Sunday 29 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ব্যাংকিং খাতে অতিরিক্ত তারল্য ২ লাখ কোটি টাকার: গর্ভনর

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
৪ জুন ২০২১ ১৯:৫৮

ঢাকা: ব্যাংকিং খাত থেকে বড় অঙ্কের ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে থাকলেও তারল্য সংকট হবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড. ফজলে কবির।

তিনি বলেন, বাজেটের ঘাটতির অর্থায়নের জন্য ব্যাংক থেকে ৭৬ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হলেও ব্যাংক খাতে কোনো তারল্য সংকট তৈরি হবে না। কারণ এই মুহূর্তে ব্যাংক খাতে ২ লাখ কোটি টাকার বেশি অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে। এই টাকার মধ্যে ৪০ হাজার কোটি টাকা ক্যাশ লিকুইডিটি রয়েছে। বাকি টাকা বন্ডে বিনিয়োগ করা আছে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (৪ জুন) বিকেল অর্থমন্ত্রীর বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত থেকে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মতো এ বছরও শারীরিক উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা যায়নি, ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে তা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আরও পড়ুন-

সংবাদ সম্মেলনে ড. ফজলে কবির বলেন, অর্থমন্ত্রী একটি সময়োপযোগী বাজেট দিয়েছেন। বর্তমানে আমাদের মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৫ শতাংশের নিচে রয়েছে। আগামী বাজেটে মূল্যস্ফীতির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৩ শতাংশ। বর্তমানে আমরা ৫ দশমকি ৫ শতাংশের নিচে রয়েছি। আবার আমাদের বাজেট ঘাটতিও ৬ দশমিক ১ শতাংশের নিচে রয়েছে। আগামী বছর এটি ৬ দশমিক ২ শতাংশ ধরা হয়েছে। আমাদের মানি এক্সচেঞ্জ রেটও বেশ ভালো অবস্থানে রযেছে। বর্তমানে এক ডলার সমান ৮৪ দশমিক ৮ টাকা। বলা যায় আমাদের অর্থনীতির সব সূচক বেশ মজবুত অবস্থায় রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, এ অবস্থায় অর্থমন্ত্রী যে সম্প্রসারণমূলক বাজেট দিয়েছেন, আমরা এই বাজেটের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি ঘোষণা করব। মুদ্রানীতি ঘোষণার লক্ষ্য হবে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন এবং মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ রাখা। এই দুইটি লক্ষ্য নিয়ে আগামী মুদ্রানীতির ঘোষণা করা হবে।

প্রণোদনা প্যাকেজ নিয়ে গভর্নর বলেন, অনেকেই বলে থাকেন— প্রণোদনা প্যাকেজের অর্থ বড়দের, বিত্তবানদের কিংবা বড় ব্যবসায়ীদের ফেভারে দেওয়া হচ্ছে। এটি একেবারেই সঠিক কথা না। অথচ এই কথাটি সাংবাদিকসহ অনেক অর্থনীতিবিদও বলে থাকেন। প্রকৃত ঘটনা হলো— আমাদের প্রণোদনা প্যাকেজের মধ্যে সবচেয়ে বড় প্যাকেজ ছিল ৪০ হাজার কোটি টাকার, যেটি ছিল ক্ষতিগ্রস্ত বৃহৎ শিল্প ও সেবা খাতের জন্য। এই ৪০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজ থেকে ৮২ শতাংশ অর্থ ঋণ হিসেবে বিতরণ করা হয়েছে। এই প্যাকেজ থেকে ঋণ দেওয়া অর্থের পরিমাণ ৩২ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা, এর আওতায় ৩ হাজার ২৫৭ জন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ঋণ নিয়েছেন।

তিনি বলেন, অন্যদিকে এসএমই খাতের ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার ৭৪১ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এটি মোট টাকার ৭৩ দশমিক ৭ শতাংশ। এছাড়াও আরও ১ হাজার কোটি টাকার বেশি অর্থ বিতরণের জন্য অনুমোদন দেওয়া আছে। তা বিতরণের অপেক্ষায় রয়েছে। এসএমই খাতের প্যাকেজ থেকে ঋণ সুবিধা পেয়েছেন ৯৬ হাজার ১১১ জন। অন্যদিকে কৃষি খাতের ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনার মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৯৯৬ কোটি টাকা। এটি মোট প্যাকেজের ৭৯ দশমিক ৯ শতাংশ। কৃষি প্রণোদনা থেকে ১ লাখ ৭২ হাজার ৩৯০ জনের মাঝে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেন, বিতরণ করা সবগুলো প্যাকেজের ঋণের মেয়াদ তিন বছর। ঋণ গ্রহণকারী উদ্যেক্তাদের ব্যাংক প্রয়োজনে আবার দ্বিতীয় মেয়াদে ঋণ দিতে পারবে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী সময়োপযোগী বেশকিছু প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে তিন হাজার কোটি টাকার একটি প্রণোদনা প্যাকেজ ছিল। সেই প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে সুবিধা পেয়েছেন ৩ লাখ ২৮ হাজার ৫৪৭ জন। এই প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ১ হাজার ৮৩২ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এটি মোট টাকার ৬১ দশমিক ৮ শতাংশ।

অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আবদুর রউফ বলেন, ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজ পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত প্যাকেজ চলবে, তাতে যতদিনই লাগুক না কেন। প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী আরও প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হবে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ২৩টি প্রণোদনা প্যাকেজের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ছয়টি প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করছে। এই প্যাকেজগুলোর অর্থের পরিমাণ প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা। এটি মোট প্যাকেজের প্রায় ৭০ শতাংশ। অবশিষ্ট ৩৮ হাজার ৪৪১ কোটি টাকার ৩০ শতাংশ প্রণোদনা প্যাকেজ বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক যে ছয়টি প্রণোদনা প্যাকেজ বাস্তবায়ন করছে, তাতে বছরে সুদ বাবদ ভর্তুকি দিতে হচ্ছে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে এই ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে।

সচিব বলেন, স্বাস্থ্য খাতে এবার ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত বছরের চেয়ে ১৩ শতাংশ অর্থ বেশি বরাদ্দ করা হয়েছে। ভ্যাকসিন কেনার জন্য বাজেটে ১৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এই টাকা দিয়ে আগামী একবছর প্রয়োজনীয় সব ভ্যাকসিন কেনা যাবে।

সারাবাংলা/জিএস/টিআর

গভর্নর টপ নিউজ ড. ফজলে কবির বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন বাংলাদেশ ব্যাংক

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

দশম গ্রেড দাবি করায় ৬৪ অডিটরকে বদলি
২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৩৫

সম্পর্কিত খবর