মোহামেডানকে এক হালি দিয়ে আবাহনীর প্রতিশোধ
৪ মার্চ ২০২০ ২২:০৮
ঢাকা: বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের নিকট অতীতের তুলনায় আজ গ্যালারিতে দর্শক কম নয়। তবে যথেষ্টও নয়। দেশের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে উত্তেজনার ম্যাচ বলতে যা বোঝায়। ঢাকা ডার্বি। মোহামেডান বনাম ঢাকা আবাহনী। তবে ম্যাচটা তেমন ঝাঁঝালো আভাস দিয়ে শুরু হলেও শেষে এক তরফা হয়ে গেল বলা যায়। মোহামেডানকে বলতে গেলে উড়িয়ে দিয়ে গত লিগের প্রতিশোধ নিয়েছে আবাহনী।
কড়ায় গণ্ডায় হিসেব করেই যেন মোহামেডানের জালে এক হালি গোলের উৎসব করেছে আবাহনী। ঠিক গত লিগের শেষ ডার্বিতে একই ব্যবধানে আবাহনীকেও উড়িয়ে দিয়েছিল মোহামেডান।
তাই ম্যাচের আগে দুই দলের সমর্থকদের মধ্যেও চরম উত্তাপ বিরাজ করছিল। একদিকে শন লেনের জয়ের ধারা অব্যাহত রাখার টার্গেট, অন্যদিকে মারিও লেমসের প্রতিশোধের আগুন।
দুই বিদেশি কোচের লড়াইয়ে ডার্বিতে উত্তাপ ছড়ালেও ম্যাচের রেজাল্টই বলে দিচ্ছে আধিপত্য নিয়েই খেলেছে সর্বোচ্চ লিগজয়ীরা। সবচেয়ে সফল আকাশী-নীল শিবিরের ফরোয়ার্ড লাইনে। জোড়া গোল করে ম্যাচটাকে এক তরফা করে ফেলেছেন আবাহনীর হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড কারভেন্স বেলফোর্ট। গোল করেছেন জীবন, অ্যাসিস্ট করেছেন সানডে ও মাঝমাঠের এডগার বের্নহার্ড এক গোল করেছেন সঙ্গে করিয়েছেন একটি।
তবে আগের ডার্বিতে বড় জয় দেখা মোহামেডান আজকেও ভয় দেখিয়েই শুরুটা করেছিল। সব সকালই যে দিনের পূর্বাভাস দেয় না, সেটাই প্রমাণ করেছে মতিঝিলের দলটি। দশ মিনিটের পরই ম্যাচের লাটাইটা নিজের হাতে নিয়ে নেয় আবাহনী।
ম্যাচের ১৬ মিনিটেই লিড নিয়ে নেয় আবাহনী। মামুনুল ইসলামের কর্নার থেকে লাফিয়ে হেডে দারুণ গোল করে মোহামেডানকে হঠাৎ করে চমকে দিয়ে বল জালে জড়ান বেলফোর্ট। ব্যস এভাবেই ম্যাচে ব্যাকফুটে যাওয়া শুরু মোহামেডানের।
ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করতে থাকে শন লেনের শিষ্যরা। ছোট দুয়েকটি আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছিল সাদা-কালোরা। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ৩৩ মিনিটের মাথায় ব্যবধান দ্বিগুণ করে ফেলে আবাহনী। বেলফোর্টের দেয়া চিপ পাস থেকে ডি বক্সের ভেতরে নিয়ে এডগারের বুলেট ভলি শট হিমেলকে বোকা বানিয়ে চলে যায় জালে। ব্যবধান ২-০ করে ফেলে আবাহনী।
বিরতিতে যাওয়ার আগেই যেন ম্যাচটাকে পকেটে পুড়ে নেয় আবাহনী। এবার গোলদাতা আর অ্যাসিস্টদাতার নাম অদল-বদল। এডগার ক্রস করলেন ডান প্রান্ত থেকে, সানডে-বেলফোর্ট দুইজনই ছিলেন বক্সের ভেতর। সানডে ডামি করে বল ছাড়লেন, বেলফোর্ট সুন্দর প্লেসিং শটে প্রথমার্ধের আগেই দলকে এগিয়ে নিলেন ৩-০ তে।
বিরতির পর এসে লক্ষ্যহীন আরও কিছু আক্রমণ দেখা যায় তিন গোলে পিছিয়ে থাকা মোহামেডানের কাছে। এতে অবশ্য আবাহনীর জমাট রক্ষণ ভেদ করতে পারেনি মোহামেডান। উল্টো এক হালি হজম করে বসে। ৬৩ মিনিটে সানডের পাস থেকে এবার মোহামেডানের কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকে দেন নবীব নেওয়াজ জীবন।
ব্যস আবাহনীর প্রতিশোধ নেয়াও শেষ। ৪-০ ব্যবধানে স্বস্তির জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আবাহনী। পয়েন্ট টেবিলেও চার ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে লিগের টেবিলের শীর্ষে উঠে গেল আবাহনী। মোহামেডান ছয় পয়েন্ট নিয়ে আছে ছয়ে।