কোস্টারিকাকে বিধ্বস্ত করে প্রত্যাবর্তনের বার্তা দিল স্পেন
২৪ নভেম্বর ২০২২ ০০:০০
নিজেদের ইতিহাস নতুন করে গড়ল স্প্যানিশরা। এর আগে কখনোই বিশ্বকাপ কিংবা মহাদেশীয় টুর্নামেন্টে এই রেকর্ড গড়তে পারেনি। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপে এসে কোস্টারিকার জালে গুনে গুনে ৭বার বল জড়াল লুইস এনরিকের দল। আর তাতেই লেখা হলো নতুন ইতিহাস। এমনকি ২০১০ সালের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন স্পেন দল গোটা টুর্নামেন্টেই করেছিল মোটে ৮টি গোল। সেখানে এবার নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ৭ গোল করে ফেলল স্প্যানিশরা।
বিশ্বকাপের দল ঘোষণার পর একাংশ স্প্যানিশ সমর্থকের রোষানলে পড়েছিলেন কোচ লুইস এনরিকে। তবে এবার মাঠের পারফরম্যান্স দিয়ে সবার মন জয় করে নিয়েছে লুইস এনরিকের স্পেন। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে কোস্টারিকাকে ৭-০ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে উড়ন্ত সূচনা করেছে লা রোজারা। স্পেনের হয়ে জোড়া গোল করেন ফেররান তোরেস। এছাড়া একটি করে গোল করেন গাভি, মার্কো অ্যাসেন্সিও, কার্লোস সলার, আলভারো মোরাতা এবং দানি অলমো।
এদিন ১৯ বছর ৪১ দিন বয়সে স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপে অভিষেক করে সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় ছিলেন সেস্ক ফ্যাব্রিগাস। তবে কোস্টারিকার বিপক্ষে তাকে ছাপিয়ে গেলেন দুইজন। প্রথমে শুরুর একাদশে থেকে গাভি ১৮ বছর ১১০ দিন বয়সে সেই রেকর্ড ভাঙেন। এরপর বালদে ১৯ বছর ৩৬ দিন বয়সে মাঠে নেমে ফ্যাব্রিগাসের সেই রেকর্ড ভাঙেন।
কেবল বিশ্বকাপে অভিষেক করেই রেকর্ড গড়েননি গাভি। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপের তৃতীয় সর্বকনিষ্ঠ খেলোয়াড় হিসেবে বিশ্বকাপে গোল করে রেকর্ড গড়েছেন। বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ গোলদাতা কিংবদন্তি পেলে ১৭ বছর ২৪১ দিনে। দ্বিতীয় স্থানে মেক্সিকোর ম্যানুয়েল রোসাস ১৮ বছর ৯৩ দিন। আর কোস্টারিকার বিপক্ষে ২০২২ বিশ্বকাপে গোল করে এই তালিকায় তিনে উঠে এসেছেন গাভি।
ম্যাচের শুরু থেকেই কোস্টারিকার ওপর চড়াও হয়ে খেলতে থাকে স্পেন। মধ্যমাঠের নিয়ন্ত্রণ রেখে দুর্দান্ত শুরু করে স্প্যানিশরা। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলতে থাকা স্প্যানিশদের গোল পেতে অপেক্ষা মাত্র ১১ মিনিটের। ডি বক্সের সামনে থেকে চিপ করে বল ভেতরে পাঠিয়ে দেন গাভি তবে সেই বল কোস্টারিকার রক্ষণে বাধা পেয়ে আসে দানি অলমোর কাছে। সেখান থেকে গোল করে স্প্যানিশদের এগিয়ে নেন অলমো। বিশ্বকাপে এটি ছিল স্পেনের ১০০তম গোল।
এরপরেই ধ্বংসযজ্ঞে মাতে স্প্যানিশরা। প্রথম গোলের ১০ মিনিট পরে স্কোরশিটে নাম তোলেন মার্কো অ্যাসেন্সিও। বাঁ দিক থেকে জর্দি আলবা দারুণ এক ক্রস করেন ডি বক্সের ভেতর আর বক্সের ভেতরে জায়গা করে নিয়ে বাঁ পায়ের টোকায় বল জালে জড়ান অ্যাসেন্সিও। ঠিক মিনিট দশেক পরে ডি বক্সের ভেতর ফাউলের শিকার হন আলবা। আর তাতেই পেনাল্টি পায় স্পেন। স্পটকিক থেকে ব্যবধান ৩-০ করেন ফেররান তোরেস। প্রথমার্ধে তিন গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্পেন।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরেও একই গতিতে খেলতে থাকে স্প্যানিশরা। দারুণ আক্রমণে কোস্টারিকার রক্ষণকে ছিন্নভিন্ন করে ফেলে পেদ্রি, গাভি, অ্যাসেন্সিও, তোরেসরা। দ্বিতীয়ার্ধের ৯ মিনিটের মাথায় চতুর্থ গোলের দেখা পায় স্পেন। কোস্টারিকার রক্ষণ সহজ বল ক্লিয়ার করতে ব্যর্থ হলে গোলরক্ষক কেইলর নাভাসকে অসহায় বানিয়ে দারুণ এক গোল করেন ফেররান তোরেস। এতেই লা রোজারা এগিয়ে যায় ৪-০ গোলের ব্যবধানে।
জোড়া গোল করার পরপরই তাকে মাঠ থেকে তুলে নেন লুইস এনরিকে। জোড়া পরিবর্তন আনেন দলে। ফেররান তোরেসের বদলে আলভারো মোরারা, পেদ্রির বদলে কার্লোস সলার। ৬৪তম মিনিটে সার্জিও বুস্কেকেটসকে তুলে কোকে আর জর্দি আলবাকে তুলে অ্যালেক্স বালদেকে মাঠে নামান স্প্যানিশ কোচ। আর এরপরেই ঘুরে যায় খেলার গতি।
শেষ ১৬ মিনিটে আরও ৩ গোল করে নিজেদের ইতিহাসে বিশ্বকাপের সবচেয়ে বড় জয় পায় স্প্যানিশরা। ৭৪তম মিনিটে বিশ্বকাপের ইতিহাসে তৃতীয় সর্বকনিষ্ঠ ফুটবলার হিসেবে গোল করেন গাভি। সেই গোলের যোগানদাতা ছিলেন আলভারো মোরাতা। এরপর নির্ধারিত ৯০ মিনিটের পরে আরও দুই গোল করে লা রোজা ব্ল্যাঙ্কোরা। ৯০তম মিনিটে কার্লোস সলার আর যোগ করা অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে আলভারো মোরাতা গোল করলে ৭-০ ব্যবধানের বিশাল জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে স্পেন।
সারাবাংলা/এসএস
কাতার বিশ্বকাপ ফুটবল বিশ্বকাপ ফুটবল বিশ্বকাপ ২০২২ স্পেন বনাম কোস্টারিকা