ঢাকা: আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সমীকরণের ডামাডোলে বড় ধরনের সংকটে পড়েছে জুলাই অভ্যুত্থানের নেতাদের হাত ধরে গঠিত দল ‘জাতীয় নাগরিক পার্টি’ (এনসিপি)। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে আসন সমঝোতা ও নির্বাচনি জোট গঠনের প্রক্রিয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নারী নেত্রী ও যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাজনূভা জাবীন পদত্যাগ করেছেন।
রোববার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক দীর্ঘ পোস্টে দল ছাড়ার ঘোষণা দেন তাজনূভা। একইসঙ্গে তিনি ঢাকা-১৭ আসন থেকে তার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে তিনি অংশ নিচ্ছেন না। এর আগে, শনিবার (২৭ ডিসেম্বর) দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারাও পদত্যাগ করেন।
তাজনূভা জাবীন তার পদত্যাগের কারণ হিসেবে আদর্শের চেয়েও দলের ভেতরের ‘অবিশ্বাস’ এবং ‘অগণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া’কে দায়ী করেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, জামায়াতের সঙ্গে জোট করার বিষয়টি সুনিপুণ পরিকল্পনার মাধ্যমে করা হয়েছে এবং দলের ত্যাগী নেতাদের অন্ধকারে রাখা হয়েছে।
ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, “ভেবেছিলাম জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসার পর পদত্যাগ দেবো। কিন্তু গতকাল নিশ্চিত হয়েছি এই জোটে সীল পড়েছে। আমার পদত্যাগের কারণ জোটের চেয়েও বেশি হলো যে প্রক্রিয়ায় জোটটি হয়েছে। অবিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে সংগঠন চলতে পারে না।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, সারাদেশে ১২৫ জন প্রার্থীকে মনোনয়নের ডাক দিয়ে শেষ মুহূর্তে মাত্র ৩০টি আসনের সমঝোতায় অন্যদের বসিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তটি ছিল ষড়যন্ত্রমূলক। তার মতে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ সময়ের ঠিক আগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যাতে কেউ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও দাঁড়াতে না পারেন।
এনসিপির শীর্ষ নেতাদের কড়া সমালোচনা করে ডা. তাজনূভা বলেন, “রাজনীতিতে নীতি থাকতে হয়, যা এনসিপি হারিয়েছে। দলের নেতারা বিতর্ককে ‘বিপ্লব’ নাম দিয়েছেন। শীর্ষ নেতারা মুখে জবাবদিহিতার কথা বললেও দলের ভেতরেই ‘মাইনাস’ রাজনীতি চালাচ্ছেন।”
উল্লেখ্য, তাজনূভা জাবীন ঢাকা-১৭ আসনের প্রার্থী ছিলেন, যেখানে বিএনপি থেকে তারেক রহমানের নামেও মনোনয়নপত্র নেওয়া হয়েছে। চট্টগ্রামের মেয়ে এবং কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের সাবেক এই শিক্ষার্থী এনসিপির প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ছিলেন।