Thursday 21 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘উপাচার্য পদত্যাগের আগ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে’

সিলেট ও শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট
২৬ জানুয়ারি ২০২২ ২৩:৫৯

অনশন ভাঙার পর সব ধরনের অবরোধও তুলে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা। তবে উপাচার্য পদত্যাগ করার আগ পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন। একইসঙ্গে এ-ও জানিয়েছেন, ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের দখলে থাকবে।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) রাত ১১টায় সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী রোমিও নিকোলাস রোজারিও। তিনি জানান, আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক, একাডেমিক ভবন, প্রশাসনিক ভবন খুলে দেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) আমরণ অনশন শুরু করেন শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। এক সপ্তাহেও দাবি পূরণ না হওয়ায় তারা অনশন চালিয়েই যাচ্ছিলেন। শেষ পর্যন্ত আজ বুধবার (২৬ জানুয়ারি) ভোরে শাবিপ্রবির সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ড. ইয়াসমিন হক হাজির হন ক্যাম্পাসে। শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার বিষয়ে ‘উচ্চ পর্যায়ে’র আশ্বাস পেয়েছেন জানিয়ে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান তারা।

আরও পড়ুন- ১৬৩ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙলেন শাবিপ্রবির শিক্ষার্থীরা

অনশন ভাঙলেও উপাচার্য পদত্যাগ করার আগ পর্যন্ত আন্দোলন চলবে জানিয়ে রোমিও নিকোলাস রোজারিও সংবাদ সম্মেলনে বলেন, উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমরা অনশন চালিয়ে গিয়েছি। ড. জাফর ইকবাল স্যার ও ইয়াসমিন হক ম্যামের অনুরোধে শিক্ষার্থীরা অনশন থেকে সরে এসেছে। তবে উপাচার্যের পদত্যাগের আগ পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

শিক্ষার্থীরা ড. জাফর ইকবালের মাধ্যমে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেছে বলে জানান আন্দোলনরত এই শিক্ষার্থী। এই দাবিগুলো হলো— শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে অর্থ সহায়তার ‘অভিযোগে’ গ্রেফতার পাঁচ জন সাবেক শিক্ষার্থীর জামিন মঞ্জুর, অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীদের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার, অনশনকারী শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা খরচ বহন, উপাচার্যের মদতে সংঘটিত নারকীয় পুলিশি হামলায় গুরুতর আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার দায়িত্ব নেওয়া।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- শাবিপ্রবির সাবেক ৫ শিক্ষার্থীর জামিন

সংবাদ সম্মেলনে রোমিও নিকোলাস রোজারিও আরও বলেন, আমাদের মূল দাবি উপাচার্য স্যারের পদত্যাগ এবং একইসঙ্গে ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টরিয়াল বডির অপসারণের দায়িত্ব শ্রদ্ধেয় জাফর ইকবাল স্যার ও ইয়াসমিন ম্যাম শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে নিয়েছেন। একইসঙ্গে ক্যাম্পাসের সব আবাসিক হল পুরোদমে খুলে দিতে হবে। এসব হল বর্তমানে শিক্ষার্থীরা নিজেদের উদ্যোগে সচল রেখেছে।

ড. জাফর ইকবাল ও ড. ইয়াসমিন হকের অনুরোধে শিগগিরই শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক ও উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেবেন বলে জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে। তবে ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের দখলে থাকবে এবং উপাচার্যের পদত্যাগের আগ পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে বলেও জানানো হয়।

এদিকে, সংবাদ সম্মেলনের পর আন্দোলনে সাংস্কৃতিক অংশ হিসেবে রিম, শিকড়, নোঙর প্রভৃতি সংগঠন সংগীত পরিবেশন করে।

আরও পড়ুন- শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বসে সমস্যার সমাধান করা হবে: শিক্ষামন্ত্রী

এর আগে, গত ১৩ জানুয়ারি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। এদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের ছাত্রীরা।

পরে ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ ছাত্রীদের আন্দোলনে হামলা চালায়। পরদিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করলে তাদের উপর লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোঁড়ে পুলিশ। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। তা উপেক্ষা করেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলমান রাখেন শিক্ষার্থীরা। ১৯ জানুয়ারি বিকেল ৩টার দিকে শুরু হয় শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন। সাত দিন পেরিয়ে যাওয়ার পর আজ এই অনশন ভেঙেছেন শিক্ষার্থীরা।

আরও পড়ুন-

সারাবাংলা/টিআর

আমরণ অনশন ড. জাফর ইকবাল শাবিপ্রবি শাবিপ্রবি আন্দোলন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর