হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের যত কেলেঙ্কারি!
১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৬:৫০
।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।
রাজনীতিবিদদের কেলেঙ্কারির ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুরু থেকেই নেতিবাচক সব খবরের জন্য আলোচনায় আসছেন। ট্রাম্প ও তার হোয়াইট হাউজের শীর্ষ কেলেঙ্কারি বিষয়ে খবর প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।
রাশিয়ানদের সাথে মাইকেল ফ্লিনের সাক্ষাৎ
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পাওয়ার এক মাসের মধ্যেই ট্রাম্প জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনকে বরখাস্ত করতে বাধ্য হন। নির্বাচনকালীন সময়ে ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষিক্ত হবার প্রাক্কালে ফ্লিন রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সাথে আলোচনা করেন এমন সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হবার পর আলোচনার ঝড় উঠে। বাইরের দেশের সরকারের সাথে যোগসাজশের অভিযোগ ট্রাম্প এবং হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে সেসময় অস্বীকার করা হয়। পরবর্তীতে ঘটনার সত্যতা প্রকাশ পেলে ট্রাম্প বলেন, গণমাধ্যমের এভাবে পিছনে লেগে থাকা ঠিক নয় ও তাদের লজ্জা পাওয়া উচিত। ২০১৬ সালের মার্কিন নির্বাচনে রুশ সম্পৃক্ততা বিষয়ে এফবিআইকে ভুল তথ্য দেওয়ার জন্য ফ্লিন পরবর্তীতে দু:খ প্রকাশ করেন।
আফ্রিকাকে নিয়ে বর্ণবাদী মন্তব্য
অভিবাসন প্রত্যাশীদের বিষয়ে মার্কিন সাংসদের সাথে এক বৈঠকে আফ্রিকার কিছু দেশ সম্পর্কে ‘খুব বাজে ও বর্ণবাদী’ মন্তব্য করে ফেঁসে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। ওয়াশিংটন পোস্টের বরাতে জানা যায়, হাইতি, এল-সালভাদোর এবং আফ্রিকার দেশগুলোকে ট্রাম্প ‘নোংরা দেশ’ বা ‘শিট হোল’ বলে মন্তব্য করেন। তিনি জানতে চান, কেন তাদের এখানে আনা হবে? ট্রাম্পের এই মন্তব্য বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। তবে ট্রাম্প বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
ফায়ার এন্ড ফিউরি : ইনসাইড দি ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ
ট্রাম্প প্রশাসন নিয়ে লেখা সাংবাদিক মাইকেল উলফের ‘ফায়ার এন্ড ফিউরি : ইনসাইড দি ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ’ বইটি বছরের শুরু থেকে তুমুল আলোচনার জন্ম দিয়েছে। হোয়াইট হাউজে উলফের বেশ সহজ প্রবেশাধিকার ছিল বলে তিনি প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ ও চমকপ্রদ কিছু বিষয় তার লেখা বইয়ে তুলে আনেন। এরমধ্যে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিশৃঙ্খলা, একে অন্যের পিছনে কথা বলা ইত্যাদি বিষয় ট্রাম্প শুধু চেয়ে দেখতেন আর উপভোগ করতে বলে বইয়ে জানানো হয়। ট্রাম্প কোন পদক্ষেপ নিতে অভ্যস্ত নন।
কূটনৈতিক শিষ্টাচার-বহির্ভূত ফোনালাপ
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সাথে ট্রাম্পের ফাঁস হওয়া দুটি পৃথক ফোনালাপ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কেলেঙ্কারিগুলোর মধ্যে অন্যতম। প্রথম প্রকাশিত ফোনালাপে ট্রাম্প মেক্সিকোর সাবেক প্রেসিডেন্ট এনরিক পেনা নিয়েটোকে ইউএস-মেক্সিকো বর্ডারে প্রস্তাবিত দেওয়াল বানানোর জন্য অর্থ দিতে পীড়াপীড়ি করতে থাকেন। কিন্তু এনরিক সাফ জানিয়ে দেন, তার দেশে এই প্রকল্পে কোন অর্থ দিবে না। তখন ট্রাম্প বলেন, এ কথাটা তুমি কখনো গণমাধ্যমে বলতে যেও না। ওরা এটা নিয়ে পড়ে থাকবে এবং আমাকে বাঁচতে দিবে না!
দ্বিতীয় ফোনালাপে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল ও ট্রাম্পের। ট্রার্নবুল ট্রাম্পকে জানান, বারাক ওবামার প্রশাসনের সময়ে যুক্তরাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়া থেকে কিছু শরণার্থী নেবে বলে কথা দিয়েছে। জবাবে ট্রাম্প বলেন, এটা মূর্খের মতো কাজ হবে। আমি পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষমতাবান ব্যক্তি, যাকে তাকে দেশটিতে ঢুকতে দিতে পারিনা।
সাবেক এফবিআই প্রধান কোমিকে হুমকি-ধামকি
ট্রাম্পের নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে রাশিয়ানদের জড়িত থাকার বিষয় অনুসন্ধানে গুরুত্বারোপ করার জন্য চাকরি খোয়াতে হয়েছে জেমস কোমিকে। সাবেক এই এফবিআই পরিচালককে সহজে বাগে আনতে না পেরে ট্রাম্প হুমকি দিয়ে ছিলেন কোমির সব জারিজুরি ফাঁস করে দেবেন। উল্টো কিছুদিন পরে একটি ফাঁস হওয়া মন্তব্যে প্রকাশ পায় ট্রাম্প কোমিকে বলছেন, মাইকেল ফ্লিনের রাশিয়ানদের সাথে যোগাযোগের বিষয়টা নিয়ে অনুসন্ধান ছেড়ে দাও!
সারাবাংলা/এনএইচ
আরও পড়ুন:
ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা ‘নারীদের’ অর্থ দিয়েছিলেন কোহেন