Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কোচ আসে কোচ যায়


১১ জুলাই ২০১৯ ১৭:৫২

কোচ আসে, কোচ যায়। উত্তম যিনি ধরে রাখতে পারি না ক্রিকেটের আঙিনায়! কোচদের আসা যাওয়া যেন বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটি স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের জন্য বিলাসিতারও বটে। যেখানে শুধু ৩০ হাজার ডলার কন্সালটেন্সি ফি দিয়ে কোচ খোঁজা হয়।

কোচ মেলে। আবার বছর না ঘুরতেই বিদায় দিয়ে দেওয়া হয়! আবারও নিশ্চয়ই গ্যারি কারস্টেনকে ৩০ হাজার ডলার দেওয়া হবে শুধু খুঁজে দেওয়া বাবদ। নতুন কেউ আবার আসবে, আবার… না, থাক।

বিজ্ঞাপন

এক বছরের সপ্তাহ খানেক বেশি হবে ইংলিশ কোচ স্টিভ রোডস বাংলাদেশ দলের দায়িত্বে ছিলেন। এরপর মোটামুটি তাকে ঝেঁটেই বিদায় দেওয়া হলো। যদিও বিসিবি সিইও নিজাউদ্দিন চৌধুরী সুজন দারুণ একটি টার্ম ব্যবহার করেছেন ‘মিউচুয়াল সেপারেশন’। যার তর্জমা করলে দাঁড়ায় পারস্পারিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে একে অন্যের সঙ্গে সম্পর্কের ইতি টানা।

অথচ স্টিভের সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চুক্তি ছিল ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পর্যন্ত। মাঝে নাকি একটি ধারা রাখা হয়েছিল। দলের পারফরম্যান্স উর্ধ্বগামী হলে তবেই তিনি থাকবেন। তিনি সেটা করে দেখাতে পারেননি বলেই হয়তো অকালেই টাইগারদের ডেরায় তার পেশাদারী জীবন অক্কা পেয়েছে।
কিন্তু তার এক বছরের সংক্ষিপ্ত অধ্যায়ের পরিসংখ্যান কিন্তু সে কথা বলছে না। স্টিভের অধীনে বাংলাদেশ টেস্ট খেলেছে ৮টি, যেখানে ৩টিতে জয় ও ৫টিতে হার। ৩০টি ওয়ানডে থেকে ১৭টিতে জয়, ১৩টিতে হার। আর ৬টি টি-টোয়েন্টিতে ৩টি করে জয় ও হার। যা কী না আগের তিন ডাকসাইটে কোচ; ডেভ হোয়াটমোর, জিমি সিডন্স ও হাথুরু সিংহের সঙ্গে তুলনা করলে ফলাফলের বিবেচনায় ভালো।

বিজ্ঞাপন

হোয়াটমোর যুগে (২০০৩-২০০৭) টেস্টে ২৯ ম্যাচে বাংলাদেশের জয় ১টিতে। হার ২৪টি। আর ড্র কিংবা পরিত্যক্ত ৪টি। অবশ্য সেই আমল আর এই আমলের মধ্যে আকাশ-পাতাল পার্থক্য। কেননা সাদা পোশাকে তখন মাত্রই বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্ম হয়েছে। কিন্তু ওয়ানডেতে? ৮৯ ম্যাচের ৩৩টিতে জয় আর হার ৫৬টিতে। তবে ১টি টি-টোয়েন্টি থেকে শিষ্যরা প্রত্যাশিত জয়টি তুলে নিতে পেরেছিল।

সিডন্স যুগে (২০০৭-২০১১) ১৯ টেস্টে ২টি জয়, ১৬টি হার ও ১টি ড্র। রঙিন পোশাকে ৮৪ ওয়ানডে থেকে ৩১টি জয়, ৫৩টি হার। আর ১৫ টি-টোয়েন্টিতে ২টি জয় ও ১৩টি হার।

এবার আসুন অন্যতম সফল যিনি সেই হাথুরু সিংহের অধ্যায় দেখে নেই। ২০১৪-২০১৭, এই তিন বছরে ২১ টেস্টে শিষ্যরা জয়ের দেখা পেয়েছে ৬টিতে, হেরেছে ১১টিতে, ড্র হয়েছে ৪টি। ৫২টি ওয়ানডে থেকে ২৫টি জয়, ২৩টি হার ও ৪টি পরিত্যক্ত বা ড্র। আর ২৮টি টি-টোয়েন্টি থেকে জয় ১০টি, হার ১৭টি, ড্র কিংবা পরিত্যক্ত ১টি।

সামগ্রিক বিবেচনায় স্টিভকে খুব খারাপ বলার উপায় নেই। তবে বিশ্বকাপে দলের শ্রীহীন পারফরম্যান্সই তার কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বলা বাহুল্যই হবে তার এই ছোট অধ্যায়েই কিন্তু বহুজাতিক কোনো টুর্নামেন্টে প্রথম শিরোপার স্বাদ পেয়েছে লাল সবুজের দল, এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলেছে এবং বিশ্বকাপের ইতিহাসে সবচাইতে সেরা খেলা উপহার দিয়েছে।

এখন দেখার বিষয় হলো, রোডসের উত্তরসূরি হয়ে কে আসেন। কেননা রোডস যার উত্তরসূরি হয়ে এসেছিলেন সেই হাথুরুর সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেটে বোর্ডের চুক্তি ছিল এই বিশ্বকাপ পর্যন্ত। চুক্তি শেষের প্রায় দেড় বছর আগে অর্থাৎ ২০১৭ সালের অক্টোবরে বিসিবির সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করেছেন। তাও স্রেফ একটি মেইল দিয়ে।

সাবেক পেস বোলিং কোচ শেইন জার্গেনসেনের সঙ্গেও দীর্ঘ মেয়াদে চুক্তিতে যায়নি বাংলাদেশ ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক এই সংস্থাটি। অন্তবর্তীকালীন কোচ হিসেবে বিসিবির সঙ্গে দুই বছর ছিলেন এই অজি কোচ।

জার্গেনসেনের পূর্বসূরি রিচার্ড পাইবাসের মেয়াদ আরো কম। ২০১২ সালের মে তে ইংলিশ বংশোদ্ভুত পাইবাস কোচ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর স্বপদে বহাল ছিলেন ৪ মাস! ওই বছর শ্রীলঙ্কায় অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের কাছে হেরে প্রথম রাউন্ডে বিধ্বস্ত হওয়ায় পাইবাস বিসিবিকে জানিয়ে দেন তিনি আর থাকছেন না।

পাইবাসের পূর্বসূরি হিসেবে যিনি ছিলেন সেই স্টুয়ার্ট ল’র অধ্যায়ও ছিল মাত্র ১ বছর (২০১১-২০১২)!

সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি

কোচ বিসিবি স্টিভ রোডস

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর