এফআর টাওয়ার: মালিক ফারুক ও সাবেক রাজউক চেয়ারম্যানের বিচার শুরু
১৮ অক্টোবর ২০২১ ১৬:০৮
ঢাকা: বনানীর এফআর টাওয়ারের নকশা জালিয়াতির ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ভবনটির মালিক এস এম এইচ আই ফারুক ও সাবেক রাজউক চেয়ারম্যান হুমায়ূন খাদেমসহ চার জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। রাজউকের সাবেক অথোরাইজড অফিসার সৈয়দ মকবুল আহমেদ মারা যাওয়ায় তাকে এই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে মামলাটির আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
সোমবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে ঢাকার বিভাগীয় স্পেশাল জজ সৈয়দ কামাল হোসেনের আদালত চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের এই আদেশ দেন। আগামী ১৫ নভেম্বর এই মামলায় সাক্ষ্য নেওয়ার তারিখ নির্ধারণ করেছেন আদালত।
মামলার বাকি দুই আসামি হলেন— রূপায়ন গ্রুপের কর্ণধার লিয়াকত আলী খান মুকুল ও রাজউকের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইদুর রহমান। বিচার শুরু হওয়া চার আসামি জামিনে আছেন।
আরও পড়ুন-
- এফআর টাওয়ারের মালিক ফারুক গ্রেফতার
- সরে যাচ্ছে এফআর টাওয়ারের অনেক অফিস
- এফআর টাওয়ারের মালিক ফারুকের জামিন মঞ্জুর
- এফআর টাওয়ারে আগুন: হতাহতের সংখ্যা বাড়ে ৬ কারণে
- এফআর টাওয়ারের তথ্য চেয়ে সরকারি ৯ দফতরকে দুদকের চিঠি
- এফআর টাওয়ার মামলায় সাইদুর রহমানকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
- এফআর টাওয়ারে আগুন: দায়িত্ব পালন করেনি রাজউক-দমকল বাহিনী
- এফআর টাওয়ারে আগুন: সাবেক ইমারত পরিদর্শক আওরঙ্গজেবের জামিন
- এফআর টাওয়ারের নকশা জালিয়াতির মামলায় ৩ জনকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
সোমবার আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন করেন।
দুই পক্ষের শুনানি শেষে আদালত আসামিপক্ষের কাছে জানতে চান, তারা দোষী না নির্দোষ। এসময় আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার প্রার্থনা করেন। এরপর আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ।
২০১৯ সালের ২৫ জুন দুদকের উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক বাদী হয়ে ঢাকা সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১-এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরের ২৯ অক্টোবর পাঁচ জনের বিরুদ্ধে একই কর্মকর্তা অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, এফআর টাওয়ার ভবনটি ১৫ তলা পর্যন্ত নির্মাণের অনুমোদন থাকলেও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা ১৯৯৬ লঙ্ঘন করে নকশা জালিয়াতির মাধ্যমে ১৮ তলা পর্যন্ত ভবন নির্মাণ করা হয়েছিল।
২০১৯ সালের ২৮ মার্চ দুপুরে বনানীর এই ভবনের অষ্টম তলায় আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিস দীর্ঘ ছয় ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও এরই মধ্যে ২৬ জনের মৃত্যু হয়। এছাড়াও আগুনে দগ্ধসহ আহত হন আরও ৭৩ জন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, এ ভবনের জমির মালিক প্রকৌশলী এস এম এইচ আই ফারুক। টাওয়ারের বর্ধিত অংশের মালিক তাসভিরুল ইসলাম, রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান ওরফে মুকুল এবং এফ আর টাওয়ার বিল্ডিং ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা অসৎ উদ্দেশ্যে আর্থিক সুবিধার লোভে নির্মাণ বিধিমালা না মানায় এফআর টাওয়ারে এই মর্মান্তিক আগুন লাগে।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ১৯৯৬ সালে এফআর টাওয়ারের নকশা অনুমোদন দেওয়া হয়। অনুমোদিত নকশায় ভবনের উচ্চতা ছিল ১৮ তলা। কিন্তু নির্মাণ বিধিমালা না মেনে ভবনটি ২৩ তলা করা হয়েছে। পরে ২০০৫ সালে এফআর টাওয়ারের মালিকপক্ষ রাজউকের কাছে আরেকটি নকশা জমা দেয়। ১৯৯৬ সালে মূল যে নকশা রাজউক অনুমোদন দিয়েছিল, তার সঙ্গে নির্মিত ভবনটির অনেক বিচ্যুতি রয়েছে।
সারাবাংলা/এআই/এসএসএ