বিজ্ঞাপন

বাজেটে ধনী ও পাচারকারীদের জয় হয়েছে: সিপিডি

June 10, 2022 | 1:51 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

ঢাকা: অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য জাতীয় সংসদে যে বাজেট প্রস্তাবনা পেশ করেছেন, তার তীব্র সমালোচনা করেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। প্রস্তাবিত এই বাজেটে ধনী ও পাচারকারীদের জয় হয়েছে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (১০ জুন) সকালে রাজধানীর লেকশোর হোটেলে বাজেট পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলা হয়। প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সিপিডি। বাজেটের পর্যালোচনার বিস্তারিত তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সিপিডির কর্মকর্তারা।

সিপিডির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, এবারের বাজেটে যাদের টাকা-পয়সা আছে এবং উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের যারা টাকা পাচার করে, এই শ্রেণির জয় হয়েছে। গরিবের জন্যে বাজেটে তেমন কিছু নেই। বাজেটে সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত হয়েছে মধ্যবিত্ত শ্রেণি। এই মুহূর্তে ল্যাপটপের দাম বাড়ানো ঠিক হয়নি।

আরও পড়ুন-

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, সরকার ধরে নিয়েছে করোনা চলে গেছে। করোনা মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সরঞ্জামের ওপর কর আরোপ করা হয়েছে। এটি ঠিক হয়নি। কোনো কারণে করোনা মহামারি আবার ফিরে এলে ব্যবসায়ীরা তখন আরও বেশি মুনাফা করার সুযোগ পাবে। এটি ঠিক হয়নি।

অর্থমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেটে বিদেশে পাচার করা টাকা কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে দেশে ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ প্রস্তাবনার সমালোচনা করে ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার এই উদ্যোগের ফলে সৎ করদাতাদের নিরুৎসাহিত হবেন। যারা অবৈধভাবে বাইরে টাকা নিয়ে যান, এর মাধ্যমে প্রকারান্তরে তাদেরই উৎসাহিত করা হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, দুর্নীতির মাধ্যমে যারা টাকা নিয়ে গেছে, তাদের সুযোগ দেওয়া অনৈতিক। এই উদ্যোগে কোনো সফলতা বয়ে আনবে না। এছাড়া অবৈধ ও অপ্রদর্শিত আয় বৈধ করার ‍সুযোগ দীর্ঘ দিন ধরে দেওয়া হচ্ছে। তাতেও আমরা কোনো সাফল্য দেখতে পাচ্ছি না। রাজস্ব বাড়ানোর নামে এই যে উদ্যোগগুলো নেওয়া হচ্ছে, এগুলো একেবারেই সমর্থনযোগ্য নয়। অভ্যন্তরীণ সম্পদ সংগ্রহের প্রক্রিয়া হিসেবে এসব পদক্ষেপ একেবারেই ভ্রান্ত ও অনৈতিক।

সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নৈতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে অগ্রহণযোগ্য। তারা (অর্থ পাচারকারী) দেশের প্রচলিত আইন ভেঙেছে। এ ধরনের উদ্যোগ নীতি ও নৈতিকতার সঙ্গে খাপ খায় না। এর আগে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়ে তেমন লাভ হয়নি। আমার ধারণা যে উদ্যোগ (পাচার করা অর্থ কর দিয়ে দেশে ফিরিয়ে আনা) নেওয়া হয়েছে, তাতেও কোনো লাভ হবে না। রাজনৈতিক দিক থেকে এটি গ্রহণযোগ্য নয়, জনগণের কাছেও এটি বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থাপন করা যাবে না।

বিজ্ঞাপন

পাচার করা টাকা ফিরিয়ে আনার এই উদ্যোগের সমালোচনা করে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বেনামি টাকা বা পাচার হওয়া টাকা কর দিয়ে বিনা প্রশ্নে দেশে ফেরত আনার উদ্যোগ সৎ করদাতাদের ওপর স্রেফ চপেটাঘাত।

আরও পড়ুন-

সারাবাংলা/ইএইচটি/টিআর

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন