ড. ইউনূসের গ্রেফতারি পরোয়ানা হাইকোর্টে স্থগিত
১৪ অক্টোবর ২০১৯ ১৮:২০
ঢাকা: নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রম আদালতের জারি করা গ্রেফতারি পরোয়ানা স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।
সোমবার (১৪ অক্টোবর) বিচারপতি আব্দুল হাফিজ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ পরোয়ানা স্থগিতের এ আদেশ দেন। এদিন নোবেল জয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ।
শুনানির আগে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে করা মামলার কার্যক্রম ও গ্রেফতারি পরোয়ানা স্থগিতের আবেদন করা হয়। আদালত শুনানি শেষে গ্রেফতারি পরোয়ানা স্থগিতের পাশাপাশি মামলার কার্যক্রমও স্থগিতের আদেশ দেন।
এর আগে গত বুধবার (৯ অক্টোবর) ট্রেড ইউনিয়নের কাজে বাধা দেওয়া ও কর্মীদের পাওনা পরিশোধ না করার অভিযোগের মামলায় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন শ্রম আদালত।
ড. ইউনূসের মালিকানাধীন গ্রামীণ কমিউনিকেশন্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন গঠন করায় ওই ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে চাকরিচ্যুত করার অভিযোগে আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসকে সমন, হাজির না হলে গ্রেফতার আদেশ
ওই মামলার শুনানি নিয়ে গত ১০ জুলাই ঢাকার আদালত প্রথমে সমন জারি করেন। এরপর ৮ অক্টোবর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সংশ্লিষ্ট আদালতে হাজির হতে বলা হয়। কিন্তু ওইদিন পূজার বন্ধ থাকায় বুধবার মামলাটির শুনানি হয়। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ওইদিন বিদেশে অবস্থান করায় আদালত উপস্থিত হতে পারেননি। ফলে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, প্রতিষ্ঠানে ইউনিয়ন গঠন করায় চাকরিচ্যুতের অভিযোগে গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের তিন কর্মচারি এমরানুল হক, শাহ্ আলম ও আব্দুস সালাম গত ৩ জুলাই ড. ইউনূসসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, মামলার বাদীরা গ্রামীণ কমিউনিকেশনসের স্থায়ী পদে এমআইএস অফিসার (কম্পিউটার অপারেটর) হিসেবে কাজে যোগদান করেন। শ্রমিক হিসেবে নিজেদের সংগঠিত হওয়া ও নিজেদের কল্যাণের জন্য ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের বিষয়ে সিদ্বান্ত নেন। সে অনুযায়ী নিজেরাসহ অন্যান্য শ্রমিক সহকর্মীদের নিয়ে ‘গ্রামীণ কমিউনিকেশনস শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন’ (প্রস্তাবিত) নামে একটি ইউনিয়ন গঠন করেন এবং তা আইন অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করেন। ইউনিয়ন গঠনের বিষয়টি জানতে পেরে মামলার আসামিরা তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করতে থাকেন। স্বাভাবিক দায়িত্ব পালনেও তারা বাধা দেন।
আরও পড়ুন: ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে পরোয়ানা, দুই পক্ষের আইনজীবীর ভিন্নমত
বাদীর প্রতি এরকম অন্যায় আচরণের প্রতিবাদ করায় প্রকাশ্যে নানাধরনের হুমকি ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন করতে থাকেন আসামিরা। আসামিদের নির্দেশে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার বেআইনিভাবে বাদীদের প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক কাজ থেকে বিরত রাখেন এবং কোনো কারণ ছাড়াই বাদীদের চাকরি থেকে টার্মিনেট করেন।
বিষয়টি লিখিতভাবে শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালকে অবগত করেন বাদীরা। পরবর্তী সময়ে কাজের বিষয়ে বহুবার যোগাযোগ ও অনুনয়-বিনয় করলেও তাদের (বাদীদের) প্রতিষ্ঠানে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। শুধু ইউনিয়ন গঠন করার কারণে আসামিরা তাদের দায়িত্ব পালনে বাধা দিয়ে কাজ থেকে বিরত রাখেন এবং বেআইনিভাবে চাকরিচ্যূত করেন।
বেআইনিভাবে চাকরিচ্যূতির অভিযোগে গত ২৩ জুন বিবাদী বরাবর আইনি নোটিশ পাঠান তারা। তার কোনো জবাব না পেয়ে পরে মামলা দায়ের করেন।