কায়েম করা, সরকারি জায়গা দখলসহ বিস্তর অভিযোগ আছে। আর এসব কর্মকাণ্ডে তার সহযোগী ছিলেন বড় ছেলে ফারাজ করিম চৌধুরী, এমন অভিযোগ আছে। তবে ফারহান করিম চৌধুরী দৃশ্যপটের আড়ালে ছিলেন। কারাবন্দী ফজলে করিমের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত এক ডজনেরও বেশি মামলা হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/এসআর
চট্টগ্রাম দুদক ফারহান করিম চৌধুরী ফারাজ করিম চৌধুরী বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা সাবেক এমপি ফজলে করিম সারাবাংলা