ইভানার আত্মহত্যার প্ররোচনায় স্বামী রুম্মনের বিরুদ্ধে চার্জশিট
২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৭:০৭
ঢাকা: ইংরেজি মাধ্যম স্কুল স্কলাসটিকার ক্যারিয়ার গাইডেন্স কাউন্সিলর ইভানা লায়লা চৌধুরীর (৩২) মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বামী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ মাহমুদ হাসান রুম্মানের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার আহসান হাবীব পলাশ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ইভানার আত্মহত্যার ঘটনায় গত বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর তার বাবা আমান উল্লাহ চৌধুরী শাহবাগ থানায় মামলা করেছিলেন। মামলা নম্বর ৪১। তদন্তভার পাওয়ার পর পিবিআই মামলাটি নিয়ে কাজ করে। তথ্য-উপাত্ত যাচাই করে আবদুল্লাহ মাহমুদ হাসান রুম্মানের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।’
বাংলদেশ দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ৩০৬ ধারা অনুযায়ী আবদুল্লাহ মাহমুদ হাসান রুম্মানের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অপর আসামি ইমপালস মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক মুজিবুল হক মোল্লাকে মামলা থেকে অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে।
আদালতে ইতোমধ্যে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। সুনির্দিষ্ট তারিখ বলতে না পারলেও পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার জানান, ১০-১২ দিন আগে এই চার্জশিট জমা দেওয়া হয়।
ইভানার আত্মহত্যার ঘটনাটি বেশ চাঞ্চল্যকর। শাহবাগ থানা পুলিশ প্রথমে মামলা নিতে গড়িমসি করছিল। এ ঘটনায় আগে হওয়া অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে ইভানার বাবার দেওয়া অভিযোগ তদন্ত করবে পুলিশ— এমনটি জানিয়ে ইভানার বাবাকে বিদায় দেন শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদার।
মামলা হওয়ার পরও চার্জশিট দাখিল নিয়ে গড়িমসির অভিযোগ ওঠে শাহবাগ থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। আদালতে একের পর এক পেছানো হয় চার্জশিট দাখিলের সময়ও। পরে বাদীপক্ষের আবেদনের ভিত্তিতে মামলাটি তদন্তের জন্য এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে পিবিআইকে দায়িত্ব দেন আদালত।
এর আগে, গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেলে রাজধানীর পরীবাগের (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের পেছন) নকশী প্যালেসের দুটি ভবনের মাঝখানে মেলে ইভানা লায়লা চৌধুরীর নিথর দেহ। ৯৯৯ এর কল পেয়ে শাহবাগ থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ১৬ সেপ্টেম্বর তার ময়নাতদন্ত হয়। ১৭ সেপ্টেম্বর দুপুরে বনানীতে ইভানার মরদেহ দাফন করা হয়।
শুরুতে সবকিছু ঢাকা পড়লেও সারাবাংলার অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে ইভানার মৃত্যুর চাঞ্চল্যকর তথ্য। বেরিয়ে আসে ইভানার মৃত্যুর পেছনে স্বামীর অত্যাচারের কথা।
নানাভাবে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়ার অভিযোগও পাওয়া যায়। এমনকি ইভানাকে প্রতিদিন ওভারডোজ ঘুমের ওষুধ দেওয়া হতো বলেও অভিযোগ করেন স্বজনরা। ইভানা তার বন্ধু, শিক্ষক ও সহকর্মীদের হতাশার কথা জানিয়ে পরামর্শও চেয়েছিলেন বলে জানা যায়।
আরও পড়ুন
- ইভানার মৃত্যুর দায় কার
- অবশেষে মামলার সিদ্ধান্ত ইভানার পরিবারের
- ইভানার জন্য বন্ধু-সহকর্মীরা কালো ব্যাজ পরে থানায়
- স্কলাসটিকা কর্মকর্তা ইভানার মৃত্যুর নেপথ্যে চাঞ্চল্যকর তথ্য
- মামলা নেয়নি শাহবাগ থানা, আদালতে যাবে ইভানার পরিবার
- ইভানার মৃত্যুরহস্য: মামলা নিয়ে পরিবারের রহস্যময় আচরণ
- ইভানাকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে ‘প্রেমিকা’র সঙ্গে কথা বলতেন রুম্মান
- ইভানার মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে থানায় আবেদন
- ইভানার মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে থানায় আইনজীবীরা
সারাবাংলা/ইউজে/একে
ইভানা লায়লা চৌধুরী ইভানার আত্মহত্যা টপ নিউজ ব্যারিস্টার রুম্মান