বাংলায় কথা বলেছিলেন অস্ত্রধারী: যাত্রী
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ২১:১২
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী ওই অস্ত্রধারী বাংলায় কথা বলেছিলেন। অস্ত্র হাতে তিনি যাত্রীদের উদ্দেশে বলেন, ‘কেউ কোনো শব্দ করবে না।’
আরও পড়ুন- ভেবেছিলাম আমরা শেষ: বিমানের যাত্রী
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ওই ফ্লাইটের একজন যাত্রী ওসমান গণি সারাবাংলাকে এসব কথা বলেন। রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে ওই উড়োজাহাজে অস্ত্রধারীকে ধরতে চালানো অভিযান শেষ হওয়ার পর বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন- উড়োজাহাজ ‘ছিনতাইকারী’র মৃত্যু
ওসমান গণি জানান, তার বাড়ি কক্সবাজারের পেকুয়া। তিনি ওমানে থাকতেন। সেখান থেকে দুবাই হয়ে প্রথমে ঢাকা যান। পরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এই ফ্লাইটে চড়ে চট্টগ্রামে পৌঁছান।
আরও পড়ুন- চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে সন্ত্রাসীর কবলে বিমানের উড়োজাহাজ!
ওসমান গণি সারাবাংলাকে বলেন, ঢাকা থেকে বিমান উড্ডয়নের ১৫ মিনিট পরই ওই অস্ত্রধারী হঠাৎ চিৎকার শুরু করে। এসময় সে পাইলটের দরজার তিন রাউন্ড গুলি করে। যাত্রীদের দিকেও অস্ত্র তাক করে ছিল সে।
আরও পড়ুন- শাহ আমানতের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, অভিযানের প্রস্তুতি
আচমকা এমন পরিস্থিতিতে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সবাই সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করতে থাকেন। এ পরিস্থিতিতে সবাই হতবিহ্বল হয়ে পড়েন।
আরও পড়ুন- শাহ আমানতে অস্ত্রধারী আটক
ওসমান গণি বলেন, অস্ত্রধারী পাইলটের দরজায় গুলি করার পর আমাদের দিকে অস্ত্র ধরে বলে, ‘কেউ কোনো শব্দ করবে না। সবাই চুপচাপ নিজ নিজ আসনে বসে থাকো।’ অস্ত্রধারী পুরোটা সময় অত্যন্ত উদ্ধত আচরণ করেছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন- ২ কেবিন ক্রু জিম্মি!
এ পরিস্থিতিতে বিকেল ৫টা ৪১ মিনিটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজটি নিয়ে জরুরি অবতরণ করেন পাইলট। ওসমান গণি বলেন, ‘উড়োজাহাজটি অবতরণের পর আমরা যাত্রীরা দ্রুত গেট দিয়ে নেমে আসি। পরে পাইলটও নেমে আসেন। এসময় ওই অস্ত্রধারী ছিনতাইকারী কাউকে কিছু বলেনি। তবে কেবিন ক্রুদের আটকে রাখে।’
কতজন কেবিন ক্রু আটকা পড়েছিলেন— জানতে চাইলে সুনির্দিষ্টভাবে তা জানাতে পারেননি ওসমান গণি। তিনি বলেন, অতকিছু দেখার সুযোগ হয়নি।
আরও পড়ুন- নৌবাহিনীর ২২ সদস্যের সোয়াড টিম অভিযান চালায় শাহ আমানতে
অস্ত্রধারী ছিনতাইকারী কোন দেশি, বুঝতে পেরেছেন কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে ওসমান গণি বলেন, সে বাংলায় কথা বলছিল। সে স্পষ্টভাবেই বলে, কেউ কোনো শব্দ করবে না। তার কথা শুনে মনে হয়েছে, সে বাঙালি। কিন্তু আসলে সে কোন দেশি, সেটা ঠিক বলতে পারব না।
আরও পড়ুন- প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় কমান্ডোদের অভিযান
এর আগে, বিকাল ৫টা ৪১ মিনিটে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি উড়োজাহাজ। জানা যায়, একজন অস্ত্রধারী উড়োজাহাজটি ছিনতাইয়ের চেষ্টা করেছেন। অবতরণের পরপরই সেটিকে ঘিরে ফেলে পুলিশ, র্যাব, এপিবিএনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পরে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ একটি টিমের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয় ওই উড়োজাহাজে।
অভিযান শেষে এক ব্রিফিংয়ে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান জানান, আত্মসমর্পণের আহ্বানে সাড়া না দিয়ে অস্ত্রধারী আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলে গোলাগুলি হয়। এতে প্রথমে সে আহত হয়, পরে মারা যায়।
সারাবাংলা/আরডি/টিআর
উড়োজাহাজ ছিনতাই উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স শাহ আমানত বিমানবন্দর