পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরে না এলে কী লাভ— প্রশ্ন অর্থমন্ত্রীর
১০ জুন ২০২২ ১৫:৫৫
ঢাকা: বিদেশে পাচার হয়ে যাওয়া টাকা কর দিয়ে প্রশ্নহীনভাবে দেশে ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে। বাজেট উত্থাপনের পর থেকেই সমালোচনা হচ্ছে এই বিষয়টি নিয়ে। অর্থমন্ত্রীর বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনেও ঘুরেফিরে এসেছে একই বিষয়ে প্রশ্ন। তবে অর্থমন্ত্রী পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেছেন— পাচার হওয়া টাকা যদি দেশে ফিরে না আসে, তাহলে দেশের মানুষের কী লাভ হবে।
শুক্রবার (১০ জুন) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী পাল্টা এ প্রশ্ন রাখেন। পাচার হওয়া টাকাকে তিনি অপ্রদর্শিত আয় হিসেবে দেখানোর কথা বলেছেন। পাচার হওয়া টাকায় দেশের মানুষের হক আছে— এমন মন্তব্যও করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়, বিদেশে অবস্থিত যেকোনো সম্পদের ওপর কর পরিশোধ করা হলে আয়কর কর্তৃপক্ষসহ কোনো কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করবে না। এ ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের সম্পদের ক্ষেত্রে ৭ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ পর্যন্ত করের প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে বাজেটে। অর্থমন্ত্রীর সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে প্রশ্ন রাখেন বেশ কয়েকজন সাংবাদিক।
আরও পড়ুন-
- বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী
- বাজেটে ধনী ও পাচারকারীদের জয় হয়েছে: সিপিডি
- কর দিলে বৈধ হবে পাচার করা টাকা, কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবেন না
- অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ পাচারকারীদের উৎসাহিত করবে: সিপিডি
জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, টাকার একটি ধর্ম রয়েছে। যেখানে মুনাফা বা রিটার্ন বেশি, টাকা সেখানে চলে যায়। ফলে নানা কারণেই টাকা বিদেশে চলে যেতে পারে। তার সবই অবৈধ নাও হতে পারে। এখন ডিজিটাল যুগে বিভিন্ন ধরনের টুলস ব্যবহার করে দেশের বাইরে টাকা চলে যেতে পারে।
তিনি বলেন, দেশ থেকে যদি টাকাগুলো পাচার হয়ে থাকে, সেই টাকায় তো দেশের মানুষের হক আছে। এখন যদি সেই টাকা দেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়, তাহলে সেই টাকা দেশে আসবে না। সেই টাকা দেশে না এলে লাভটা কী?
বিশ্বের অনেক দেশই এরকম টাকা নিজ নিজ দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ দিচ্ছে জানিয়ে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ইউরোপ ও আমেরিকার অনেক দেশই কিন্তু পাচার হয়ে যাওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সুযোগ দিয়েছে। জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, নরওয়ের মতো অনেক দেশই এই সুযোগ তাদের নাগরিকদের দিচ্ছে।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, টাকা পাচার করার যেসব অভিযোগ আমরা পেয়েছি, সেগুলো কিন্তু বিচারাধীন। মানি লন্ডারিং আইনে অনেকের বিচার হচ্ছে। ফলে সরকার যে অর্থ পাচার নিয়ে নিরুদ্যোগ, তা নয়। তবে আমাদেরও কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে। সবকিছু মেনেই কাজ করতে হয়।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবীর, পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন।
আরও পড়ুন-
- একনজরে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট
- দেশীয় শিল্পের বিকাশে ১১ খাতে ভ্যাট অব্যাহতি
- বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান গুরুত্ব পাচ্ছে বাজেটে
- বাজেট বক্তৃতায় ‘ফিনিক্স পাখি’র গল্প শোনালেন অর্থমন্ত্রী
- জাতির পিতার সোনার বাংলার সুবর্ণরেখা স্পর্শ করার প্রত্যয়
- গ্রামে ৫ হাজার, নগরে ১৭৬০ কিলোমিটার নতুন সড়ক হবে
- মোবাইল আর্থিক সেবাসহ ব্যবসায় কর সহজ করতে ৯ প্রস্তাব
- অর্থবছরের জন্য ৬ চ্যালেঞ্জ, বাজেটে উত্তরণে প্রত্যয়ী অর্থমন্ত্রী
- আগামী অর্থবছরই হবে মহামারির প্রভাব কাটিয়ে ওঠার শেষ বছর
সারাবাংলা/জিএস/টিআর
২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল পাচার হওয়া টাকা বাজেট ২০২২-২৩ বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলন