প্রত্যাবর্তনে আনন্দিত ফরহাদ রেজা
২৮ এপ্রিল ২০১৯ ১৯:০১
বাংলাদেশ ক্রিকেটের পরিচালনা বিভাগ থেকে গতকাল রাতে একটি ফোন পেলেন ফরহাদ রেজা। তিনি তখন দেশের বাড়ি রাজশাহীতে। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ব্যস্ততা সেরে পরিবারের সঙ্গে ছুটি কাটাচ্ছিলেন। যা হোক, ওই ফোনে তাকে নির্দেশ দেওয়া হলো আগামীকাল থেকে তুমি জাতীয় দলের সঙ্গে অনুশীলন করবে।
ফোন পেয়ে রাতেই ঢাকার ট্রেন ধরলেন ফরহাদ। বাবা রেলওয়েতে চাকুরি করেন বিধায় কোনো জটিলতা ছাড়াই একটি কেবিন পেয়েছিলেন। তাই ভ্রমনক্লান্তি তাকে ততটা স্পর্শ করেনি। ভোর সাড়ে ৫টায় ঢাকায় নেমে কোনোরকম বিশ্রাম নিয়ে সকাল সাড়ে ৮টা থেকে মাশরাফিদের সঙ্গে অনুশীলন শুরু করলেন।
প্রায় আট বছর পর জাতীয় দলের অনুশীলনে তাকে পেয়ে মাশরাফি, তামিম, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক অভিনন্দন জানাতে কার্পণ্য দেখাননি। অনুশীলন চলছে এমতাবস্থায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হোম অব ক্রিকেটে খবর চাউড় হলো, আয়ারল্যান্ড সিরিজে তিনি দলের সঙ্গে যাচ্ছেন। সঙ্গে তাসকিন আহমেদও আছেন। হেড কোচ স্টিভ রোডসের চাওয়াতেই এই দুজনকে দলে অন্তর্ভুক্ত করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট ম্যানেজমেন্ট।
ফলে প্রায় ৮ বছর পর আবার লাল সবুজের চৌহর্দিতে ফিরলেন এই অলরাউন্ডার। সংবাদ মাধ্যমের সামনে তাই বহিঃপ্রকাশ ঘটালেন প্রত্যাবর্তনের আনন্দের, ‘খুব ভালো লাগছে। একজন প্লেয়ারের স্বপ্ন থাকে, জাতীয় দলে ফেরার। আশা করেছিলাম ২৩ সদস্যের দলে থাকব। তারপর যখন বাদ পড়লাম একটুতো কষ্ট লেগেছে যে এরকম পারফর্ম করলাম তারপরেও বাদ…। অনেকেই বিশ্বাস করেছে যে আমার সুযোগ আসবে। তার মধ্যে দুই জন মানুষ সব সময় আমাকে মানসিকভাবে বুস্ট আপ করেছে যে আপসেট হবে না, তুমি যে কোনো সময় দলে আসবে। এর মধ্যে একজন আমার আম্মা, আর একজনের নাম বলব না।’
কে সেই জন? প্রশ্নটা আপাতত তোলা থাক। ওয়ানডে ফরম্যাটে ফরহাদ রেজা সব শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন ২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর, সফরকারী পাকিস্তানের বিপক্ষে। তার মানে প্রায় অর্ধযুগেরও বেশি সময় তিনি জাতীয় দলের বাইরে। লম্বা এই সময়টিতে বাংলাদেশ ক্রিকেটের অনেক কিছুই বদলেছে। প্লেয়ার্স, ড্রেসিংরুমের পরিবেশ, টিম কম্বিনেশন; আরো কত কী।
এমন বদলে যাওয়া একটি দলে এসে আয়ারল্যান্ডের মতো কন্ডিশনে নিজেকে কতটুকু প্রমাণ করতে পারবেন? সংবাদ মাধ্যমের করা এমন প্রশ্নে তার জবাব হলো, ‘আমাদের প্রতিদিনই চ্যালেঞ্জ থাকে। আমি যেখানে খেলি সেখানে সবসময় চ্যালেঞ্জ থাকে। প্রতিদিনই পরীক্ষা দিতে হয়। যেভাবে করে আসছি ওভাবে যদি করতে পারি দেখা যাক কী হয়?’
ঘরোয়া ক্রিকেটে গেল দুই বছর নিয়মিত দু’হাত ভরে দিচ্ছেন ফরহাদ রেজা। এনসিএল, বিসিএল, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ এমনকি বিপিএলেও তার বিজয় নিশান পতপত করে উড়ছে। ঠিক এমন একটি সময় জাতীয় দলে ফিরে সেখানেও দু’হাত ভরে দেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে রাখলেন।
সবশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ফরহাদ রেজা জানালেন, ‘অবশ্যই সেরাটি দেওয়ার সময় এবং আমি দেব। আপনি দেখেন গত বছর অভারঅল টুর্নামেন্টে ৬৭টি উইকেট পেয়েছি, এবার পেয়েছি ১০০টা। আমি অনেক কিছু বুঝেছি এখন, যেটা আগে বুঝতাম না। ফিল্ডিং সাজাতাম একদিকে, বল পড়ত আরেকদিকে। এখন বুঝতে পারি। কাকে কি করলে কি হবে?’
শুভকামনা ফরহাদ রেজা!
সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি
** শেষ বেলায় স্কোয়াডে তাসকিন, ফরহাদ রেজা