এরশাদের জানাজা: বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা
১৬ জুলাই ২০১৯ ০৫:৩২
রংপুর থেকে: সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের জানাজাকে কেন্দ্র করে রংপুর ও আশেপাশের জেলাগুলো থেকে ব্যাপক লোক সমাগম ও বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। বিশৃঙ্খলা যাতে না হয় সেজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে গ্রহণ করা হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সোমবার (১৫ জুলাই) রাতে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার আব্দুল আলিম মাহমুদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘জাতীয় পার্টির দূর্গ হিসেবে পরিচিত রংপুরে এরশাদের জানাজা উপলক্ষে ব্যাপক লোক সমাগম হবে এটাই স্বাভাবিক। সুশৃঙ্খলভাবে যাতে জানাজা শেষে হয় এবং শান্তিপূর্ণভাবে সবাই চলে যেতে পারে সেজন্য পুলিশ মোতায়েন থাকবে। আর বিশৃঙ্খলা হলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিসেবে যা করা দরকার তাই করা হবে।’
এরশাদের জানাজায় ৫ লাখ মানুষ অংশ নেবে, আশা নেতাকর্মীদের
জাতীয় পার্টির রংপুরের নেতাকর্মীরা এরশাদের মরদেহ ঢাকায় নিয়ে যেতে দেবেন না বলে দাবি করছে। এতে কোনো নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কি না জানতে চাইলে পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘পুলিশের কাজ নিরাপত্তা রক্ষা করা, সুতরাং আমরা সেটাই করতে চাই। মরদেহ কোথায় দাফন করা হবে সেটা দলীয় নেতারাই ঠিক করবেন। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মরদেহ যেখানেই নেওয়া হোক না কেন আমরা সেখানেই সহযোগিতা করতে চাই। তবে কাউকে কোনো বিশৃঙ্খলা করতে দেওয়া হবে না।’
এদিকে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা সোমবার রাতে নেতা-কর্মীদের আবারও বলেছেন, পল্লীবন্ধুর মরদেহ রংপুর থেকে নিয়ে যেতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে সকল নেতাকর্মী জীবন দিতে প্রস্তুত আছি। আমাদের মরদেহও এরশাদের সঙ্গে বনানীতে নিয়ে কবর দেন। রক্তের বন্যা বয়ে যাবে তবুও মরদেহ ঢাকায় ফিরে যাবে না।
পুলিশ সুত্রে জানা যায়, এরইমধ্যে রংপুর শহরের বেশিরভাগ আবাসিক হোটেল সোমবার রাতেই বুকিং শেষ হয়েছে। দুরের জেলাগুলো থেকে নেতাকর্মীরা এসেছেন। আগামীকাল আরও আসবে। বাস, ট্রেন মোটরসাইকেল রিকশা ভ্যান যে যা পাবেন সে সেটাতেই আসবেন বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। তবে পুলিশ সকলকে কড়া নজরদারি করছে।
রংপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রশিদুল হক সারাবাংলাকে বলেন, ‘পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবে। একই সঙ্গে গোয়েন্দা পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুলিশ লাইন্স ছাড়াও জেলা পুলিশ ও আশেপাশের থানাগুলো থেকেও পুলিশ সদস্যদের কল করা হয়েছে, তারাও দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়াও সিসিটিভির মাধ্যমে সার্বক্ষনিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা মনিটরিং করা হবে।’
এরশাদকে রংপুরেই সমাহিত করার দাবি, প্রয়োজনে আন্দোলন
সোমবার রাতে জাতীয় পার্টির রংপুর জেলা সাংগাঠনিক সম্পাদক মুন্সি আব্দুল বারী সারাবাংলাকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠ ও তার আশেপাশের মাঠ ও সড়কগুলোতে প্রায় ১৫০টি মাইক লাগানোর কাজ শেষ হয়েছে। মূল মাঠের বেশ কিছু অংশ শামিয়ানা দিয়ে ছাউনি দেওয়া হয়েছে। আগত নেতা-কর্মী ও জনসাধারণের সবাই যাতে জানাজায় অংশ নিতে পারেন সেজন্য ক্রিকেট গার্ডেন ও পুলিশ লাইন্স স্কুল মাঠ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘জানাজা শেষে এরশাদের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে শহরের দর্শনা পল্লী নিবাসে। যেখানে লিচু বাগানে তার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী সমাহিত করা হবে।’
যদিও এরশাদের মরদেহ সমাহিত করার কথা রয়েছে ঢাকার বনানী সামরিক কবরস্থানে। এজন্য সেখানেও একটি কবর খুঁড়ে রাখা হয়েছে।
সারাবাংলা/ইউজে/এমআই
আরও পড়ুন:
শেষবারের মতো দলীয় কার্যালয়ে এরশাদ
‘পল্লী নিবাস প্রাঙ্গণে সমাধি চেয়েছিলেন এরশাদ’
এরশাদকে ‘সেনাশাসক ও স্বৈরাচার’ পরিচয়েই চেনে বিশ্ব গণমাধ্যম