৬ সদস্যের সার্চ কমিটি, রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্য ছহুল-আনোয়ারা
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১৩:১৩
ঢাকা: নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে প্রধান করে ছয় সদস্যের সার্চ কমিটি গঠন করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। এই সার্চ কমিটি নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য নাম সুপারিশ করবেন।
শনিবার (৫ জানুয়ারি) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে সার্চ কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান, মহাহিসাব নিরীক্ষক (সিএজি) মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরী এবং সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন।
কমিটিতে রাষ্ট্রপতি মনোনীত সদস্য রয়েছেন দু’জন বিশিষ্ট নাগরিক। তারা হলেন— সাবেক নির্বাচন কমিশনার মো. ছহুল হোসাইন এবং কথাসাহিত্যিক ও মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আনোয়ারা সৈয়দ হক।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়— প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার আইন ২০২২-এর ধারা ৩ অনুযায়ী প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের যোগদানের জন্য আইনে বর্ণিত যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের নাম সুপারিশ করার লক্ষ্যে অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হলো।
অনুসন্ধান কমিটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন-২০২২ অনুযায়ী দায়িত্ব ও কার্যাবলী সম্পন্ন করবেন। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ অনুসন্ধান কমিটির কার্য সম্পাদনে প্রয়োজনীয় সাচিবিক সহায়তা প্রদান করবেন।
কে এম নুরুল হুদার নেতৃত্বে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। এর আগেই নবগঠিত সার্চ কমিটিকে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য নাম সুপারিশ করতে হবে। সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।
সার্চ কমিটির কাজ সম্পর্কে আইনে বলা হয়েছে, এ কমিটি স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার নীতি অনুসরণ করে দায়িত্ব পালন করবে।
আইনে বেধে দেওয়া যোগ্যতা, অযোগ্যতা অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ও সুনাম বিবেচনা করে সিইসি ও নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগের জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করবে।
এ অনুসন্ধান কমিটি সিইসি ও কমিশনারদের প্রতি পদের জন্য দুই জন করে ব্যক্তির নাম সুপারিশ করবে। কমিটির গঠনের ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশ রাষ্ট্রপতির কাছে জমা দিতে হবে।
সার্চ কমিটি সিইসি এবং নির্বাচন কমিশনার পদে যোগ্যদের অনুসন্ধানের জন্য রাজনৈতিক দল এবং পেশাজীবী সংগঠনের কাছ থেকে নাম আহ্বান করতে পারবে।
গত ২৭ জানুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদের ষোড়শ অধিবেশনে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ পাসের প্রস্তাব করেন। এরপর তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। ২৯ জানুয়ারি বিলে সই করেন রাষ্ট্রপতি। এরপর ৩০ জানুয়ারি তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।
সংসদে উত্থাপন হওয়ার পর বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। কমিটি দুটি সংশোধনী এনে পাসের সুপারিশ করলে ধারা দুটি সংশোধন করে বিলটি পাস হয়।
প্রথমে বিলটির নাম ছিল ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল’। সংসদে সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে নাম হয় ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল’। রাষ্ট্রপতি সই করার পর নাম হয় ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং অন্যান্য নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ আইন, ২০২২’।
এর আগে নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। ওই সংলাপে ইসি গঠন আইনের ওপর তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি।
আরও পড়ুন
♦ যা আছে ইসি গঠন আইনে
♦ ‘ইসি গঠন আইন যে লাউ, সেই কদু’
♦ সার্চ কমিটির মাধ্যমে সরকার ‘ছাগল’ খুঁজছে
♦ ইসি গঠন আইন প্রত্যাহার করুন: এমপি হারুন
♦ সার্চ কমিটি করে লাভ হবে না: আকবর আলি খান
♦ ইসি গঠন আইনে অপূর্ণতা রয়েছে: এ টি এম শামসুল হুদা
♦ তাড়াহুড়ো করে ইসি গঠন আইন করা ঠিক হবে না: আইনমন্ত্রী
♦ ইসি গঠনে খসড়া আইন ও সার্চ কমিটির জন্য প্রজ্ঞাপন অভিন্ন: সুজন
♦ সংবিধানের আলোকে সার্চ কমিটির মাধ্যমে ইসি গঠন করতে হবে
♦ ‘ইসি গঠনে আইন আরেকটি পাতানো নির্বাচনের নীলনকশা’
♦ ইসি গঠন আইনের খসড়ায় যে দুটি পরিবর্তনের সুপারিশ
সারাবাংলা/একে