Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কক্সবাজারে দাপট দেখিয়ে হামুন এখন স্থল নিম্নচাপ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৫ অক্টোবর ২০২৩ ০২:২২

ঘূর্ণিঝড় হামুন আঘাত করলে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় গাছ উপড়ে ও ভেঙে পড়ে। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: অবশেষে শান্ত হয়েছে প্রবল ঘূর্ণিঝড় হামুন। কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানার পর ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে হতে উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে। এটি এখন গভীর স্থল নিম্নচাপ আকারে কুতবদিয়া পেরিয়ে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার দিকে অবস্থান করছে। এ অবস্থায় ঘূর্ণিঝড়টি আরও বৃষ্টি ঝরাবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

এদিকে এরই মধ্যে হামুনের তাণ্ডব দেখেছে কক্সবাজার। শহরসহ আশপাশের এলাকায় প্রচুর গাছপালা উপড়ে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। মধ্যরাত পেরিয়ে যাওয়ার পরও বিভিন্ন এলাকায় ফায়ার সার্ভিসকে ভেঙে পড়া গাছ সরিয়ে সড়ক পরিষ্কার করার কাজে নিয়োজিত থাকতে দেখা গেছে। অসমর্থিত সূত্রে দুজনের মৃত্যুর তথ্যও মিলেছে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার দিলে ঘূর্ণিঝড় হামুনের অগ্রভাগ আঘাত করে কক্সবাজার উপকূলে। এ সময় কক্সবাজার সদরসহ আশপাশের এলাকায় টানা ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হয়, সঙ্গে ছিল প্রবল ঝড়ো হাওয়া। রাত ১টা নাগাদ পুরো ঘূর্ণিঝড়টি উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করে।

ঘূর্ণিঝড় হামুন আঘাত করলে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন এলাকায় গাছ উপড়ে ও ভেঙে পড়ে। ছবি: সারাবাংলা

মঙ্গলবার দিবাগত রাত দেড়টার পর আবহাওয়া অধিদফতর ঘূর্ণিঝড় নিয়ে ১৫তম বিশেষ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এতে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় হামুন উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে বুধবার রাত ১টায় (মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টা) উপকূল অতিক্রম সম্পন্ন করেছে। এটি দুর্বল হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে চট্টগ্রামের সাতকানিয়া এলাকায় অবস্থান করছে। স্থলভাগে এটি আরও অগ্রসর হয়ে ও বৃষ্টি ঝরিয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হয়ে পড়তে পারে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞপ্তিতে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত নিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকেও ৫ নম্বর বিপদ সংকেত নামিয়ে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার ট্রলার ও নৌকাকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

আবহাওয়া অধিদফতরের আবহাওয়াবিদ ড. মোহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে সারাবাংলাকে জানিয়েছিলেন, ঘূর্ণিঝড় হামুনের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি স্থলভাগ অতিক্রম করেছে রাত ১২টার দিকেই। তখন এটি কুতুবদিয়া হয়ে সাতকানিয়ের দিকে ছিল। দুয়েক ঘণ্টার মধ্যে বাকি অংশ অতিক্রম করবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের প্রধান, সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. ইমাম উদ্দীনও সারাবাংলাকে প্রায় একই তথ্য জানিয়েছিলেন। বলেছিলেন, রাত ১টা থেকে দেড়টার মধ্যে হামুনের উপকূল অতিক্রম শেষ হবে। ঘূর্ণিঝড়টি পুরোপুরি স্থলভাগ পেরিয়ে গেলে তখন বিপদ সংকেত তুলে নেওয়া হবে।

শেষ পর্যন্ত রাত ১টার মধ্যেই হামুন উপকূল অতিক্রম শেষ করেছে। বিপদ সংকেতও তুলে নেওয়া হয়েছে।

রাত সাড়ে ১টার দিকে সারাবাংলার কক্সবাজার ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট জানান, রাত ১০টার পর থেকে ঝড় ও বৃষ্টি কমতে শুরু করে। রাত ১২টা নাগাদ সেই বৃষ্টিপাত গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে রূপ নিয়েছে। এরই মধ্যে বাতাসও থেমে গেছে। তবে এর আগের কয়েক ঘণ্টায় যে প্রবল ঘূর্ণিঝড় তাণ্ডব চালিয়েছে, তাতে কক্সবাজার শহরের বিভিন্ন স্থানে শতাধিক গাছপালা উপড়ে ও ভেঙে পড়ে সড়ক বন্ধ হয়ে গেছে। শহরের জেলা প্রশাসকের বাংলো ছাড়াও পাহাড়তলী, মেরিন ড্রাইভ, সমিতি পাড়াসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে পাওয়া গেছে গাছ ভেঙে পড়ার খবর।

রাত পৌনে ১টার দিকে কথা হয় কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার মোহাম্মদ জাহেদ চৌধুরী সারাবাংলাকে বলেন, শহর ও শহরের বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর গাছ পড়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সড়ক গাছ পড়ে আটকে রয়েছে। আমরা প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের সময় থেকেই বিভিন্ন এলাকায় গাছ সরাতে কাজ করে যাচ্ছি। এখনো আমাদের সবগুলো টিম কোনো না কোনো এলাকায় কাজ করছে।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনসহ উপজেলাগুলোর সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, হামুনের আঘাতে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার হিসাব বুধবার সকালে পাওয়া যাবে।

আরও পড়ুন:

সারাবাংলা/টিআর

‘ঘূর্ণিঝড় হামুন’ ঘূর্ণিঝড় হামুন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর