ঢাকা: দেশের নির্বাচন ব্যবস্থার বিষয়ে সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ক্ষমতা খর্ব হবে বলে মন্তব্য করেছেন সংস্থার সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
এ কারণে জাতীয় ঐকমত্যে কমিশনের কিছু প্রস্তাবে ভিন্নমত প্রকাশ করে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বরাবর একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
সোমবার (১৭ মার্চ) নির্বাচন ভবনে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
ইসি’র সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ইসির ক্ষমতা খর্ব না হলে ভিন্নমত প্রকাশের কোনো কারণ ছিল না। কমিশনে ভিন্নমত প্রকাশ করার সুযোগ আছে, তাই মতামত দেয় হয়েছে। নয়টি বা দশটি ক্ষেত্রে ভিন্নমত প্রকাশ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনায় সীমানার পুনর্নির্ধারণে কমিশনের কথা বলা হয়েছে, আমরা বলেছি এর দরকার নাই। মানুষ গ্রাম শূন্য হয়ে বিদেশে যাচ্ছেন, শহরে আসছেন। এ জন্য শহরমুখী হয়ে যাচ্ছে আসন সংখ্যা। এটা না করে ভোটার, জনসংখ্যা, ভৌগলিক অবস্থান, আঞ্চলিক অখণ্ডতা বিবেচনায় করা উচিত।
আখতার আহমেদ বলেন, কমিশনের প্রস্তাবে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের ৪৮ ঘণ্টার ভেতরে সার্টিফাই করার কথা বলা হয়েছে। আমরা মনে করি- এটার দরকার নাই। নির্বাচন সম্পর্কে রিটার্নিং অফিসার সন্তুষ্ট না হয়ে তো ফলাফল দিচ্ছেন না। এটা গেজেট হচ্ছে, এটাই সার্টিফিকেশন। এমন কোনো ম্যাকানিজম কি আছে যে, আমরা সার্টিফিকেশন দেবো? ম্যাকানিজম কী হবে? সেটা তো আবার আরেকটা দিকে যাবে।
এনআইডি বিষয়ে তিনি বলেন, এনাআইডি কার্ডের বিষয়ে আমাদের অভিমত, সেটা হচ্ছে- এই সেবা আমাদের এখানে থাকা বাঞ্ছনীয়। কেননা, ২০০৭ সাল থেকে আমাদের অভিজ্ঞতা এবং স্কিলড করা হয়েছে। তাহলে এটা কেন নেওয়া হবে? বরং এটাকে আরো কীভাবে শক্তিশালী করা যায়, কলেবরটা কী করে বহুমুখী করা যায়, সেটা করতে হবে।
ইসির দায়বদ্ধতা ও কমিশনের শাস্তির বিষয়ে বলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ইসির শাস্তির ব্যবস্থা তো আছেই। শর্ত ভঙ্গ করলে সুপ্রিম জুড়িশিয়াল কাউন্সিল বা অন্যান্য আইন পরিবর্তন এটা কতটুকু বাস্তবসম্মত। একাডেমিক সাইডে বিষয়টা যদি বলি- চাকরি শেষ হওয়ার পাঁচ বছর পর আপনি বললেন আমি ওই নির্বাচনে শর্ত ভঙ্গ করেছেন। তাহলে পাঁচ ব্ছর পর আমাকে কোর্টে দৌঁড়াতে হবে। ২০ বছরের একটা জের, ঘানি টানার জন্য। দিস ইজ রেশনাল, এটা যৌক্তিক কি না। আমি ইমিডিয়েট শর্ত ভঙ্গ করেছি, এটা এখনই বলেন। এ জন্য রেজাল্ট প্রকাশ হয়ে গেছে, আর নির্বাচন হচ্ছে এমনই পদ্ধতি যেখানে একজন জিতবেন। বাকিরা হারবেন।
চার মাসের মধ্যে স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচন করার কথা বলা হয়েছে, এটিও সম্ভব নয়- বলে জানানো হয়েছে।