Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশজুড়ে নৈরাজ্যের নানামূখী অপচেষ্টা, রুখবে কে?

মুনতাসির বিল্লাহ
২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৭:৪২

যাত্রাবাড়ীতে ডা. হাবিবুর রহমান মোল্লা কলেজে ঘোষণা দিয়ে ফেসবুকে লাইভ করে হামলা চালায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরা। ছবি: হাবিবুর রহমান

দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিশ্বের প্রতিটি দেশের জাতীয় অগ্রগতির চাবিকাঠি। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সামাজিক সম্প্রীতির কারণে পাশ্চাত্য সভ্যতার বিকাশ ও সমৃদ্ধি সম্ভব হয়েছিল। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া এবং চীন তাদের জাতীয় অগ্রগতি এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য টেকসই শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করেছে। সাম্প্রতিককালে, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ, ভারত, ব্রাজিল এবং সেনেগালে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে উন্নয়ন সাফল্যের অন্যতম দৃষ্টান্ত হয়ে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য এবং লাতিন আমেরিকার বেশির ভাগ দেশে অরাজকতা ও বিশৃঙ্খল পরিবেশের কারণে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম চলমান রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

আমাদের দেশকে ঘিরেও নৈরাজ্যের নানামূখী অপচেষ্টা হচ্ছে। আমরা কি তা বুঝতে পারছি? একটু সচেতন মানুষ হিসেবে চোখকান খোলা রাখলেই নানা নৈরাজ্যের পেছনে ষড়যন্ত্রগুলো টের পাওয়া যায়। আর এই সকল ষড়যন্ত্রের পেছনে রয়েছেন একজনই। তিনি এতোদিন দেশপ্রেমের নামে তিনি কার্যত অভিনয় করেছেন। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে পালিয়ে ভারতে গিয়ে তিনি দেশপ্রেম অভিনয়ের মুখোশ খুলে ফেলেছেন। একের পর এক বাংলাদেশ বিরোধী কথাবার্তা বলছেন এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিদেশীদের ভুলবার্তা দিচ্ছেন। শুধু তাই নয় তিনি হিন্দুত্ববাদী ভারতের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক ষড়যন্ত্র করছেন। বিভিন্ন রূপে বিশৃংখলা সৃষ্টি এবং তা বাস্তবায়নের চেষ্টায় মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এদিকে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা সেমিনার-সিম্পোজিয়ামে ব্যস্ত রয়েছেন। তারা প্রশাসনে পতিত হাসিনার রেখে যাওয়া ঢাল-তলোয়ার দিয়েই তাকে মোকাবিলার চেষ্টা করছেন।

বিজ্ঞাপন

ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার কার্যত হাসিনার আমলা, পুলিশ, গোয়েন্দাদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। হাসিনাপন্থী কর্মকর্তাদের কয়েকজনকে বাদ দিলেও এখনও বেশির ভাগ কর্মকর্তা আওয়ামী অনুসারী। পরিণতিতে একের পর এক বিশৃংখল পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটছে। এমনকি ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষ তথা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটছে। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে মিশে গিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভাংচুর, অস্থিরতা সৃষ্টি করছে; অথচ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কিছুই জানতে পারছে না? প্রফেসর জাহিদ উর রহমান বলেছেন, কয়েকটি ঘটনায় স্পষ্ট ঢাকায় পরিকল্পিতভাবে সংকট সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে। ঢাকাকে নানাভাবে অবরোধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কোনও কোনও মহল দেশকে জরুরী অবস্থা জারীর দিকে নিয়ে যাচ্ছে।

