‘লকডাউনের নামে জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছে সরকার’
২২ জুন ২০২১ ২১:৫৯
ঢাকা: লকডাউনের নামে সরকার জনগণের সঙ্গে প্রতারণা করছ বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার (২২ জুন) দুপুরে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ঢাকাসহ সাত জেলায় করোনা সংক্রমণের ভয়াবহ পরিস্থিতি এবং সরকারের নেওয়া পদক্ষেপের সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটি (লকডাউন) ওয়ার্কেবল না কিন্তু। এটি কাজ করে না। ঢাকাতেও লকডাউন আছে। আপনি লকডাউন কোথাও দেখতে পান? কোথায় লকডাউন? আমি তো দেখতে পাই না। যার যেখানে খুশি যাচ্ছে, যার যেখানে যা খুশি করছে এমনকি বিয়েও হচ্ছে। আমি পরশু দিন দেখলাম একটি হোটেলে বিয়েও হচ্ছে। লকডাউন সরকারের পুরোপুরি উদাসীনতা এবং লোক দেখানো ব্যাপার। এটি মানুষের সঙ্গে প্রতারণা।’
মির্জা ফখরুল বলেন, খেয়াল করে দেখবেন, ’ল এনফোর্সিং এজেন্সিজ, যাদের এই লকডাউন ইমপ্লিমেন্ট করার কথা, তাদেরও দেখা যায় না আজকাল। দে আর নট ভিজিবল, তারা ভিজিবল না এখন। আমি আগেও বলেছি, আর বলতে চাই না। বিশেষ প্রাণী পানি খায়, ঘোলা করে খায় আর কী। আমরা বহু আগেও তাদের (সরকার) বার বার সুনির্দিষ্টভাবে বলেছি, করোনা মোকাবিলায় এসব ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তারা নেননি। বহুদিন পরে তারা এখন এসব ব্যবস্থা (লকডাউন) নিচ্ছেন।’
‘এখন আর বলতে ইচ্ছা করে না। কী বলবেন! এদের তো চামড়া মোটা। এই স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কবেই পদত্যাগ করা উচিত ছিল। তিনি করেন নাই। দুর্ভাগ্যজনকভাবে উল্টো তারা ডিফেন্ড করছে সবাই সবাইকে। খুব ভালো কাজ করছে। এত ভালো স্বাস্থ্যমন্ত্রী না কি আর হয় না,’— বলেনমির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশ্লিষ্ট সেবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়াকে দুরভিসন্ধিমূলক অভিহিত করে তিনি বলেন, ‘এনআইডি প্রকল্পের বিষয়ে ইসি চিঠি দেওয়ার পরও সরকার সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে দুই লাইনের একটি চিঠি দিয়ে। এটি অত্যন্ত দুরভিসন্ধিমূলক পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়েও তারা (সরকার) একটি চক্রান্ত, একটি ষড়যন্ত্র করতে যাচ্ছে, যেন তারা জনগণের পরিচয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এটি সত্যি কথা যে পরিচয়পত্র দেওয়ার ব্যাপারটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতেই থাকা উচিত। কিন্তু বাংলাদেশে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ উল্টো। এখানে আওয়ামী লীগের সরকারে যারা আছে, তারা একে পুরোপুরিভাবে রাজনৈতিক কাজে ব্যবহার করবে বলে সবাই বিশ্বাস করে। এটা শুধু বিএনপির কথা নয়, নির্বাচন কর্মকাণ্ডসহ অন্যান্য বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা যুক্ত, এনজিও যারা আছেন তারা সবাই বলছে যে এটি কোনোভাবেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে যাওয়া উচিত নয়। তাহলে সরাসরি সরকারের হাতে পড়ে যাবে। সেক্ষেত্রে সংবিধানে যে ইসির অন্তত একটি স্বতন্ত্র স্ট্যাটাস আছে, সে অনুযায়ী এই সেবাটি তাদের হাতে থাকাটাই বেটার বলে করি আমরা মনে করি এবং সবাই মনে করছেন।’
দেশে বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশ নেই অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত আঙ্কটাডের রিপোর্টে বলা হয়েছে, এখানে বিদেশি বিনিয়োগ প্রায় ১১ শতাংশ কমে গেছে। এর কারণ হচ্ছে, এখানে বিদেশিদের বিনিয়োগ করার কোনো পরিবেশ নেই। এখানে বিনিয়োগের কোনো পরিবেশ বিরাজ করে না।’
সারারাবাংলা/এজেড/টিআর