Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

যেভাবে রাজস্ব বাড়াবেন অর্থমন্ত্রী


১৩ জুন ২০১৯ ২০:৫৫

ঢাকা: প্রস্তাবিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের ব্যয়ের যোগান দিতে রাজস্ব আদায় ১৩ দশমিক এক শতাংশ বাড়ানোর পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেট বক্তৃতায় বর্তমানে আয়কর থেকে রাজস্ব আদায় ৩৫ শতাংশ হলেও ২০২১-২২ অর্থবছরে ৫০ শতাংশে উন্নতি করার কথা জানান অর্থমন্ত্রী। বলেন, রাজস্বের প্রত্যেকটি খাতেই কর জাল বাড়াতে জরিপ, প্রশাসনিক সংষ্কার, বিভিন্ন সেবায় টিন বাধ্যতামূলক করা, টিনধারীদের রিটার্ণ দাখিলে উদ্বুদ্ধকরণ করা হবে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে আয়কর দাতার সংখ্যা এক কোটিতে উন্নীত করা হবে।

বিজ্ঞাপন

কর আদায়ে কারো উপর চাপ নয় বরং স্বেচ্ছায় কর দাতা তৈরির উপর জোর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে বাজেটে। করের আওতা বাড়াতে সিটি করপোরেশনের বাইরে করদাতাদের জন্য ন্যূনতম কর যথাক্রমে ৫ হাজার, ৪ হাজার এবং ৩ হাজার টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে।

করের আওতা বাড়াতে ৫০ কোটি বা তার অধিক নিট সম্পদ রয়েছে এমন করদাতাদের নিট সম্পদের উপর শূন্য দশমিক ১ শতাংশ হারে অথবা প্রদেয় করের ৩০ শতাংশ এর মধ্যে যেটি বেশি সে পরিমাণ সারচার্জ আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকার উপরে নিট সম্পদ থাকলে সারর্চাজ দিতে হয়। সারচার্জের এই নিম্নসীমা বাড়িয়ে ৩ কোটি টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। নিট সম্পদের পরিমাণ ৩ কোটি টাকার বেশি হলে ন্যূনতম সারচার্জ ৩ হাজার এবং ১০ কোটি টাকার বেশি হলে ৫ হাজার টাকার করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

বক্তৃতায় বলা হয়, অর্থনৈতিক অঞ্চলে বা শিল্পে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ করলে এবং বিনিয়োগের উপর ১০ শতাংশ হারে কর প্রদান করা হলে বিনিয়োগকৃত টাকা নিয়ে কোনো প্রশ্ন উত্থাপন করা হবে না। বর্তমানে ২১টি শিল্প খাতে এবং ১৯টি ভৌত অবকাঠামো নির্মাণ খাতে বিভিন্ন মেয়াদে এবং হারে কর অবকাশ সুবিধা রয়েছে।

এছাড়া, সরকার মূসক বা ভ্যাট ব্যবস্থাকে অটোমেশন করতে নিয়ে ভ্যাট অনলাইন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। ভ্যাট আহরণে স্বচ্ছতা আনতে সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) স্থাপনের ব্যবস্থা নিয়েছে। এ লক্ষ্যে ইএফডি মেশিন কেনার কার্যক্রম চলমান আছে।

রাজস্ব আহরণের পরিকল্পনা সম্পর্কে বাজেট বক্তৃতায় বলা হয়, কর প্রশাসনে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়ে আয়কর, মূসক ও শুল্ক বিভাগকে সম্পুর্ণ অটোমেটেড এবং ডিজিটাল করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আয়কর আইন প্রণয়নের কাজ চলছে। পাশপাশি বাংলা ভাষায় প্রস্তাবিত কাস্টমস আইন, ২০১৯ সংসদে উত্থাপনের অপেক্ষায় আছে। আয়কর, মূসক এবং আমদানি ও রপ্তানি শুল্ক থেকে মুলত রাজস্ব আহরিত হয়। এছাড়া সম্পুরক শুল্ক ও রেগুলেটরি শুল্ক থেকে পরোক্ষ কর আহরিত হয়। এসব ক্ষেত্রে বিভিন্ন সংস্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বক্তৃতায় উল্লেখ করা হয়, আয়কর থেকে রাজস্ব আহরনে ক্ষেত্রে করের হার অপরিবর্তিত রেখে করভিত্তি সম্প্রসারণকে আমরা মুলনীতি হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এই কারণে করের জাল না বাড়িয়ে করের আওতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আয়কর বিভাগের সম্প্রসারণের জন্য এরইমধ্যে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই সম্প্রসারণের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি উপজেলায় আয়কর অফিস স্থাপন করা হবে। মাঠ পর্যায়ে কর অঞ্চলের সংখ্যা বিদ্যমান ৩১টি থেকে বাড়িয়ে ৬৩টিতে উন্নীত করা হবে।

কর বিভাগকে করদাতা বান্ধব করতে কর ইন্টেলিজেন্স, ইনভেস্টিগেশন এন্ড এনফোর্সমেন্ট ইউনিট, ডিজিটাল কর ব্যবস্থাপনা ইউনিট, উৎসে কর ব্যবস্থাপনা ইউনিট, কর তথ্য ইউনিট, আর্ন্তজাতিক কর ইউনিট, সেবা ও জনসংযোগ অবকাঠামো ইউনিট এবং আয়কর বিরোধ ব্যবস্থাপনা সেল প্রতিষ্ঠা করা হবে। আগামি বছরগুলোতে ২৫ শতাংশ হারে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হবে এবং ২০২১ সালের মধ্যে কর-জিডিপি অনুপাত ১৫ শতাংশে উন্নীত হবে বলে অর্থমন্ত্রী আশা করেন।

আরও পড়ুন-

পুঁজিবাজারের জন্য বিশেষ প্রণোদনা

৮ দশমিক ২০ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য

মূল্যস্ফীতিতে লাগাম টানতে চায় সরকার

বার্ষিক টার্নওভার ৫০ লাখ হলে ভ্যাট লাগবে না

করপোরেট করের হার অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে

এবারও বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা আড়াই লাখ টাকা

ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি

আইসিটি খাতে বরাদ্দ প্রস্তাব ১ হাজার ৯৩০ কোটি টাকা

প্রকল্পের চতুর্থ কিস্তি পর্যন্ত অর্থ পরিচালকের হাতে থাকবে

পোশাকখাতে বাড়তি প্রণোদনা ২ হাজার ৮২৫ কোটি টাকা

পরিবহনে গুরুত্ব দিয়ে ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকার এডিপি

‘প্রস্তাবিত বাজেটে শেয়ার বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশা পূরণ করবে’

সারাবাংলা/এইচএ/জেএএম

২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট অর্থমন্ত্রী রাজস্ব

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর