Friday 27 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শাহ আমানতের বিমান ছিনতাইকারী (ফটো এক্সক্লুসিভ)


২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০১:২২

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকারী অস্ত্রধারীর মৃত্যু হয়েছে। সেনাবাহিনীর বিশেষ কমান্ডো টিমের সঙ্গে র‌্যাব, পুলিশের সম্মিলিত অভিযানে ওই অস্ত্রধারীর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর শাহ আমানত বিমানবন্দরের রানওয়েতে পড়েছেল তার মৃতদেহ।

৮ মিনিটেই ‘পরাভূত’ উড়োজাহাজ ছিনতাইকারী

রোববার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ৯টায় চট্টগ্রামের শাহ আমানত বিমানবন্দরে ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মতিউর রহমান এ প্রসঙ্গে ব্রিফিং করেন। এসময় তিনি জানান, ছিনতাইকারীকে নিবৃত্ত করার জন্য প্যারা কমান্ডো বাহিনী প্রথমে তাকে আত্মসমর্পণের আহ্বান জানায়। কিন্তু ছিনতাইকারী  সেই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টা করে। এসময় স্বাভাবিক অ্যাকশনে যায় প্যারা কমান্ডো। তখন গুলিতে প্রথমে সে আহত হয় ও পরে মারা যায়।

মতিউর রহমান আরও জানান, ‘অভিযান চালিয়েছেন হলি আর্টিজান রেস্তোঁরায় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযানের নেতৃত্বে থাকা প্যারা কমান্ডার ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্স কর্নেল মো. এম এম ইমরুল হাসান।

ছিনতাইকারীর বয়স ২৫ থেকে ২৬ বছর উল্লেখ করে মেজর জেনারেল মতিউর রহমান জানান, ‘তাকে দেখে প্রথমে বিদেশি বলে মনে করেন পাইলট। তবে তিনি প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশি। তার সঙ্গে একটি পিস্তল ছিল।’

চট্টগ্রাম বিমানবন্দরে সন্ত্রাসীর কবলে বিমানের উড়োজাহাজ!

কেন এই ছিনতাই চেষ্টা— জানতে চাইলে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘তার সঙ্গে কথা বলে যতটুকু জানা গেছে, সে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এবং তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিল। এরপর তার সঙ্গে আর কথা বলার সুযোগ হয়নি। উড়োজাহাজের মধ্যেই অ্যাকশন হয়েছে। সেখানে সে আহত হয়েছে। পরে বাইরে মারা গেছে।’ তিনি আরও জানান, ‘ছিনতাইকারীকে হতাহত করার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। কিন্তু সে আক্রমণাত্মক হওয়ায় কমান্ডোরা অ্যাকশনে যেতে বাধ্য হয়েছেন।’

বিজ্ঞাপন

মেজর জেনারেল মতিউর বলেন,  ‘এ ধরনের ঘটনার পর বিমানবন্দর অচল হয়ে যায়। কিন্তু এটি তো একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। তাই আমাদের প্রধান কাজ, দ্রুত বিমানবন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক করা। তাই অভিযানে বেশি সময় নেওয়া হয়নি। মাত্র ৮ মিনিটেই অভিযান শেষ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।’

কেবিন ক্রু বা পাইলট কিছু বলেছে কি না— জানতে চাইলে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, ‘বিমান ছিনতাই হওয়ার পরে যাত্রীরা এক ধরনের ট্রমায় থাকেন। তারা অনেক কিছু শুনতে পান, অনেক কিছু বলেন। এগুলো আসলে এক ধরনের হ্যালুসিনেশন।’

এত তল্লাশির পরও ওই যাত্রী অস্ত্র নিয়ে কিভাবে উড়োজাহাজে প্রবেশ করলেন— এমন প্রশ্নের জবাবে মতিউর রহমান বলেন, ‘আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এসব তথ্য বের করা হবে। কাগজপত্র ও ব্যাগ তল্লাশি করে ছিনতাইকারীর পরিচয় বের করা হবে।’

ব্রিফিংয়ে এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুল আলম জানান, ‘ছিনতাইকারীকে কথা বলার মধ্য দিয়ে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সে আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টা করলে তার ওপর অ্যাকশন নেওয়া হয়। অভিযানে কমান্ডো বাহিনীর সঙ্গে র‌্যাব, পুলিশও অংশ নেয় বলে জানান তিনি।’

মফিদুল আলম বলেন, ‘ছিনতাইকারীর সব কথা শোনা হবে— এমন কথা বলে তাকে আশ্বস্ত করে সবাইকে বের করে আনা হয়। বিমান বাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তা ক্রেন দিয়ে উঠে পাইলটদের বের করে নিয়ে আসেন।’

‘সে হয়তো তার স্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার জন্য আমাদের কাছে ফোনটা দিত। কিন্তু তার আগেই সে আহত হয়।’-বলে জানান মফিদুল আলম।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, রোববার বিকেল ৫টা ৩৩ মিনিটে বিমান বাহিনী প্রথম জানতে পারে ছিনতাইয়ের কথা। ককপিট থেকে পাইলট বিষয়টি জানায় এটিসিকে। পরে বিমানটি ৫টা ৪১ মিনিটে জরুরি অবতরণ করে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা প্রাথমিকভাবে ঘটনা সামাল দেন। পরে সন্ধ্যা ৬টার দিকে ১ প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়ন আসে বিএনএস ইশা খাঁ থেকে। তারা সেখানে আগে থেকেই অবস্থান করছিলেন। তারা দ্রুততম সময়ে বিমানবন্দরে এসে সফল অভিযান চালিয়ে ছিনতাইয়ের অবসান ঘটান।

বিজ্ঞাপন

ব্রিফিংয়ে আরও বলা হয়, অস্ত্রধারী একজন কেবিন ক্রুকে বলেছিল, তার নাম মাহাদী। তবে তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টা চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স শাহ আমানত বিমানবন্দর

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর