লাখো পর্যটক বরণে প্রস্তুত কক্সবাজার, ৭০ শতাংশ রুম আগাম বুকিং
৩০ মার্চ ২০২৫ ১০:০০ | আপডেট: ৩০ মার্চ ২০২৫ ০৪:১৪
কক্সবাজার: বিগত কয়েক বছরের মধ্যে এবারই ঈদুল ফিতরে দীর্ঘ ছুটি পাচ্ছে মানুষ। এবারের ঈদে টানা নয় দিন ছুটি। এই ছুটিতে মানুষ তাদের প্রিয় মুহূর্তগুলো কাটাতে ছুটে যাবে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পর্যটন স্পটে। তাই অন্যান্যবারের মতো এবারও পর্যটক বরণে প্রস্তুত দেশের সবচেয়ে নয়নাভিরাম পর্যটন স্পট সৈকত নগরী কক্সবাজার। এরই মধ্যে সেখানকার সাড়ে পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেলে ৭০ শতাংশের বেশি রুম আগাম বুকিং হয়েছে। টানা ছুটিতে লাখো পর্যটক সমাগমের আশা করছেন তারা।
পাহাড়, নদী ও অবিচ্ছিন্ন বিস্তৃত বালিয়াড়ির সৈকতের অপার নান্দনিক সৌন্দর্যের সমুদ্র নগরী কক্সবাজার ভ্রমণে সারাবছরই ছুটে আসেন হাজারো পর্যটক। তবে টানা ছুটির দিনগুলোতে সমুদ্র সৈকতসহ জেলার বিনোদন কেন্দ্রগুলো পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠে। এতে উৎসবের নগরীতে রূপ নেয় কক্সবাজার।
আগামী ৩১ মার্চ থেকে ৫ এপ্রিল পর্যন্ত ঈদুল ফিতরের টানা ছুটিতে সবার প্রত্যাশা কক্সবাজারে লাখো পর্যটকের সমাগম হবে। আর এসব পর্যটকদের বরণে সবখানে চলছে প্রস্তুতি। সাগরপাড়ের শামুক-ঝিনুক, আচার কিংবা শুটকির দোকানগুলোতে বেড়েছে ব্যস্থতা। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে দোকানের সাজ-সজ্জার পাশাপাশি নতুন পণ্যের সমাহার।
ঈদের ছুটিতে লাখো পর্যটক সমাগমে ভালো ব্যবসার পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিতের কথা বলেছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। তাই বিপুল সংখ্যক পর্যটকের নিরাপত্তা ও হয়রানি রোধে সার্বিক প্রস্তুতি নিয়েছে ট্যুরিস্টু পুলিশসহ প্রশাসন সংশ্লিষ্টরা। আর আগত পর্যটকদের বিধি-নিষেধ মেনে সমুদ্রস্নানের পরামশ সি সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার।

সাগরপাড়ে ওয়াচ টাওয়ার। ছবি: সারাবাংলা
এ প্রসঙ্গে সি সেফ লাইফ গার্ড সংস্থার জ্যেষ্ঠ লাইফ গার্ড রমজান আলী সারাবাংলাকে জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় পুরো রমজান মাসে তাদের প্রশিক্ষণকে আরও উন্নত পর্যায়ে নিয়ে গেছে। তবে বেড়াতে আসা পর্যটকদেরও সমুদ্রস্নানে বিধি-নিষেধ মেনে চলার পরার্মশ তাদের।
পুরো রমজান মাসে শূন্য থাকা সাড়ে পাঁচ শতাধিক হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট সাজানো হয়েছে নতুন সাজে। বিপুল সংখ্যক পর্যটক সমাগম উপলক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে বিশেষ আয়োজন। এরই মধ্যে ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে অধিকাংশ হোটেল-মোটেলের ৭০ শতাংশ রুম আগাম বুকিং হয়েছে বলে জানান বৃহত্তর বিচ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান ও হোটেল দি কক্স-টুডে’র ব্যবস্থাপক আবু তালেব শাহ। সারাবাংলার এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘কাঙ্ক্ষিত সংখ্যক পর্যটক সমাগমে মুখর হয়ে উঠবে সমুদ্রশহর।’
অন্যদিকে ঈদের ছুটিতে বিপুল সংখ্যক পর্যটকদের নিরাপত্তা ও হয়রানি রোধসহ সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (এডিআজি) আপেল মাহমুদ। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষ্যে কক্সবাজারে কয়েক লাখ পর্যটকের সমাগম ঘটবে। তাদের নিরাপত্তার ট্যুরিস্ট পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মাঠে থাকবে। বিশেষ করে জোর দেওয়া হবে ছিনতাই, পর্যটক হয়রানি, যানযট নিরসন সহ নানা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঈদের ছুটি বাড়ানো হবে গোয়েন্দা নজরদারি। সাদা পোশাকের টিম থাকবে মাঠে। সবমিলে প্রচেষ্টা থাকবে পর্যটকরা যেন ভ্রমণ শেষে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারে।’
এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তা ও হয়রানি রোধ নিশ্চিতে শনিবার (২৯ মার্চ) দুপুরে হোটেল-মোটেলসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে পরামর্শ ও দিক নির্দেশনামূলক প্রস্তুতি সভা করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
সারাবাংলা/পিটিএম