Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ফুটবলের জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রেস বিবৃতির অপেক্ষায়…


১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৬:০৭

ফুটবল সাংস্কৃতিক আগ্রাসনেরও অস্ত্র। লিওনেল মেসির বার্সেলোনা ছাড়ার বা থাকার আলেখ্য তা প্রমাণ করতে সচেষ্ট। যেখানে পুরো বছর বৈশ্বিক মহামারিতে অস্থিতিশীল বিশ্ব, সেখানে এক আর্জেন্টাইনের দলবদল অন্য সবকিছুকে ছাপিয়ে যেয়ে বলে, ফুটবল এর প্রতি খোদ ঈশ্বরের সমর্থন থাকতে পারে। মানবজাতির এই শারীরিক কসরতের মূল্য অর্থবহ হতো, যদি, মহান স্রষ্টার অস্তিত্বকে পাশে পেয়ে মানচিত্র ভিত্তিক সরকার প্রধানেরা ক্রিস্টিয়ানো বা মেসির খেলা দেখতে বসে যেতে পারতেন। হয়তো তা অসম্ভব। অলীক কল্পনা ! কিন্তু, সুন্দর স্বপ্নের দাবীও পূরণ হতে পারে, যদি সৎ দাবী নিয়ে হাজির হওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

এদিকে স্বপ্ন হল, ধারাবাহিক কতকগুলো ছবি ও আবেগের সমষ্টি— যা ঘুমের সময় মানুষের মাঝে অশরীরী আবহে ছোট্ট ক্ষণ হয়ে মিষ্টি কিংবা বিদঘুটে ঝড় হয়ে মনের ক্যানভাসে আসে। কেন আসে ? স্বপ্ন বাঁচে ছুঁয়ে যেয়ে অতৃপ্ত প্রেমে, মগজে সফেন হয়ে ফিরে আত্মার বিশ্রামে। অর্থাৎ মানুষ চলতে ফিরতে এক সেকেন্ড হতে আরও অধিক সময় ধরে কোন একটা বিষয়ের ওপর যদি ভেবে থাকে কিন্তু তা নিয়ে গন্তব্যটা ধরা না দিয়ে থাকে তবে ওই বস্তুগত প্রাণ নিষ্প্রাণ ঘটনা প্রবাহের মধ্যে বসবাস করেই অমীমাংসিত কণা হয়ে নিজের মস্তিষ্কে জমা বাঁধে, অনেকটা ফেনার মত করে থাকে। অতঃপর নিজের আত্মাটা ঘুম নামক বাস্তবতার কাছে যখন সঁপে দেয় তখন ওই ফেনা ফিরে এসে এমন একটা দরজায় কড়া নাড়ে যে, মানুষ স্বপ্ন দেখতে শুরু করে। অগোছালো এমন স্বপ্ন নিয়ে বাস্তবকে আগামীকাল ধরবো, এমন নিয়তে থাকার কোন অর্থ নেই। আবার এমন আবহ নিয়েই চিন্তাশীল মানুষ বর্তমান- ভবিষ্যতকে দেখতে পারার জায়গায় চলে যেতে পারে। সেই ধারাবাহিকতায়, মানুষের উচ্চাভিলাষী কল্পনার জাগ্রত আরেকটি সুন্দর অভিপ্রায়ের নন্দিত ভাবনার নামও স্বপ্ন। এই স্বপ্ন মানুষকে চোখ বন্ধ করে ঘুমন্ত প্রেমে দেখার সুযোগ নেই। এটি বেঁচে থাকার লাল- নীল যান্ত্রিক পথচলায় এক ধরণের প্রেরণার অনুষঙ্গ এবং অতি অবশ্যই তা দুরহ বাস্তবতার চাদরে ঘুমন্ত থাকে।

বিজ্ঞাপন

স্বপ্ন নিয়ে অনেক কিছুই বলা যায় ও যাবে। যা আজ বলবার সময় নয়। কিন্তু, যে স্বপ্ন সৎ দাবীর উপলক্ষ হয়ে বাঁচে, যা জেগে দেখতে হয়, তেমন বিচ্ছুরণে প্রতিভাত হয়ে বলতে চাইছি, বাংলাদেশের ফুটবলকে এগিয়ে যেতে হবে। সেক্ষেত্রে ঘুণে ধরা ফেডারেশনের সবকিছু নতুন করেই সাজুক। সেখানে টিকে থাকা ব্যক্তি বিশেষের প্রতি অতি আশীর্বাদ দিয়ে রাখাও অর্থহীন। কারণ, গেল ৪৫ বছরে আমাদের ফুটবল তো সবুজ তৃণার বিছানায় দারুণ কিছু করে বলতে পারছে না, আমার নাম ‘বাংলাদেশ’ !

মনে রাখা দরকার, এই বাংলাদেশ পৃথিবীর একমাত্র দেশ, যারা মহান মুক্তিযুদ্ধে ফুটবল এর মাধ্যমে বিশ্বকে বলেছিল, স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলকে শ্রদ্ধা কর, আমরা মুক্তি চাই, স্বাধীনতা চাই।

ফুটবলের উন্নয়ন বলতে জাতীয় ফুটবল দলের সাফল্য নয়। ফিফা ও এএফসির আওতাভুক্ত হয়ে একটি ফেডারেশনের নির্বাচন ও নেতৃত্ব নিয়ে নয়। নিয়মিত ফুটবল খেলার আসর, দর্শক তৈরি হওয়া তথা জনপ্রিয়তা এবং অতি অবশ্যই আন্তর্জাতিক পরিসরে সাফল্য— যেকোনো দেশের ফুটবল সংস্কৃতির চাওয়া পাওয়া এটিই। সেই স্বপ্ন দেখতে সৎ দাবী নিয়ে সৎ সত্তা হতে চাইবার অভিপ্রায়কে কেহ যদি বলে, তুমি দুঃস্বপ্নকে আলিঙ্গন করতে চাইছো। তখন, মন খারাপ করতে হয়। খারাপ হয়ে যায় !

মন খারাপ করতে চাই না। বাংলাদেশের ফুটবলকে ঢেলে সাজানোর জন্য আমাদের আপোষ করা চলবে না। সর্বক্ষেত্রে উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ যদি আজকের সরকারের লক্ষ্য হয়ে থাকে, তবে ফুটবলের জন্য কেন নয় ?

ইতিহাসের ধারাভাষ্য দিতে চাইলে দেখা যায়, একজন খোকা( বঙ্গবন্ধুর ডাক নাম) নিজে ফুটবল খেলতেন। তিনি ফুটবল কে পাগলের মত ভালবাসতেন। তাঁর পুত্র কন্যারা ও আজকের নাতি নাতনিরা ফুটবলের জন্য পাগল ছিল বা আছেন। সেই ফুটবলের জন্য কেন উদাসীনতায় ভর করবে প্রিয় বাংলাদেশ? দেশের মানুষ বিশ্বাস করে যে, একজন শেখ হাসিনায় ভর করে বাংলাদেশ, ফুটবলের চূড়ান্ত সাফল্যও নিজেদের করে নেয়ার জায়গায় যেতে পারে। তাহলে কেন ফুটবল নিয়ে এক পেশে নেতৃত্ব নেয়ার অশুভ উদ্যোগকে অভিনন্দন জানাতে হবে ? কেন ? হ্যাঁ, সব ধরনের সকল সংগঠকদের নিয়ে ফুটবল ফেডারেশন সাজুক। আবেগ, মায়া, টান, প্রেম, প্রীতি সব থাকুক, কিন্তু, দিনের শেষে ফুটবল বেঁচে যাক। আসন্ন ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচন ঘিরে কাউকে সামাজিক- মানসিক নিপীড়নের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক কৃষ্টিকে পিষ্ট করবার মধ্যে মাহাত্ম্য নেই।

আমি আশা করবো, ফুটবলের স্বার্থে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী ও রাষ্ট্রচিন্তকেরা আজকের মধ্যেই বিবৃতি দিয়ে বলবেন, “আসুন, সকলে মিলে আসন্ন ফুটবল ফেডারেশনের নির্বাচনে অংশ নিয়ে হারজিত যাই থাকুক, ফুটবলের জন্য নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে হাজির হই। কোন কোন প্যানেল কি কি করতে চান, বলুন। প্রয়োজনে যাদের প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবমুখী হবে, বাংলাদেশের ফুটবলের স্বার্থ সংরক্ষণে সেরাটা দিবে, আমরা তা রাষ্ট্রীয়ভাবে বলবো, অমুক প্যানেল- তমুক প্যানেল ভাল ভাল পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে। ফুটবলের স্বার্থে একযোগে কাজ করতে হবে সকল কে।” তা বলুক।

ঠিক এই মুহূর্তে আমি স্বপ্ন দেখি, একজন শেখ হাসিনা কাল প্রেস বিবৃতি দিয়ে এমন করেই বা কাছাকাছি পর্যায়ে কিছু বলছেন। সৎ আত্মায় বিভোর থেকে দেশের পথিকৃৎ ক্রীড়া মাধ্যমের প্রধান সম্পাদক হয়ে আমি তাগিদ রাখছি, আপনার সবিশেষ উদ্যোগে আমরা ফুটবল খেলুড়ে শক্ত দেশ হিসাবে একদিন আবির্ভূত হতে পারবো। আপনি নিশ্চয়ই অবগত যে, ফিফা র‍্যাংকিং- এ আমাদের অবস্থান কোথায় গিয়ে ঠেকেছে !

ফুটবলের জন্য উন্মাদনায় ভাসুক দেশ, আমরা খুঁজে নিই আমাদের একটি শাখার শ্রেষ্ঠ সাংস্কৃতিক নেতৃত্বকেও, যেমনটি বাংলাদেশের জনশ্রেণি আপনার মাঝে লাল সবুজের পতাকা তুলে দিয়ে স্বস্তিতে থাকতে পছন্দ করে।

লেখক: প্রধান সম্পাদক, ক্রীড়ালোক।

ফুটবল

বিজ্ঞাপন

মাদকের টাকার জন্য মা'কে খুন
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭

আরো

সম্পর্কিত খবর