‘বিদ্যুৎ সংকট কেন, সেই রিজার্ভ এখন কোথায়?’
১৮ জুলাই ২০২২ ২০:৫৯
ঢাকা: সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, সরকার এত ঢোল পেটালো। সিঙ্গাপুর-ব্যাংকককে ছাড়িয়ে গেছি আমরা। তাহলে এখন বিদ্যুৎ সংকট কেন? সেই রিজার্ভ এখন কোথায়? হঠাৎ করে নাই হয়ে গেল কেন? আজকে দেশ অর্থনৈতিক ক্রাইসিসে দাঁড়িয়ে গেছে। এটার জন্য আমি পুরোপুরি সরকারকে দায়ী করি।
সোমবার (১৮ জুলাই) বিকেলে গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
এলাকাভিত্তিক লোডশেডিং প্রসঙ্গে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত কেন এলো? আমরা যখন শতভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হয়েছি, তারপরও কেন এই সিদ্ধান্তে আসতে হচ্ছে? আগে লোডশেডিংয়ে মানুষকে পে করতে হয়নি এখন মিউজিয়ামে যাওয়া লোডশেডিংকে ফেরত এনে পে করতে হচ্ছে। লোডশেডিং সত্ত্বেও কেন মানুষকে পেমেন্ট করতে হচ্ছে- সেটিই বড় প্রশ্ন।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের পরিকল্পনায় বলা ছিলো ৬৪ভাগ বিদ্যুৎ উৎপাদন থাকবে সরকারের হাতে, আর ৩৬ভাগ থাকবে বেসরকারি হাতে। সরকার তড়িঘড়ি করে বেজ প্লান্টগুলো বেসরকারি সেক্টরে দিয়ে দিল। সবকিছু মিলিয়ে আমি মনে করি এই পরিকল্পনা খারাপ ছিল, দূরভীসন্ধিমূলক ছিল এবং দুর্নীতিগ্রস্থ ছিল। ফলে আমাদের বিদ্যুতের যে আইন, সেগুলো জলাঞ্জলি দিয়ে সংসদে আইন পাশ করে যাকে ইচ্ছে তাকে পাওয়ার স্টেশন দিয়েছে। শতভাগ বিদ্যুতের দেশ বলে হাতিরঝিলে অনেক ফানুস উড়ল। কিন্তু আজ আমরা বিদ্যুৎ পাচ্ছি না।’
‘যেটি করার দরকার সেটি তারা করে নাই’ মন্তব্য করে ইকবাল হাসান বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদন সরকারের হাতে রাখার দরকার ছিল, সরকার যদি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতো তাহলে আজকের পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না। অন্ধকারে থেকে পেমেন্ট করতে হচ্ছে, যেটি অতীতে দিতে হয়নি। দুর্নীতিপুষ্ট প্রকল্পগুলো করে, আনন্দ-ফূর্তি করে সরকার সবাইকে দেখানোর চেষ্টা করছে।’
তিনি বলেন, ‘এটা সরকারের প্রচারই প্রসার মনে হয়। ফলে আজ আমরা দুর্ভোগে পড়েছি। আমাদের সরকারি কোষাগার থেকে টাকা যাবে পাওয়ার স্টেশন মালিকদের কাছে, তারা পাওয়ার স্টেশন না চালিয়ে টাকা নিয়ে যাবে। আর শতভাগ ক্ষতিগ্রস্থ হবে দেশের জনগণ। এই যে সরকার অনিয়ম করে গেল, এটা আমাদের দেশ ও জাতিকে অনেকদিন বহন করতে হবে।’
ইকবাল হাসান বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম কিন্তু আমাদের কথার কোনও পাত্তাই দেওয়া হয়নি। বিদ্যুৎ এমন একটি খাত যা সংরক্ষণ করা যায় না, উৎপাদন করলে খরচ হয়ে যাবে। না চালালে খরচ উঠবে না। সেকারণে সরকারের হাতে রাখলে যা হয়, সরকার অনেক সাশ্রয় করতে পারে, অনেক জিনিসের দাম-টাম কমিয়ে রাখতে পারে। কিন্তু এটা সম্পূর্ণ কমার্শিয়ালি চলে গেল।’
সাবেক এই বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সরকারের পরিকল্পনা ছিল ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন আমরা প্রাইভেটকে দিয়ে দেব। সরকারের কাজ বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিদ্যুতের বিল তোলা না। কিন্তু এর উল্টোটা করেছে, বিদুতের প্ল্যান্ট দিয়ে দেওয়া হয়েছে প্রাইভেট সেক্টরকে। এখন এর ফল ভোগ করতে হচ্ছে। লস অ্যাসেসম্যান্ট না করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। এখন সেই ফল ভোগ করতে হচ্ছে।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য সচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সদস্য ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ও শায়রুল কবির খান।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম