Tuesday 03 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জুনে নির্বাচন সম্ভব না, ডিসেম্বরে হলে সবারই সুবিধা: খন্দকার মোশাররফ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১ জুন ২০২৫ ১৮:৩৫ | আপডেট: ১ জুন ২০২৫ ১৯:৩৭

প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত আলোচনা সভা।

ঢাকা: চলতি বছর ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে সবারই সুবিধা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।

সোমবার (১ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা আয়োজন করে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ।

ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘শুধুমাত্র বিএনপি নয়, দেশের ৫২টি রাজনৈতিক দল চলতি বছরের ডিসেম্বরেই সংসদ নির্বাচন চায়। আমরা বলেছি, নির্বাচন ডিসেম্বরে হলে নির্বাচন কমিশনে সুবিধা, সরকারেও সুবিধা, জনগণেরও সুবিধা। সেটা আমরা যুক্তি দেখিয়েছি। যদি অন্য কোনো যুক্তি থাকে সরকার পরিস্কার করুক, করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুক। সেটা ছিল তাদের (অন্তবর্তী সরকার) দায়িত্ব।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যত বিলম্ব হবে পতিত স্বৈরাচার তত ষড়যন্ত্র করবে। ডিসেম্বরে নির্বাচন প্রয়োজন। আপনরা (অন্তর্বর্তী সরকার) যে বলছেন জুনে নির্বাচন দেবেন এর আগে কী হয়? ডিসেম্বরের পর জানুয়ারি মাস, এরপর ফেব্রুয়ারি মাসে রোজা এই রোজাকে তো আমরা পিছিয়ে দিতে পারব না। এই রোজা ও ঈদ নিয়ে দুই মাস চলে ‍যায়। ফেব্রুয়ারি-মার্চ।’

ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘তারপরে আসবে এপ্রিল-মে, এসএসসি ও এইচএসসি পাবলিক পরীক্ষা। এগুলো পেছানোর সুযোগ নেই। এসব পাবলিক পরীক্ষায় যেসব স্কুল-কলেজে সেন্টার হয় সেগুলোতে কিন্তু ভোটের সেন্টার হয়। সরকার এপ্রিল-মে মাসে নির্বাচন করতেই পারবেন না। আর জুন মাসে পুরোপুরি বর্ষাকালচলে আসে। সুতরাং জুন মাস নির্বাচন সম্ভব না। তাই আমরা মনে করি ডিসেম্বরে নির্বাচন সম্ভব এবং আমরা দাবি করেছি যে, আপনি ডিসেম্বরের মধ্যে যেদিন সুইটেবল মনে করেন, সে দিনটি আপনারা ঘোষণা করেন।’

‘তা না বলে বিদেশে গিয়ে বলেছেন, শুধুমাত্র বিএনপি নির্বাচন চায়, এটা সঠিক না। আপনারা আজকে পত্র-পত্রিকায় দেখেছেন, সেখানে লেখা হয়েছে ৫২টি দল একত্রিত হয়ে নির্বাচন ডিসেম্বরে চায় এবং সেদলগুলোর নাম, নেতাদের নাম, তাদের বক্তব্য পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে’- বলেন ড. মোশাররফ।

তিনি বলেন, ‘এখন যদি প্রশ্ন ওঠে যে, আপনার (অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস) ওপরে যেখানে আমাদের এত বড় বিশ্বাস আপনি কেন বাংলাদেশের জনগণকে বা বিদেশের নাগরিককে ভুলপথে পরিচালিত করবেন। কেনই বা আমাদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করবেন।’

ড. মোশাররফ বলেন, ‘আমরা এখনো আশা করি যে, তিনি এ কথা উপলব্ধি করবেন। উপদেষ্টারা যারা অতিরিক্ত কথা বলেন, তাদের কর্মকাণ্ড বিতর্কিত। আমরা সেটাও দাবি করেছি যে, বিতর্কিত উপদেষ্টাদেরকে বাদ দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে যদি একটি ছোট উপদেষ্টা পরিষদ গঠন করে, তাদেরকে পক্ষেই সেই জাতীয় নির্বাচনটা অনুষ্ঠান করা সুন্দর হবে।’

সোমবার (২ মে) অনুষ্ঠেয় জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা আগামীকাল দ্বিতীয় দফা বৈঠক ডেকেছেন। আমরা ‍যাব। গেলেও আমরা কী বলব? আমরা তো আগেই সংস্কার কর্মসূচি দিয়ে রেখেছি, অনেক এই সংস্কার কর্মসূচি তাদের প্রস্তাবের সাথে মেলে।’

ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমরা মনে করি, মিনিমাম সকল দল একমত হবে সেটাকে ঐক্যমত্য ঘোষণা করে নির্বাচনের দিকে যাওয়া উচিত। বাংলাদেশে যে সংকট-আলোচনা এটা কিন্তু নির্বাচনকে নিয়ে। আমাদের প্রধান উপদেষ্টা এনজিও করে বাংলাদেশে, বিদেশে সুনাম করেছেন এবং তিনি একটি নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। বাংলাদেশে কিন্তু আর কেউ নাই। আমরা অনেক বিশ্বাস নিয়ে উনাকে এই পদে (প্রধান উপদেষ্টা) পদে বসিয়েছি। কিন্তু, তিনি (প্রধান উপদেষ্টা) জাপানে গিয়ে যে বক্তব্য রেখেছেন, এতে আমরা হতাশ।’

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরীর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন অধ্যাপক আবদুল লতিফ মাসুম, অধ্যাপক শামসুল আলম সেলিম, আ ন হ আখতার হোসেন. একেএম শামসুল ইসলাম শামস, এমবিএ অ্যাসোসিয়েশনের সৈয়দ আলমগীর, শিক্ষক-কর্মচারি ঐক্যজোটের সেলিম ভুঁইয়া, জাকির হোসেন, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জল, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের শামীমুর রহমান শামীম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একেএম মহসিন, রাশেদুল হকসহ অন্যান্যরা।

সারাবাংলা/এজেড/এনজে

ড. খন্দকার মোশাররফ ডিসেম্বর নির্বাচন বিএনপি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর