‘গণ্ডি’: প্রবাদ ভেঙে এগিয়ে যাবার সিনেমা
২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৭:২০
সিনেমা ‘গণ্ডি’-যতো না বয়সের, তার চেয়ে বেশি মানসিকতার। বেশি বয়সের একাকিত্ব, নির্দিষ্ট উঠোন, ঘর-বাড়ি, দরজা-জানালা এবং মানুষ। কেন? এর বাইরে নয় কেন? কেন বেশি বয়সে নয় নতুন বন্ধুত্ব? কেন নয় নতুন গল্প, নতুন উচ্ছ্বাস, ভাগাভাগি?
কারণ মানসিকতার গণ্ডি। সন্তান-পরিজন যখন নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত, কাজ নিয়ে ছুটছেন নিরন্তর, তখন একজন বয়স্ক মানুষ সম্পূর্ণ একা। তাদের স্বাধীনতা কোথায়?
সেই প্রশ্নই তুলবে গণ্ডি, ছুঁয়ে যেতে চাইবে একাকিত্বের ব্যাথা। ভেঙে দিতে চাইবে বয়স্ক নারী-পুরুষদের জীবনের পরিচিত প্রবাদ।
রোববার (১ সেপ্টেম্বর) ‘গণ্ডি’ সিনেমার সংশ্লিষ্টরা আয়োজন করেন ‘গণ্ডি সন্ধ্যা’ নামের অনুষ্ঠান। সেখানে সিনেমার অভিনয়শিল্পীরা তাদের মতামত এবং অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করে নেন। ছবির পরিচালক ফাখরুল আরেফীন খানের উপস্থাপনায় আয়োজনে কথা বলেন অভিনয়শিল্পী সুবর্ণা মুস্তাফা, সব্যসাচী চক্রবর্তী। ছিলেন মাজনুন মিজান, অপর্ণা ঘোষসহ অনেকে।
আরও পড়ুন : নয় বছর পর ফিকশনে মেজবাউর রহমান সুমন, এবার চলচ্চিত্র
প্রথমেই কথা বলতে আসেন অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা। মানসিক গণ্ডি পেরিয়ে যাবার বিষয়টি তিনি তুলে ধরেছেন অভিনয়ের মাধ্যমে। সুবর্ণা বলেন, ‘গণ্ডি পেরিয়ে যাবার জন্য আমাদের যে প্রয়াস, সেটি দেখতে হলে যেতে হবে। আর তা না হলে আমরা গণ্ডিতেই পড়ে থাকব।’
এই ছবির গল্প শুনেই অভিনয়ের জন্য রাজি হয়ে গিয়েছিলেন সুবর্ণা মুস্তাফা। আর যখন শুনেছেন যে ছবিতে অভিনয়ের জন্য রাজি হয়েছেন কলকাতার জনপ্রিয় অভিনেতা সব্যসাচি চক্রবর্তী, তখন একদম সোনায় সোহাগা অবস্থা।
এসব কথা শেষ হওয়ার পর মঞ্চে আসেন সব্যসাচী চক্রবর্তী। বাংলাদেশে তিনি ‘ফেলুদা’ নামেও খ্যাত।
ভালো শিল্পী হতে গেলে নাকি ভালো মানুষ হতে হয়। তেমনি তিনি। কথার মধ্যে সে বিনয় স্পষ্ট। মানুষের ইচ্ছা-স্পৃহা, সততা দেখে তিনি মিশে যেতে পারেন যে কারো সঙ্গে। যেমন মিশে গিয়েছেন পরিচালক ফাখরুল আরেফীনের সঙ্গেও। সহজেই রাজি হয়ে গেছেন সিনেমায় অভিনয় করতে।
তিনিও কথার এক ফাঁকে মনে করিয়ে দিলেন, গণ্ডি পেরিয়ে আমরা যদি হলে গিয়ে সিনেমাটা না দেখতে পারি, তাহলে পরে আর সিনেমা নির্মাণে উৎসাহি হবেন না প্রযোজক।
সব্যসাচী বলেন, ‘গণ্ডি এমন এক গল্পের সিনেমা, যেখানে অনেক কিছু না ভেবেই যুক্ত হওয়া যায়। এই সিনেমায় যুক্ত হতে পেরে বরং আমি অনেক ভাগ্যবান, কারণ আমার মতো চেহারার মানুষ যে মূল চরিত্রে অভিনয় করবে, সেটাই ভাবতে পারি না।’
ছবিতে সুবর্ণা ও সব্যসাচীকে নেয়ার পর পরিচালকের খাটতে হয়েছে আরও বেশি। কারণ এই দুই অভিজ্ঞ অভিনয়শিল্পীকে কীভাবে ক্যামেরায় বন্দি করলে সবচেয়ে ভালো হবে, সেই পরিকল্পনাতেই গিয়েছে অনেকটা সময়। সিনেমা নিয়ে পরিচালকের বক্তব্য বেশ সহজ ও সোজা। ফাখরুল আরেফীন বলেন, ‘গণ্ডি একটি মজার প্রেমের ছবি, সঙ্গে রয়েছে কমেডি। তবে এই সিনেমার দর্শনে রয়েছে মানবিকতার চিরন্তন বাণী।
দুই বয়স্ক মানুষ বাড়িতে একা। তাদের ছেলেমেয়েরা বিদেশে। তাদের মধ্যে আলাপ জমে। দেখা হয় রোজ। কিছু প্রেমাস্পর্শ। নিজের সিদ্ধান্তে তারা বাঁচতে চায়। কী সেই সিদ্ধান্ত? কেন সিদ্ধান্তের বিরোধী পক্ষ তৈরি হয়? এই নিয়েই চিত্রনাট্য।
৮ সেপ্টেম্বর অভিনেতা সব্যসাচী চক্রবর্তীর জন্মদিন। সে উপলক্ষে আয়োজনে ছিল অগ্রিম জন্মদিন উদযাপন
১২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় চলবে সিনেমার শুটিং। ২০২০ সালের প্রথম দিকেই ছবিটি মুক্তির পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
ছবি: আশীষ সেনগুপ্ত
আরও পড়ুন :
. ভারতে বিটিভি সম্প্রচার উদ্বোধন
. মৃত্যুবাষির্কীতে বাবার গান গাইবে দুই পুত্র
. টিআরপি’র দৌড়ে এগিয়ে থাকা ঈদের নাটক