Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেখা দেননি ওয়াসার এমডি, আশ্বাসে শেষ শরবত খাওয়ানো কর্মসূচি


২৩ এপ্রিল ২০১৯ ১৬:৪৫

ঢাকা: ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) ‘সুপেয়’ পানির শরবত খাওয়াতে ওয়াসা ভবনের সামনে অবস্থান নেওয়া ব্যক্তিরা শেষ পর্যন্ত এমডির দেখা পেলেন না। পরে ওয়াসার একজন পরিচালক তাদের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি আশ্বাস দেন, যা কিছু সমস্যা আছে, সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) বিকেলে ওয়াসার পরিচালক (কারিগরি) এ কে এম সহিদ উদ্দিন ডেকে নেন ওয়াসার সামনে অবস্থান নেওয়া জুরাইনের নাগরিক মিজানুর রহমানসহ বাকি চার জনকে। নিজ দফতরে তিনি মিজানুর রহমানসহ অন্যদের কাছ থেকে তাদের এলাকার সমস্যাগুলো শোনেন।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- ওয়াসার এমডিকে ‘সুপেয়’ পানির শরবত পান করাতে হাজির রাজধানীবাসী

এসময় মিজানুর রহমানসহ অন্যরা বলেন, তারা ওয়াসার যে পানি পান তা দুর্গন্ধযুক্ত ও অপরিষ্কার। সেই পানি কোনোভাবেই খাওয়ার উপযোগী নয়। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ কে এম সহিদ উদ্দিন বলেন, ওয়াসা সুপেয় পানিই সরবরাহ করে। তারপরও কিছু সমস্যা থাকতে পারে। সেগুলো সমাধানে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সমাধানের পর সবাইকে জানানো হবে।

তবে ‘ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়’ উল্লেখ করে ওয়াসার এমডি যে বক্তব্য দিয়েছিলেন, তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন সংস্থাটির এই পরিচালক। তিনি বলেন, ওয়াসার পক্ষ থেকে খারাপ পানি সরবরাহ করা হয় না। তবে লাইনে সমস্যা থাকতে পারে। সে কারণে পানিতে দুর্গন্ধ থাকতে পারে বা অপরিষ্কার হতে পারে।

এসময় এমডি না থাকায় তাকেই জুরাইন-রামপুরা থেকে আনা পানি খেতে বলা হলে এ কে এম সহিদ উদ্দিন বলেন, এটা ওয়াসার পানি নাকি পুকুরের পানি, তা নিশ্চিত নয়। তাই এই পানি খাব না। যেসব সমস্যার কথা বললেন, আগে সেগুলো সমাধান করি। এরপর প্রয়োজনে গিয়ে পানি খেয়ে আসব।

বিজ্ঞাপন

পরে মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, উনারা আশ্বাস দিয়েছেন, পানি সরবরাহের লাইনে যেসব সমস্যা রয়েছে সেগুলো সমাধান করবেন। আমরা আপাতত ফিরে যাচ্ছি। তবে তাদের কথামতো সমাধান না হলে জুরাইনবাসীকে নিয়ে বড় আন্দোলন গড়ে তুলব।

এক সংবাদ সম্মেলনে দুই দিন আগেই ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খান দাবি করেছিলেন, ওয়াসার পানি ‘শতভাগ সুপেয়’। সেই ‘সুপেয়’ পানিতে তৈরি শরবত এমডিকে পান করাতেই মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে ওয়াসা ভবনে স্ত্রী ও কন্যাকে নিয়ে হাজির হন জুরাইনের মিজানুর রহমান। এছাড়া একই এলাকা থেকে আসেন মতিয়ার রহমান। পূর্ব রামপুরা থেকে আসেন মনিরুল ইসলাম। তবে শেষ পর্যন্ত এমডি’র দেখা আর তারা পাননি।

এর আগে, গত ২০ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে ওয়াসার সরবরাহ করা পানিতে ‘শতভাগ সুপেয়’ বলে দাবি করেন ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। তিনি বলেন, ঢাকা শহরের অধিকাংশ মানুষ ফুটিয়ে নয়, সরাসরি ওয়াসার ট্যাপের পানি পান করেন। আর ওয়াসার পানি শতভাগ সুপেয়

ঢাকা ওয়াসার সার্বিক মান নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) প্রকাশিত প্রতিবেদনের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।  ‘ঢাকা ওয়াসা: সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে টিআইবি জানায়, বিশ্বের প্রায় সব দেশেই পাইপলাইনের মাধ্যমে সুপেয় পানি সরবরাহ করা হয়। কিন্তু ওয়াসার পানি সুপেয় নয়। তাদের সরবরাহ করা পানি ফুটিয়ে পানযোগ্য করতে বছরে ৩৩২ কোটি টাকার গ্যাস খরচ করতে হয় রাজধানীবাসী। একই প্রতিবেদনে টিআইবি আরও বলেন, দুর্নীতি নেই— ঢাকা ওয়াসায় এমন জায়গা খুঁজে পায়নি টিআইবি!

এ প্রতিবেদনের জবাবে ওয়াসার এমডি বলেন, প্রতিবেদনটি একেবারেই গবেষণামূলক নয়, এটি একপেশে ও ধারণামূলক। আমরা ২৪৩টি জায়গা থেকে ওয়াসার পানি সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছি। কোথাও কোনো ধরনের জীবাণু পাওয়া যায়নি। ঢাকা ওয়াসা ৯৮ ভাগ দুর্নীতিমুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান।

সারাবাংলা/এইচএ/টিআর

ওয়াসা ওয়াসার এমডি জুরাইন শরবত সুপেয় পানি

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর