আইভীর হ্যাটট্রিক
১৬ জানুয়ারি ২০২২ ১৯:৪৪
নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে বেসরকারিভাবে ঘোষিত ফলে টানা তৃতীয়বারের মতো জয় পেয়েছেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। মেয়র পদে আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী নৌকা প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৭ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার হাতি প্রতীকে পেয়েছেন ৯২ হাজার ৫৬২ ভোট।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে এ ফল ঘোষণা করা হয়। ঘোষিত ফল বলছে, স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি থেকে পদ হারানো তৈমুর আলম খন্দকার ৬৬ হাজার ৫৩৫ ভোটে হেরেছেন আইভীর কাছে।
এর আগে, স্থানীয়ভাবে সংগৃহীত ফলে আইভীর পক্ষে ১ লাখ ৬১ হাজার ২৭৩ ভোট ও তৈমুরের পক্ষে ৯২ হাজার ১৭১ ভোটের তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। সে হিসাবে ৬৯ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী বলা হচ্ছিল আইভীকে। চূড়ান্ত ফলে সেই ব্যবধান কিছুটা কমলেও তাতে ফলের কোনো হেরফের হয়নি।
রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য বলছে, বাকি মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে খেলাফত মজলিসের এ বি এম সিরাজুল মামুন পেয়েছেন ১০ হাজার ৭২৪ ভোট, ইসলামী আন্দোলনের মাছুম বিল্লাহ পেয়েছেন ২৩ হাজার ৯৮৭ ভোট, স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম পেয়েছেন ১ হাজার ৩০৫ ভোট, খেলাফত আন্দোলনের জসীম উদ্দিন পেয়েছেন ১ হাজার ৩০৯ ভোট এবং কল্যাণ পার্টির রাশেদ ফেরদৌস পেয়েছেন ১ হাজার ৯২৭ ভোট।
এর আগে, রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট নেওয়া হয় নাসিক নির্বাচনে। ১৯২টি কেন্দ্রের সবগুলোতে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহার করে ভোট নেওয়া হয়। দিনভর কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা বা সংঘর্ষের খবর পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন-
- লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জিতব: তৈমুর
- আইভীও বললেন— লক্ষাধিক ভোটে জিতব
- উচ্ছ্বসিত তরুণ ভোটররা, মেতেছেন আনন্দেও
- ইভিএমে ভোট দিতে পেরে খুশি তৃতীয় লিঙ্গের পায়েল
- ভোটে উৎসবের আমেজ, ইভিএম নিয়ে ভোটারদের সন্তুষ্টি
- বিদায়লগ্নে একটি ভালো নির্বাচন দেখতে চাই: মাহবুব তালুকদার
- নৌকা হেরে গেলেও দায় আমার কাছে আসবে না: শামীম ওসমান
- নাসিক ভোটে ‘ভালো’ উপস্থিতির কথা জানালেন রিটার্নিং কর্মকর্তা
- অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া শেষ হলো নাসিকের ভোট, অপেক্ষা ফলাফলের
নাসিক নির্বাচনকে ঘিরে সকাল থেকেই নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। সকাল ৮টার আগে থেকেই ভোটকেন্দ্রগুলোতে ছিল ভোটারদের ভিড়। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের উপস্থিতিও বাড়তে থাকে।
এদিন সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে ভোট দিয়ে বের হন হাতি প্রতীকে স্বতন্ত্র প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার। এসময় কেন্দ্রের বাইরে অপেক্ষমাণ সাংবাদিকদের তিনি বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে লক্ষাধিক ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করব। আমি নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে আশাবাদী।
সকাল ১১টার দিকে নগরীর বেপারি পাড়ায় বাবা আলী আহম্মদ চুনকা প্রতিষ্ঠিত শিশুবাগ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়ে বের হন নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী। ভোটদান শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি জানি, নারায়ণগঞ্জের মানুষ আমাকে বেছে নিয়েছে। তারা অলরেডি নির্ধারণ করে নিয়েছে কাকে ভোট দেবে। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে ইনশাআল্লাহ আইভীর জয় হবেই হবে, নৌকার জয় হবেই হবে। গণজোয়ারের জয় হবেই হবে।
পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা মাহফুজা আক্তার এবং জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করেন। দু’জনেই বলেন, ভোটগ্রহণ সুষ্ঠুভাবে চলছে। ভোটারদের উপস্থিতি ‘ভালো’।
দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এই সিটি করপোরেশনে এবার মেয়র পদে লড়েছেন সাত প্রার্থী। আইভী ও তৈমুর বাদে বাকিরা হলেন— খেলাফত মজলিসের এ বি এম সিরাজুল মামুন (দেয়াল ঘড়ি), ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাওলানা মোহাম্মদ মাছুম বিল্লাহ (হাত পাখা), বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন (বটগাছ), বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির মোহাম্মদ রাশেদ ফেরদৌস (হাত ঘড়ি) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল ইসলাম বাবু (ঘোড়া)। স্থানীয়রা শুরু থেকেই বলছিলেন, প্রার্থী সাত জন হলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল আইভী আর তৈমুরের মধ্যেই। ভোটের ফলেও তারই প্রমাণ মিলেছে।
সারাবাংলা/টিআর