বিকল্প-তরিকতের জুটল না কিছুই, এবারও শূন্য হাতে সাম্যবাদী
১৮ ডিসেম্বর ২০২৩ ০০:৪১
ঢাকা: মহাজোটে থেকেও আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো আসন পায়নি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারির দল বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন ও সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী নেতৃত্বাধীন দল বিকল্পধারা বাংলাদেশ। অথচ একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তরিকত ফেডারেশন একটি এবং বিকল্পধারা বাংলাদেশ তিনটি আসনে অংশ নিয়েছিল। কিন্তু আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এই দু’টি দলকে জোট থেকে একটি আসনও দেওয়া হয়নি। এমনকি গতবারের মতো এবারও কোনো আসন পায়নি ১৪ দলীয় জোটের অন্যতম শরিক দিলীপ বড়ুয়ার বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল।
এদিকে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটর শরিক দল জাতীয় পার্টিকে গতবারের মতো এবারও ২৬ আসনে ছাড় দেওয়া হয়েছে। একটি আসনে ছাড় পেয়েছে আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জেপি)। হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলকে (জাসদ) গতবারের মতো এবারও তিনটি আসনে জোটভিত্তিক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। রাশেদ খান মেননের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ১৪ দলীয় জোটের শরিক দল হিসেবে ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে পাঁচটি আসনে ছাড় পেলেও এবার পেয়েছে মাত্র দুটি।
১৪ দল কিংবা আওয়ামী লীগের সঙ্গে অন্য কোনো জোটে না থাকলেও নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে কিছু আসনে সমঝোতার আশায় ছিল বিএনপি থেকে বেরিয়ে যাওয়া নেতাদের দুই দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও তৃণমূল বিএনপি। চট্টগ্রামের সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমেদ আল মাইজভাণ্ডারির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টিও (বিএসপি) আশা করেছিল, নির্বাচনে যাওয়ার শর্ত পূরণ করলে আসন সমঝোতা হতে পারে সরকারের সঙ্গে।
আরও পড়ুন- নৌকা না পেয়ে হতাশ ২ ভাণ্ডারি
বাস্তবে এই তিন দলের কোনোটির জন্যই আওয়ামী লীগ কোনো ছাড় দেয়নি। ফলে এই তিনটি দলকে নিজ নিজ প্রতীকে নির্বাচন করতে হবে। সেক্ষেত্রে এই দলের প্রার্থীদের কোনো আসনে বিজয়ী হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
এদিকে মহাজোট ও ১৪ দলীয় জোটের প্রধান শরিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সারাদেশে ৩০০ আসনের মধ্যে এককভাবে ২৬৩টি আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে দলগতভাবে নির্বাচন করবে। বাকি ৩৭টি আসনের মধ্যে ২৬টিতে জাতীয় পার্টি লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে লড়বে। এই ২৬ আসনে নৌকা প্রতীকের কোনো প্রার্থী থাকবে না। এছাড়াও ছয়টি আসনে ১৪ দলীয় জোটের শরিক তিন দল জাসদ, জাতীয় পার্টি (জেপি) এবং বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি নৌকা নিয়ে নির্বাচন করবে। এই ছয় আসনেও আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী থাকবে না। এছাড়া সারাদেশে পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল হওয়ায় সেগুলোতেও নৌকার কোনো প্রার্থী থাকছে না।
আরও পড়ুন- সমঝোতায় বাদ পড়লেন জাপার ‘হেভিওয়েট’ ৬ নেতা
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোট ও জাতীয় পার্টিকে মোট ৩২টি আসনে ছাড় দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে জাতীয় পার্টি পেয়েছে ২৬টি আসন ও ১৪ দলীয় জোটের শরিকরা পেয়েছে ছয়টি আসন। ১৪ দলের ছয় আসনের মধ্যে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি দু’টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) তিনটি, জাতীয় পার্টি জেপি একটি আসন পেল।’ তিনি জানান, শরিকদের জন্য ছাড় দেওয়া আসনগুলোতে নৌকার কোনো প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না।
বিপ্লব বড়ুয়া আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ২৯৮টি আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিল। সেখান থেকে পাঁচটি আসনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়। বাকি থাকল ২৯৩টি আসন। সেখান থেকে ৩২টি আসন জোটের মিত্রদের জন্য ছাড়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন- ১৪ দল ও জাতীয় পার্টিকে ৩২ আসনে আওয়ামী লীগের ছাড়
জাতীয় পার্টি কিংবা ১৪ দলের শরিক দলগুলোর সঙ্গে সমঝোতা হওয়া আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী প্রত্যাহার করে নেওয়া হলেও আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র অনেক প্রার্থীই থেকে যাচ্ছেন। জাপা ও শরিক দলগুলো আওয়ামী লীগের কাছে এসব স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও প্রত্যাহারের আবদার জানিয়েছিলেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করতে সে আবদারে কর্ণপাত করেনি আওয়ামী লীগ।
আরও পড়ুন-
- ১৪ দলের শরিকদের আসন কমে ৬
- ৩০০ আসনে চূড়ান্ত প্রার্থী ১৮৯৬ জন
- ৩৭ আসনে নেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী
- হাইকোর্টে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন ৬ জন
- নির্বাচনি সমঝোতার ‘বলি’ সালাম-নোমান
- জাপাকে যে ২৬টি আসন ছাড়ল আওয়ামী লীগ
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম
১৪ দলীয় জোট আওয়ামী লীগ আসন ভাগাভাগি আসন সমঝোতা জাতীয়-নির্বাচন তরিকত ফেডারেশন বিকল্পধারা সংসদ নির্বাচন সাম্যবাদী দল