ধর্মীয় উসকানি ছড়ানোর অভিযোগ আ.লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে
১৮ জানুয়ারি ২০২১ ১৯:৩২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে সংরক্ষিত ওয়ার্ডের এক কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে ধর্মীয় উসকানি ছড়িয়ে কর্মীদের দিয়ে তার পোস্টার পোড়ানোর অভিযোগ এনেছেন। তবে আওয়ামী লীগের ওই কাউন্সিলর প্রার্থী এ ঘটনার সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন।
সোমবার (১৮ জানুয়ারি) চসিকের সংরক্ষিত ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী রাধা রাণী দেবী প্রতিদ্বন্দ্বী হুরে আরা বিউটির বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ করেছেন।
রাধা রাণী দেবীও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। দলের সমর্থন না পেয়ে তিনি নগরীর দক্ষিণ কাট্টলী, রামপুর ও উত্তর হালিশহর ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত সংরক্ষিত ১০ নম্বর ওয়ার্ড থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন।
হুরে আরা বিউটি চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এ কে এম বেলায়েত হোসেনের মেয়ে। তিনি নগর মহিলা আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য।
রাধা রাণী দেবী সারাবাংলাকে জানান, শনিবার রাতে নগরীর হালিশহর থানার সবুজবাগ এলাকায় সনাতন ধর্ম ও ধর্মাবলম্বীদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করে কয়েকজন তরুণ-যুবক তার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে এবং পরে সেগুলো স্তূপ করে আগুন ধরিয়ে দেয়। রোববার এ সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ঘটনায় জড়িতরা হুরে আরা বিউটির কর্মী দাবি করে লিখিত অভিযোগে তিনি বলেছেন, সনাতন সম্প্রদায়ের ভোটারদের পরিকল্পিতভাবে ভয়ভীতি দেখানোর উদ্দেশে তারা ফেসবুকে ভিডিওটি আপলোড করেছেন। এ অবস্থায় তিনি নিজের জীবন এবং ভোটের পরিবেশ নিয়ে শঙ্কিত।
রাধা রাণী দেবী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমি ছাত্রলীগ করেছি, এখন আওয়ামী লীগ করি। অথচ আওয়ামী লীগের পরিচয় দিয়ে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী হুরে আরা বিউটি এবং তার বাবা এলাকায় রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। ধর্মীয় উসকানি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন তারা। এজন্য আমার নির্বাচনি এলাকার প্রায় ৩২ হাজার সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোটার আজ শঙ্কিত। তারা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে আদৌ ভোট দিতে পারবেন কি না সেটা নিয়ে সন্দিহান। আমি নির্বাচন কমিশন এবং থানায় অভিযোগ দিয়েছি। ভোটের পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে আশা করি তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেবে।’
জানতে চাইলে হুরে আরা বিউটি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধু ও জননেত্রী শেখ হাসিনার অসাম্প্রদায়িক আদর্শে বিশ্বাসী একজন রাজনৈতিক কর্মী। আমি কেন এ ধরনের সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক কাজ করব? এ ঘটনার আমিও নিন্দা জানিয়েছি। যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, আমি তাদের গ্রেফতার দাবি করেছি। উনি (রাধা রাণী) যে বলছেন তারা আমার কর্মী, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য। উনি কি প্রমাণ করতে পারবেন যে, ওরা আমার কর্মী ? সহানুভূতি পাবার আশায় উনি বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন।’
লিখিত অভিযোগ পাবার কথা স্বীকার করে চসিক নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘অভিযোগ পাবার সঙ্গে সঙ্গে আমি পুলিশকে চিঠি দিয়েছি। ঘটনা তদন্ত করে এর সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’
তবে এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের কারও বক্তব্য জানতে পারেনি সারাবাংলা।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই