রাজধানীর নিউমার্কেট আজও বন্ধ
২০ এপ্রিল ২০২২ ১২:০১
ঢাকা: সোমবার রাত ও মঙ্গলবার দিনভর সংঘর্ষের পর আজ বুধবারও (২০ এপ্রিল) বন্ধ রয়েছে রাজধানী নিউমার্কেট। সকাল থেকে নিউমার্কেটের সামনের সড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক থাকলেও খোলা হয়নি দোকানপাট। এমনকি দেখা যায়নি ব্যবসায়ীদের।
অন্যদিকে রাজধানীর নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বুধবার (২০ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের সামনে অবস্থান নিয়েছেন ধানমন্ডি আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে ঝরা বৃষ্টি উপেক্ষা করেই তারা সেখানে অবস্থান নেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, কলেজ ড্রেস পরিহিত প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী ঢাকা কলেজ গেটে জড়ো হয়। পরে তারা স্লোগান দিতে দিতে মিছিল সহকারে ঢাকা কলেজের ভেতরে প্রবেশ করে।
আইডিয়াল কলেজের প্রথমবর্ষের শিক্ষার্থী হৃদয় সারাবাংলাকে বলেন, আমরা ঢাকা কলেজের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এখানে অবস্থান নিয়েছি। আমরা তাদের সঙ্গে আছি।
উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কলেজের উল্টোদিকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি দেখা গেছে।
আরও পড়ুন-
- নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী-শিক্ষার্থী সংঘর্ষ
- ঢাকা কলেজের ঘটনা পূর্বপরিকল্পিত: শিক্ষামন্ত্রী
- ‘লাশ হয়ে বের হব, তবুও হল-ক্যাম্পাস ছাড়ব না’
- শিক্ষার্থী-ব্যবসায়ী সংঘর্ষে নিউমার্কেট আবারও রণক্ষেত্র
- মীমাংসা করতে গিয়ে ব্যবসায়ীদের তোপের মুখে শিক্ষকরাও
- বিকেলের মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের
- নিউমার্কেট এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণ-অগ্নিসংযোগ, নিষ্ক্রিয় পুলিশ
এদিকে ঢাকা কলেজের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে আন্দোলনে যোগ দেওয়ার পূর্ব ঘোষণা মোতাবেক ঢাকা কলেজের আশপাশে জড়ো হতে শুরু করেছেন রাজধানীর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। সাত কলেজ আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ইসমাইল সম্রাট সারাবাংলাকে বলেন, বৃষ্টির জন্য সবার আসতে কিছুটা দেরি হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যেই ঢাকা কলেজের সামনে জড়ো হচ্ছি।
সোমবার (১৮ এপ্রিল) মধ্যরাতের দিকে নিউমার্কেট এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে এসে মঙ্গলবার (১৯ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে ঘটনার সময়কার আশপাশের এলাকার ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি ক্যামেরা) ফুটেজ বিশ্লেষণ করলে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলামের বক্তব্যেও উঠে এসেছে একই তথ্য।
মঙ্গলবার রাতে আমিনুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, শিক্ষার্থীদের চাঁদাবাজি বা কম দামে পণ্য কেনার কোনো বিষয় নয়, বরং নিউমার্কেটে মারামারির শুরুটা হয়েছিল ফাস্ট ফুড আইটেমের দুই দোকানের কর্মচারীর বাকবিতণ্ডা থেকে। আমরা এমন তথ্যই জানতে পেরেছি। তবে ওই দুই দোকানের যেসব কর্মচারী জড়িত ছিল, তাদের কাউকে এখনো পাওয়া যায়নি। দুই দোকানের মালিককেও এখনো পাইনি।
গণমাধ্যমে আসা ওই সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, বাদানুবাদের সূত্রপাত চন্দ্রিমা মার্কেটের চার নম্বর গেটের দুই ফাস্ট ফুডের দোকান ওয়েলকাম ও ক্যাপিটালের মধ্যে। ওয়েলকামের কর্মচারী বাপ্পী ও ক্যাপিটালের কর্মচারী কাওসারের মধ্যে সোমবার সন্ধ্যায় কথা কাটাকাটি হয়। পরে রাত ১১টার দিকে তারা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। ওই সময় বাপ্পী ধারালো অস্ত্রধারী ১০-১২ জনকে নিয়ে কাওসারকে হুমকি-ধমকি দিলে কাওসার দোকানের চাপাতি-চাকু নিয়ে তাদের ওপর হামলা করেন।
এরপর বাপ্পী সেখান থেকে পালিয়ে যান। তবে কিছু সময় পরেই তিনি আরও লোকজন নিয়ে এসে কাওসারের ওপর হামলা করেন। জানা গেছে, বাপ্পীর সঙ্গে আসা এই ব্যক্তিরা তার ঢাকা কলেজের ‘বন্ধু-বান্ধব’। এই হামলার সময় রামদা হাতে সাদা টি-শার্ট পরা এক তরুণের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি দল মার্কেটে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। এর পরপরই পুরো এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে।
সারাবাংলা/এসএসএ/এএম