‘একে একে অনেক সাথী চলে যাচ্ছে, এটা দুঃখজনক’
৯ জানুয়ারি ২০২০ ১৮:৪০
সংসদ ভবন থেকে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, একে একে আমাদের অনেক সাথী চলে যাচ্ছে, এটা দুঃখজনক। এটাই নিয়ম- জন্মিলে মৃত্যুবরণ করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে একাদশ জাতীয় সংসদের ৬ষ্ঠ অধিবেশনে সংসদ সদস্য ডা. ইউনুস আলী সরকারের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ নেতা এসব কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য ডা. ইউনুস আলী সরকারের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধান মন্ত্রী বলেন, ‘এমপি হয়েও তিনি ঘুরে ঘুরে মানুষের চিকিৎসা সেবা দিয়েছেন। বিনামূল্যে ওষুধ দিয়েছেন। আরেকজন সদস্য ফজিলাতুন নেসা বাপ্পি। তিনিও অকালে চলে গেলেন।’
সংসদ নেতা বলেন, ‘ডা. ইউনুস আলী এত দ্রুত চলে যাবে কল্পনাও করতে পারিনি। আমাদের বাপ্পি যুব মহিলা লীগের একজন সদস্য; সে নবম ও দশম সংসদের সংসদ সদস্য ছিল। চমৎকার বক্তৃতা করতেন। ভবিষ্যতে তার দক্ষ রাজনীতিবিদ হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা ছিল।’
বাপ্পির স্মৃতিচারণ করে সংসদ নেতা আরও বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আমাকে যখন গ্রেফতার করে মামলা দেওয়া হয়, মামলার সমস্ত কাজের সাথে সব সময় জড়িত ছিলেন তিনি। অত্যন্ত মেধাবী ছিলেন বাপ্পি।’
সেইসঙ্গে সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মুহাম্মদ জয়নুল আবেদিনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বলেন, ‘১৯৯৬ সালে প্রথম যখন সরকার গঠন করি তখন সহকারী সামরিক সচিব ছিলেন তিনি। এরপর থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সামরিক সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার মতো সৎ, দক্ষ একজন সামরিক অফিসার খুবই কম পাওয়া যায়। যদিও মাঝখানে সাত বছর আমি ক্ষমতায় ছিলাম না। আমার সামরিক সচিব ছিল বলে বিএনপি সরকার তার ওপর অনেক অত্যাচার করেছে। পরে যখন আমরা আবার সরকার গঠন করে আমি তাকে নিয়ে এসেছিলাম।’
প্রধানমন্ত্রী শোক প্রকাশ করেন স্থপতি রবিউল হোসেনের প্রতি। তার সম্পর্কে বলেন, ‘রবিউল হোসেন শুধু স্থপতিই ছিলেন না, ভারো কবি ও সাহিত্যিক ছিলেন। এছাড়া সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী অত্যন্ত দক্ষ একজন কূটনৈতিক ছিলেন- তাকেইও হারিয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদ সম্পর্কে বলেন, ‘তার স্ত্রী আমাদের একজন সক্রিয়কর্মী ছিলেন। আমরা যখন প্রথমবার সরকারে আসি তখন তাকে বলেছিলাম ইউনিভার্সিট করতে এবং একটা ব্যাংক তাকে দিয়েছিলাম। ব্র্যাক ইউনিভার্সিট এবং ব্র্যাক ব্যাংক তাকে অনুরোধ করে করিয়েছিলাম। তিনি তার দক্ষতা দিয়ে এনজিও করতেন। তার কাজের ফলে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের ভাবমুর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। মৃত্যুর কিছুদিন আগে আমার সাথে দেখা করেন তিনি। অবাক লাগে তিনি আমাকে বলেছিলেন, আমি তো বেশি দিন বাঁচব না। তাই সব কাজ বুঝিয়ে দিয়ে যাচ্ছি। তিনি তার মেয়েকে পরিচয় করে দিয়ে গেলেন। ফজলে হাসান আবেদ দেশের জন্য যথেষ্ট সন্মান নিয়ে এসেছেন।
কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ সংস্থা আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বায়লাদেশের কো-চেয়ারম্যান আল্লামা আশরাফ আলীর মৃত্যুতেও গভীর শোক প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।