অসাধু ফিড ব্যবসায়ীদের হুঁশিয়ারি মৎস্য প্রতিমন্ত্রীর
১১ অক্টোবর ২০১৯ ১৮:০০
ঢাকা: মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর মিট অ্যান্ড বোন মিল (এমবিএম) আমদানি করছে অসাধু ফিড ব্যবসায়ীরা। তাদেরকে ব্যবসায়ে স্বচ্ছতা আনতে কড়া হুশিয়ারি দিয়েছেন মৎস্য প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু।
শুক্রবার (১১ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিশ্ব ডিম দিবস-২০১৯ উপলক্ষে এক আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আশরাফ আলী খান বলেন, ‘পাঁচটি উপাদানে তৈরি হয় পোল্ট্রির খাবার। কিন্তু ব্যবসায়ীরা ফিসমিলের জায়গায় আমদানি করছে এমবিএম (মিট অ্যান্ড বোন মিল)। যা শুকরের হাড়ের তৈরি খাবার। চিটাগাং পোর্টে হাজার হাজার টন মিট অ্যান্ড বোন পড়ে আছে। এটা কারা আনছে। এটা কি আমি আনছি।’
ফিস মিলের কথা বলে এটা আনা আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এটা আটকানোর পরে ব্যবসায়ীরা আবার কোর্টে গিয়ে মামলা করছেন। যেটা ল্যাবে পরীক্ষা করে চারটা মিট অ্যান্ড বোন বলে প্রমাণিত হয়েছে। যারা বড়বড় ব্যবসায়ী যারা আমদানি করছেন এটা তারাই এটা করছেন। যা ইউরোপেও নিষিদ্ধ। ইউরোপে তৈরি হচ্ছে আবার ইউরোপেই এটা নিষিদ্ধ। এই মিট অ্যান্ড বোন মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। ধর্মীয় দিকেও এটার অনেকটা বিধি-নিষেধ আছে। তাহলে এটা কেন আমদানি করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, যারা এই ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত আমি তাদেরকে বলছি স্বচ্ছতার সঙ্গে ফিরে আসুন। রাতারাতি অ্যারোপ্লেন কেনা, ব্যক্তিগত হেলিকপ্টার কেনার চিন্তাভাবনা বাদ দেন। রাতারাতি আকাশচুম্বি হওয়ার চিন্তা করবেন না। ব্যবসা করেন ব্যবসা থেকে লাভ করবেন। কিন্তু সেই লাভটা সহনশীল পর্যায়ে থাকতে হবে। মনে রাখবেন, নিজের শরীর অনুযায়ী কাপড় বানাতে হয়।
আমরা যারা শিক্ষিত, মেধাসম্পন্ন ও দেশটাকে চালাই তারা কিন্তু মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছি জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, কিছুদিন আগে কোটি কোটি টাকার মেয়াদ উত্তীর্ণ ভ্যাকসিন ধরা পড়লো। এগুলো আবার মেয়াদ বাড়ানো হচ্ছে, ল্যাবে চেঞ্জ করা হচ্ছে। এগুলো আবার মেডিকেল স্টোরগুলোতে দেওয়া হচ্ছে। যারা করছে তারা শতশত কোটি টাকার মালিক। আমরা যারা সমাজে উচ্চতলায় প্রতিষ্ঠিত তারাই কিন্তু সমাজকে ধ্বংস করছি।
এর আগে সকালে বিশ্ব ডিম দিবস উপলক্ষে একটি র্যালি করা হয়। র্যালিটি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে পল্টন হয়ে আবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এসে শেষ হয়।
এদিকে আলোচনাসভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. খালেদা ইসলাম এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব পোল্ট্রি সায়েন্সের অধ্যাপক ড. ইলিয়াস হোসেন।
আলোচনাসভায় আরও বক্তব্য রাখেন, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছউল আলম মণ্ডল, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. হীরেশ রঞ্জন ভৌমিক, ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার সভাপতি ফজলে রহিম খান শাহরিয়ার, বিপিআইসিসির সভাপতি মসিউর রহমানসহ অনেকে।