রাজধানী ঢাকায় চলছে চরম নৈরাজ্য। যখন তখন সংঘর্ষ বিক্ষোভ, ইচ্ছে হলেই রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। হুটহাট সংঘর্ষে প্রায়শই কোনও না কোনও রাস্তা বন্ধের ঘটনা ঘটছে। সব মিলিয়ে এসব ঘটনায় অচল হয়ে পড়েছে রাজধানী ঢাকার যান চলাচল। বিভিন্ন এলাকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় আটকে পড়ে দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে বহু মানুষকে। ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক পরিচয়ে শ্রমিক লীগের শত শত নেতাকর্মী রাস্তা অবরোধ করেছে; নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা পুরান ঢাকার সোহরাওয়ার্দী, কবি নজরুল কলেজ ও যাত্রাবাড়ির ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ছাত্রদের মধ্যে ঢুকে ঘোষণা দিয়ে যাত্রাবাড়ি-মৃধাবাড়িতে সংঘাত-ত্রিমুখি সংঘর্ষের মাধ্যমে গোটা এলাকাকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করে। ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে সংঘর্ষের ঘটনার পর আইনশৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী-ডেমরা এলাকায় ছয় প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। যাত্রাবাড়ির ওই রণক্ষেত্রের যারা ভুক্তভোগী তাদের অভিযোগ সাধারণ ছাত্রদের ভিতরে মিশে গিয়ে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষ বাঁধানোর সুযোগ পেলো কিভাবে? সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা, ডিবি, এসবি, এনএসআইসহ কয়েকটি গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে। তারা ‘ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষ’ সম্পর্কে কোনও তথ্য জানতে পারল না? নাকি তারা শেখ হাসিনার অনুগত হওয়ায় অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে ঝামেলা জিইয়ে রাখতে সঠিক তথ্য দিচ্ছেন না? বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনা রেজিমে বিএনপি ও জামায়াতের কয়েকজন নেতা হোটেলে খেতে গেলে, রাস্তার মোড়ে দাঁড়ালে এবং বিয়ে বাড়িতে একত্রিত হলে তাদের গ্রেফতার করা হতো। দাবি করা হতো, ষড়যন্ত্রের আগাম খবর পেয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। এতো করিৎকর্মা গোয়েন্দা সংস্থার ওই কর্মকর্তা কর্মচারীরা থাকার পরও ঘোষণা দিয়ে সংঘর্ষ করে ঢাকাকে অচল করে দেওয়া হয়। তাদের অবস্থা এমন যে হাসিনা রেজিমে একের পর এক নির্যাতনের শিকার হওয়া নিউ এইজ সম্পাদক নুরুল কবিরকে চিনতে পারেনি। তারা হাসিনা রেজিমের চেতনা ধরে রেখেই তাকে বিমানবন্দরে হয়রানি করা হয়।

গত কয়দিনে ঢাকায় পরিকল্পিতভাবে ঘটে যাওয়া কয়টি ঘটনার কথা উল্লেখ করি-

অটোরিকশাচালকদের আন্দোলন

ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর শেখ হাসিনা অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপাকে ফেলতে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টির লক্ষে গ্রাম থেকে গ্রামের আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের গরীব কর্মীদের ঢাকায় এসে রিকশা চালানোর পরামর্শ দেন। যাতে যে কোনও সময় হাসিনা ডাক দিলে তারা সরকারের রিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসেন। সারাদেশের শ্রমিক লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মী গ্রাম থেকে ঢাকায় এসে ব্যাটারি চালিত রিকশার চালক হয়ে যান। ঢাকা হয়ে উঠে রিকশার নগরী, যানজট ও দুর্ঘটনা বেড়ে যায়। ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট ৩ দিনের মধ্যে মহানগরের প্রধান সড়কে ব্যাটারি চালিত রিকশা চলাচল বন্ধ করার ঘোষণা দেয়। অতপর শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীরা ব্যাটারি চালিত রিকশার চালক বেশে প্রতিদিন ঢাকার রাস্তা বন্ধ করে অবরোধ করেন এবং যানবাহন ভাংচুর করেন। অথচ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধের আদেশের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের করে রাষ্ট্রপক্ষ। গতকাল ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী জানান, ঢাকা মহানগর এলাকায় তিনদিনের মধ্যে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল বন্ধের আদেশে স্থিতাবস্থা দিয়েছেন চেম্বার আদালত। আপিল বিভাগের চেম্বার জজ মো. রেজাউল হক এ আদেশ দেন। এর ফলে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচলে আর বাধা থাকল না।

ঘোষণা দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলা

যাত্রাবাড়ি এলাকা গতকাল যেন রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল। ঘোষণা পাল্টা ঘোষণা দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ হয়। সোমবার দুপুর ১টার দিকে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় মোল্লা কলেজের গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে হামলা, প্রতিষ্ঠানটির চেয়ার, কম্পিউটার-ল্যাপটপ ভাঙচুর করে কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজের শিক্ষার্থীরা। কলেজটির বিভিন্ন সামগ্রী ও সরঞ্জাম নিয়ে যেতে দেখা যায় তাদের। এ সময় এলাকাটি রণক্ষেত্রে রূপ নেয়। শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষে ৮ জন আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষে কলেজের আশপাশের সড়কগুলোতে সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাস্থলে আইনশৃংখলা বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য রয়েছেন। তারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন। এর আগে শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলা ও ভাঙচুর চালানোর প্রতিবাদে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে এ বিক্ষোভ করেন। তাদের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। পরে দুপর ১২টার পর তাদের একটা অংশ যাত্রাবাড়ীতে ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ অভিমুখে রওনা দেন।

উল্লেখ্য, এর আগে গত রোববার ভুল চিকিৎসায় অভিজিৎ হাওলাদার নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগের জের ধরে পুরান ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ এবং শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের শিক্ষার্থীরা। ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ থেকে চলতি বছর উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন অভিজিৎ হাওলাদার। তিনি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে গত সোমবার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) ছালেহ উদ্দিন বলেছেন, যাত্রাবাড়ীর মৃধাবাড়ি এলাকার ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজে পরিকল্পিতভাবে হামলা করা হয়েছে। পরিকল্পিতভাবে সন্ত্রাসীরা ছাত্রবেশে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছে। আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি করতে এই হামলা ও কোটি টাকার মালামাল লুটপাট হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে, মামলা হবে। প্রশ্ন হচ্ছে পূর্বপরিকল্পিত হামলা হলে আগাম সেটাকে ঠেকিয়ে দেওয়া হলো না কেন? আইনশৃংখলা বাহিনী কি আসলেই জানে না, নাকি তারাও অন্তর্বর্তী সরকারকে বিপাকে ফেলার নানামুখি এই ষড়যন্ত্রের অংশ? ছাত্র জনতা কোনটা ধরে নেবে?

শাহবাগে বাসভর্তি মানুষ

বিনা সুদে ঋণ দেওয়ার প্রলোভনে রাজধানীর শাহবাগে সারাদেশ থেকে মানুষ এনে জড়ো করা হয়। বিদেশে পাচার হওয়া বিপুল অর্থ ফেরত নিয়ে আসবেন ড. ইউনূস, সেই টাকায় বিনা সুদে এক লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত লোন দেওয়া হবে। বিনা সুদের সেই লোন পেতে আবেদন করতে হবে নির্ধারিত ফরমে। প্রাথমিকভাবে এক হাজার টাকা দিয়ে শাহবাগে আসতে হবে। যত বেশি টাকা দিয়ে রেজিস্ট্রেশন, তত বেশি মিলবে ঋণ। এমন প্রলোভনের ফাঁদে পড়ে আসেন নিরীহ মানুষ। তাদের হাতে ‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠনের লিফলেট। এতে সংগঠনের আহ্বায়ক আ ব ম মোস্তফা আমীনের ছবি ও পরিচয় দেওয়া আছে। এ ছাড়া সমাবেশের অনুমতি সম্বলিত ডিএমমি কমিশনারের ভুয়া চিঠিও তাদের কাছে পাওয়া গেছে।

‘অহিংস গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠন কয়েকদিন আগে শাহবাগে সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে সারাদেশের গ্রামগঞ্জ ঘুরে ঘুরে মানুষকে ঢাকায় একত্রিত করার চেষ্টা করেছে। তারা জনে জনে টাকা দিয়ে বাস ভাড়া করে গ্রাম-গঞ্জ থেকে হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় নিয়ে এলো। গ্রামের সহজ সরল মানুষকে বিনা সুদে ঋণ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে প্রতারিত করল। আর গোয়েন্দা সংস্থা কিছুই জানতে পারল না? ঢাকায় একদিকে বিভিন্ন সড়কে ব্যাটারি চালিত রিকশাচালকের নামে শ্রমিক লীগের নেতাকর্মীদের অবরোধ, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তিনটি কলেজের ছাত্রদের সঙ্গে মিশে ঘোষণা দিয়ে সংঘাত-সংঘর্ষ, শাহবাগে হাজার হাজার মানুষকে গ্রাম থেকে এনে একত্রিত করা, একটি গণমাধ্যম অফিসে আগের দিন গরু জবেহ করে পিকনিক ও পরের দিন প্রতিবাদে গণমিছিল; এতোগুলো ঘটনার ঠেকানোর লক্ষ্যে আইনশৃংখলা বাহিনীর কোনও প্রকার পূর্বপ্রস্তুতিও দেখা যায়নি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জানান, ফরওয়ার্ড পার্টি নামে একটি সংগঠনের প্রলোভনে পড়ে এই মানুষগুলো ঢাকায় এসেছে। খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল টিম নেতাগোছের সন্দেহভাজন ১৫ জনকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করেছে। কয়েকজন ভুক্তোভোগী বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা প্রকাশ্যে ঘুরে ঘুরে জনে জনে টাকা দিয়ে গ্রাম-গঞ্জ থেকে হাজার হাজার মানুষ ঢাকায় নিয়ে এলো। আর গোয়েন্দা সংস্থা কিছুই জানে না? কোনও প্রকার পূর্বপ্রস্তুতিও দেখলাম না! তারা কি আসলেই জানে না, নাকি তারাও এই ষড়যন্ত্রের অংশ? আমরা কোনটা ধরে নিব?

বুটেক্স-পলিটেকনিক সংঘর্ষ

২৪ নভেম্বর গভীর রাতে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অবে টেক্সটাইল (বুটেক্স) ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত অসংক্য শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

এমন আরও অনেক ঘটনার কথা উল্লেখ করা যায়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এসবের ভুক্তভোগী কারা? বাংলাদেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসের চরম ভুক্তভোগী সাধারণ জনগণ এবং নিম্ন আয়ের মানুষ। এবং তারাই আমাদের জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় অংশ। দ্রুত নৈরাজ্য ঠেকিয়ে সাধারণ মানুষদের রক্ষা করাই হোক অর্ন্তবর্তী সরকারের মুল লক্ষ্য।

লেখক: আইনজীবী ও কলাম লেখক

সারাবাংলা/এসবিডিই

দেশজুড়ে নৈরাজ্য

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর