Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জামিনে থাকার পরও ৮০ বছরের বৃদ্ধকে গ্রেফতারের অভিযোগ


২০ আগস্ট ২০২০ ২১:১০

চট্টগ্রাম ব্যুরো: জামিনে থাকার পরও একবছর আগের গ্রেফতারি পরোয়ানামূলে পুলিশ ৮০ বছরের এক বৃদ্ধকে গ্রেফতার করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আবার গ্রেফতার হওয়া বৃদ্ধকে কারাগারেও পাঠিয়েছেন আদালত। পুলিশ জানিয়েছে, জামিন আদেশের কোনো নথি আসামিপক্ষ থানায় জমা দেননি। তবে আসামির আইনজীবীর দাবি, থানায় জামিনের নথি জমা দেওয়া হলেও পুলিশ আমলে নেয়নি।

বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) চট্টগ্রামের মীরসরাই থানা পুলিশ ওই বৃদ্ধকে গ্রেফতার করে। দুপুরে তাকে চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদের আদালতে হাজির করে।

গ্রেফতার জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (৮০) মীরসরাই উপজেলা সদরের পশ্চিম কিছমত জাফরাবাদ গ্রামের মোজাফফর আলী চৌধুরী বাড়ির মৃত বজলুর ছোবহান চৌধুরীর ছেলে। জাতীয় পরিচয়পত্রে জাহাঙ্গীরের জন্ম তারিখ ১৯৪০ সালের ২ সেপ্টেম্বর উল্লেখ আছে।

আইনজীবী রহিমা আক্তার সারাবাংলাকে জানান, ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে যৌতুকের দাবিতে মারধরের অভিযোগে পুত্রবধূর দায়ের করা এক মামলার (১১৭/২০১৯) দুই নম্বর আসামি জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ওই মামলায় ২০১৯ সালের ১ আগস্ট তার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর তিনি ট্রাইব্যুনাল থেকে জামিন পান।

আইনজীবীর দাবি, ২০১৯ সালের ১ অক্টোবর জামিন আদেশের নথি আসামির ঠিকানা অনুযায়ী মীরসরাই থানায় জমা দেওয়া হয়। সেসময় থানায় কর্মরত ডিউটি অফিসার নথি গ্রহণ করেন। এরপর থেকে তিনি নিয়মিত আদালতে হাজিরা দেন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থতিতে লকডাউনের কারণে গত প্রায় চার মাস ধরে আদালত বন্ধ থাকায় মামলার কার্যক্রমও বন্ধ ছিল।

এরপর বৃহস্পতিবার আকস্মিকভাবে বাসায় গিয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে মীরসরাই থানা পুলিশ গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের সময় ২০১৯ সালের ১ আগস্ট জারি হওয়া পরোয়ানার বিষয়টি উল্লেখ করে পুলিশ। জামিনে থাকার বিষয়টি বলা হলেও পুলিশ সেটি আমলে নেয়নি বলে দাবি আইনজীবীর।

রহিমা আক্তার সারাবাংলাকে বলেন, ‘গ্রেফতারের পর আসামিকে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ স্যারের আদালতে হাজির করা হয়। আমরা জামিনের নথি উপস্থাপন করে জামিনের আবেদন করি। আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন। এরপর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুন্নাহার রুমি ম্যাডামের আদালতে বিষয়টি পুনরায় বিবেচনার জন্য পেশ করি। সেই আদালতেও আবেদন নাকচ করে আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ৮০ বছরের একজন বৃদ্ধ, ওনাকে বিনা কারণে পুলিশ হয়রানি করেছে। এর প্রতিকার চেয়ে আমরা উচ্চ আদালতে রিট করবো।’

জানতে চাইলে মীরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মুজিবুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা সকালে উনাকে (আসামি) বাসা থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানামূলে গ্রেফতার করি। নিয়ম অনুযায়ী তাকে আদালতে পাঠাই। এরপর শুনতে পাই যে, উনি জামিনে আছেন। তখন বিষয়টি কোর্ট ইন্সপেক্টর এবং আদালতকে অবহিত করি। কিন্তু আদালত বলেছেন- জামিনের নথি দেখে সেটি ভেরিফাইড কি না সন্দেহ আছে। সেজন্য আদালত আসামিকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন।’

নিয়ম অনুযায়ী জামিনের নথি থানায় জমা হয়েছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি পাইনি। রেজিস্ট্রারে আছে কি না সেটি আমি দেখিনি। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে- ওনাকে গ্রেফতারের সময় আমার নলেজে কেউ সেটা দেননি।’

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পরিদর্শক (প্রসিকিউশন) সুব্রত ব্যানার্জী সারাবাংলাকে বলেন, ‘এটি ফেনীর ট্রাইব্যুনালের মামলা। জামিনের নথি থাকলে ট্রাইব্যুনালের রেকর্ডে থাকবে। পুলিশের কাছে থাকার কথা না। আদালত বলেছেন, যেহেতু ফেনী থেকে জামিন পেয়েছেন আসামি, বিষয়টি ভেরিফাই করার সুযোগ চট্টগ্রামের আদালতের নেই। আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যদি সত্যিই তিনি জামিনে থাকেন, সেটা ফেনীর সংশ্লিষ্ট আদালতে উপস্থাপন করলে উনি অবশ্যই ন্যায়বিচার পাবেন।’

আদালত গ্রেফতার জামিন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর