বুধবার শুরু হচ্ছে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ
২১ জানুয়ারি ২০২০ ১৮:৪৯
ঢাকা: ‘হাতিরঝিলের ক্যানসার’খ্যাত বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ অবশেষে শুরু হচ্ছে বুধবার (২২ জানুয়ারি)। গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম উপস্থিত থেকে বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কার্যক্রম উদ্বোধন করবেন।
ভবন ভাঙার কাজ পাওয়া প্রতিষ্ঠান ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজের ম্যানেজার নছরুল্লাহ খান রাশেদ মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় সারাবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রাশেদ বলেন, বিজিএমই ভবন ভাঙা নিয়ে আর কোনো অনিশ্চয়তা নেই। আমরা বুধবার ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করছি। গণপূর্তমন্ত্রী এসময় উপস্থিত থাকবেন।
এদিকে, মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সঙ্গে ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজের একটি চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তি অনুযায়ী ভবনটি ভাঙবে ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ। পরে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতেও বুধবার সকাল ১০টায় বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ শুরু করার কথা জানানো হয়েছে।
বুধবার বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ শুরু হলে ভবনটি ভাঙতে আদালতের প্রথম আদেশটি বাস্তবায়ন শুরু হবে প্রায় ৯ বছর পর। ২০১০ সালে একটি জাতীয় দৈনিকে বিজিএমইএ ভবন নির্মাণে রাজউকের অনুমোদন না থাকার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। পত্রিকার প্রতিবেদনটি হাইকোর্ট নজরে নিয়ে ‘ভবনটি কেন ভাঙা হবে না?’— তা জানতে চেয়ে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। পরে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ বিজিএমইএ ভবন ভেঙে ফেলতে রায় দেন।
এরপর আপিল ও রিভিউয়ে ভবনটি ভাঙার সিদ্ধান্ত বহাল থাকলেও দফায় দফায় সময় প্রার্থনা করে বিজিএমইএ। শেষ পর্যন্ত ২০১৮ সালের ৩ এপ্রিল বিজিএমইএকে শেষবারের মতো একবছরের সময় দেন সর্বোচ্চ আদালত। আদালতের বেঁধে দেওয়া সময় শেষ হয় ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল। পরে ১৬ এপ্রিল বিজিএমইএ ভবন ভাঙার প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু হয়।
ওই সময় ভবনে থাকা মালামালা সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই দিনই ভবনটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। পরে আবারও আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ভবনটিতে থেকে যাওয়া মালপত্র সরিয়ে নেওয়ার অনুমতি দেয় রাজউক। এরপর জটিলতা শুরু হয় ভবনটি ভাঙার প্রক্রিয়া ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া নিয়ে। শুরুতে ডিনাইমাইট ব্যবহার করে ভবন ভাঙার কথা বলেন রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জেসমিন আক্তার। গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমও এক ব্রিফিংয়ে একই তথ্য জানান।
শেষ পর্যন্ত সে সিদ্ধান্তে অনড় থাকতে পারেনি মন্ত্রণালয় বা রাজউক। সিদ্ধান্ত হয়, প্রচলিত পদ্ধতিতেই ভাঙা হবে ভবনটি। সেই অনুযায়ী টেন্ডার আহ্বান করা হয়। তাতে সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হয় ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ। তবে তাদের কাজ দেওয়ার পরও ভবন থেকে প্রতিষ্ঠানগুলোকে মালামাল সরিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিলে আপত্তি জানায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। মালামালসহ টেন্ডারে দাম উল্লেখ করেছিল জানিয়ে তারা পরিদর্শন করে বাড়তি দাম দাবি করে। তবে তাদের দাবি আমলে নেয়নি রাজউক। ওই ঘটনারও প্রায় আড়াই মাস পর শেষ পর্যন্ত ফোর স্টার ভাঙতে যাচ্ছে বিজিএমইএ ভবন।