রাহি একদিন ঠিকই দেখিয়ে দেবেন
১৬ জুলাই ২০১৯ ১৮:০৯
বিশ্বকাপ শেষে কি বলা যায় আবু জায়েদ রাহিকে? দুর্ভাগা, নাকি সুবিধা বঞ্চিত? না, সুবিধা বঞ্চিতদের কাতারে তাকে ফেলা ঠিক হবে না। সেটাই যদি হতেন ক্যারিয়ারের ঊষা লগ্নেই বিশ্বযুদ্ধের কন্টিনজেন্টে ডাক পেতেন না। তবে ভাগ্যবঞ্চিত শব্দটাই বোধ হয় অধিক যুক্তিযুক্ত। কেননা বিশ্বকাপ দলে জায়গা পেয়ে একটি ম্যাচেও লাল সবুজের একাদশে তাকে দেখা যায়নি।
এবার শ্রীলঙ্কায় তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজ খেলতে উড়াল দেবে মাশরাফির দল। ১৪ সদস্যের দলে জায়গা হয়নি রাহির। গত ২৮ মে কার্ডিফে ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচটিই ছিল তার শেষ। মূল পর্বে এসে থেকেছেন মাঠের বাইরে।
তার পেছনেও সুস্পষ্ট কারণ আছে। দ্বিতীয় পেসার মোস্তাফিজুর রহমান অটোমেটিক চয়েস। তৃতীয় পেসার হিসেবে খেলা মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ছিলেন স্বমহিমায় ভাস্বর। তরুণ এই পেস অলরাউন্ডার তো চমকেই দিয়েছেন। বিশ্বকাপের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত লাইন লেংথের চুলচেরা বিচারে ছিলেন দারুণ ধারাবাহিক। উইকেটের বিবেচনায়ও অবশ্যই। সবচেয়ে ভালো দিক ছিল, অধিনায়কের আস্থার মূর্ত প্রতীক হয়ে উঠতে পেরেছিলেন। তবে একটু খরুচে ছিলেন এই যা। কিন্তু তারপরেও ওভাল থেকে লর্ডস পর্যন্ত নিজেকে প্রমাণ করে গেছেন দারুণ বোলিং শৈলীতে।
কন্ডিশন ও টিম কম্বিনেশন বিবেচনায় চতুর্থ পেসার হিসেবে খেলা অভিজ্ঞ রুবেল হোসেন সাইফউদ্দিনের মতো অবারিত সুযোগ না পেলেও যে ম্যাচে একাদশে সুযোগ পেয়েছেন নিজেকে মেলে ধরার আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন। তিন ম্যাচ থেকে উইকেট পেয়েছেন ৩টি। কিন্তু রানের লাগাম টেনে ধরতে পারেননি। তবুও তার ওপরেই আস্থা রেখেছিল টাইগার টিম ম্যানেজমেন্ট। আখেরে অভিজ্ঞতার একটা মূল্য তো আছে, তাই না?
হ্যাঁ, সেই জায়গাটিতেই হয়তো বঞ্চিত টাইগার তরুণ পেসার আবু যায়েদ চৌধুরী রাহি। আশার কথা হলো, বাস্তবতাটি তিনি অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছেন। তবে ঘূর্ণাক্ষরেও তার মনে হয়নি ইংলিশ কন্ডিশনের যোগ্য তিনি নন। রাহি জানিয়েছেন, ‘আমার এমন মনে হয়নি যে এই উইকেটে ভালো করার যোগ্য আমি নই। আমার থেকে হয়তো ওরা ভালো ছিল। সাইফউদ্দিন ভালো মৌসুম কাটিয়েছে। মোস্তাফিজ ভালো করেছে। রুবেল ভাই ভারতের সঙ্গে ভালো বল করেছেন। তবে, নিজেকে কিছুটা ভাগ্যাহত মনে হয়।’
দলের সঙ্গে ছিলেন সেই মে মাসে আয়ারল্যান্ড সফর থেকেই। ত্রিদেশীয় সিরিজে চার ম্যাচের দুটিতে খেলে উইকেট নিয়েছেন ৫টি। ১৩ মে উইন্ডিজদের বিরুদ্ধে উইকেটশূন্য থাকলেও এক দিন বিরতিতে ৫ আইরিশকে প্যাভিলনের পথ দেখিয়ে নির্বাচকদের আস্থার প্রতিদান দিয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও বিশ্বকাপে জায়গা মিলল না! নিশ্চয়ই এতে করে তার তরুণ মনে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে। সেখানে কি দিয়ে প্রলেপ দেবেন? নিশ্চয়ই ক্ষুরধার পারফরম্যান্স দিয়ে। কথার তুবরি রাহির কোনো কালেই ছোটেনি। কিন্তু স্বল্প কথনে যা বোঝানোর বুঝিয়ে দিলেন।
রাহি জানান, ‘যেহেতু বিশ্বকাপ থেকে অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমার মনে হয় আমি পারব। এটা শক্তি যোগাচ্ছে। আবার আন্তর্জাতিক ম্যাচে সুযোগ পেলে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করব।’
এই বিশ্বকাপ থেকে কী নিয়ে এসেছেন রাহি? এমন প্রশ্নের জবাবে ২৫ বছর বয়সী এই ডানহাতি মিডিয়াম ফাস্ট বোলার জানিয়েছিলেন, ‘আমার মনে হয় এই বিশ্বকাপ থেকে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পেরেছি। বিশ্বকাপ ক্রিকেটকে খুব কাছ দেখা হয়েছে। ভারতের বোলারদের দেখেছি। বুমরাহ বলেন শামি বলেন আরও অনেককেই দেখেছি। শামির সাথে কথা হয়েছে। কষ্ট করলে হয়তোবা ওদের কাছে যেতে পারব।’
সারাবাংলা/এমআরএফ/এমআরপি