Wednesday 11 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৫ বছর কারাদণ্ড বহাল রেখে সড়ক পরিবহন বিল পাস


১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২১:৫৪ | আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২১:৫৮
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

ঢাকা: কোনো ব্যক্তির বেপরোয়া ও অবহেলা জনিত গাড়ি চালানোর কারণে দূর্ঘটনা ঘটলে এবং সেই দূর্ঘটনায় কেউ আহত বা নিহত হলে সর্বোচ্চ ৫ বছর কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান বহাল রেখে সড়ক পরিবহন বিল-২০১৮ পাস হয়েছে।

বুধবার (১৯ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে বিলটি পাসের প্রস্তাব করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। এর আগে ১৩ই সেপ্টেম্বর তিনি সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন। পরে বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর বিলের রিপোর্ট উত্থাপন করা হয়।

পাস হওয়া বিলে দূর্ঘটনা সংক্রান্ত অপরাধে বলা হয়েছে, এই আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন মোটরযান চালনাজনিত কোনো দূর্ঘটনায় গুরুতরভাবে কোনো ব্যক্তি আহত হইলে বা তাহার প্রাণহানি ঘটিলে তৎসংক্রান্ত অপরাদসমূহ পেনাল কোড ১৮৬০ (এ্যাক্ট নং এক্সএলভি অফ ১৮৬০) এর এতদসংশ্লিষ্ট বিধান অনুযায়ি অপরাধ বলিয়া গণ্য হইবে। শাস্তির বিষয়ে বলা হয়েছে, ‘তবে শর্ত থাকে যে, ফৌজদারি কার্যবিধিতে যাহাই থাকুক না কেন, কোন ব্যক্তি বেপরোয়া ও অবহেলাজনিত মোটরযান চালানোর কারণে সংঘটিত দুর্ঘটনায় কোন ব্যক্তি গুরুতর ভাবে আহত হইলে বা তাহার প্রাণহানি ঘটলে উক্ত ব্যক্তি অনধিক ৫ বৎসরের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন’।

বিজ্ঞাপন

বিলে বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালিয়ে কাউকে আহত করলে তিন বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। আর ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ট্রাফিক আইন অমান্য করলে পয়েন্ট কাটার ব্যবস্থাও থাকবে আইনে। নির্ধারিত পয়েন্টের নিচে গেলে লাইসেন্স বাতিল হয়ে যাবে। চালককে নতুন করে আবার লাইসেন্স নিতে হবে।

বিলে ব্যক্তিগত গাড়ি চালনার জন্য চালকের বয়স আগের মতোই অন্তত ১৮ বছর রাখা হয়েছে। তবে পেশাদার চালকদের বয়স হতে হবে কমপক্ষে ২১ বছর। সংসদে উত্থাপিত বিলে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য চালকের কমপক্ষে অষ্টম শ্রেণী পাসের শর্ত রাখা হয়েছে। আগের আইনে ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য শিক্ষাগত যোগ্যতার কোন বাধ্যবাধকতা ছিলো না। নতুন আইনের সহকারী হতেও শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। সহকারীর ৫ম শ্রেণী পাসের সার্টিফিকেট থাকতে হবে। আগের অধ্যাদেশে সহকারীদের লাইসেন্সের কথা থাকলেও তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার শর্ত ছিলো না।

এছাড়া সহকারী হতে বাধ্যতামূলকভাবে লাইসেন্সের বিধানও থাকছে। বিলে চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকলে অনধিক ছয় মাসের জেল বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। সহকারীরও শাস্তির বিধান যুক্ত করা হয়েছে বিলে। চালকের সহকারীর লাইসেন্স না থাকলে এক মাসের জেল বা ২৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। বিলের বিধান অনুযায়ী গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না চালক। এই বিধান অমান্য করলে এক মাসের কারাদন্ড বা পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হবে।

এছাড়া ছয় মাসের কারাদন্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে- এমন অপরাধের ক্ষেত্রে চালককে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতারের ক্ষমতা দেয়া হয়েছে পুলিশকে। নতুন আইনের বিধি অমান্য করলে পয়েন্ট কাটার বিধান রাখা হয়েছে বিলে। বিলের বিধান অনুযায়ী লাইসেন্সে থাকবে মোট ১২ পয়েন্ট। বিভিন্ন বিধি অমান্যে কাটা যাবে এই পয়েন্ট। পয়েন্ট শূন্য হলে বাতিল হবে চালকের লাইসেন্স। এরপর চালকে নতুন করে লাইসেন্স নিতে হবে। উল্লেখ্য, দীর্ঘ এক বছর ঝুলে থাকার পর আলোচিত এই নতুন সড়ক পরিবহন আইনটি গত ৬ আগষ্ট মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত হয়। রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের ব্যাপক আন্দোলনের মুখে সরকার ওই আইনের খসড়া মন্ত্রীসভায় উত্থাপন করে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/এমএস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর