নুসরাত হত্যা মামলায় আসামিপক্ষে থাকায় আ.লীগ নেতা বহিষ্কার
১১ এপ্রিল ২০১৯ ১৫:১৭
ঢাকা: সোনাগাজীতে মাদরাসা শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকে বহিষ্কার করেছে জেলা আওয়ামী লীগ। বহিষ্কৃত অ্যাডভোকেট কাজী বুলবুল আহম্মদ সোহাগ ফেনী সদরের কাজীর বাগ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
আরও পড়ুন- নুসরাতের অপেক্ষায় শূন্য বাড়ি
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রহমান বিকম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ন্যাক্কারজনক এ মামলায় আসামিদের পক্ষ নেওয়ায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন- বাঁচানো গেলো না নুসরাতকে
এর আগে, বুধবার (১০ এপ্রিল) ফেনী জজ কোর্টে মামলার প্রধান আসামি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলাসহ অন্য আসামিদের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন। বিচারক রিমান্ড শুনানি নিয়ে অধ্যক্ষের সাত দিনের ও বাকিদের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এসময় আদালতের রিমান্ড আদেশের বিরুদ্ধে আপিল ও আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনার ঘোষণা দেন অ্যাডভোকেট বুলবুল আহমেদ সোহাগ।
আরও পড়ুন- বাড়ির পথে নুসরাত
এদিকে, বৃহস্পতিবার ফেনী জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর হাফেজ আহম্মদ বলেন, এখন থেকে নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যাচেষ্টার মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গণ্য করা হবে। এদিন এই মামলায় আরও দুই আসামির পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
আরও পড়ুন- যৌন হয়রানির শিকার ছাত্রীকে পেট্রোল ঢেলে হত্যার চেষ্টা
উল্লেখ্য, নুসরাতকে যৌন হয়রানি করার অভিযোগে তার মায়ের দায়ের করা মামলায় গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে কারাগার থেকেই তিনি মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নুসরাতের পরিবারকে চাপ দিতে থাকেন। এর মধ্যে গত ৬ এপ্রিল সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষার কেন্দ্রে গেলে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে নুসরাতের গায়ে কেরোসিন ঢেলে পালিয়ে যায় মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। পরিবারের অভিযোগ, নুসরাতের পরিবার মামলা তুলে নিতে রাজি না হওয়ার কারণেই নুসরাতকে এই পরিণতি বরণ করতে হয়েছে।
আরও পড়ুন- ‘ডাইং ডিক্লারেশনে’ শম্পা নামটি বলেছেন ফেনীর মাদরাসা শিক্ষার্থী
এদিকে, আগুনে নুসরাতের শরীরের ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ দগ্ধ হয়। এ অবস্থায় প্রথমে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে, সেখান থেকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে। সেখানে বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের ৯ সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছিল। উন্নত চিকিৎসার জন্য সিংগাপুরেও নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু তার শরীর দীর্ঘ বিমানযাত্রার উপযোগী না থাকায় ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে সিংগাপুরের চিকিৎসকদের সঙ্গে পরামর্শ করে চালিয়ে যাওয়া হচ্ছিল চিকিৎসা। শেষ পর্যন্ত সব চেষ্টাকে বিফল করে দিয়ে বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান নুসরাত।
সারাবাংলা/টিআর